Prothomalo:
2025-08-01@16:49:40 GMT

সঞ্চয়পত্র কেনায় ১০ পরামর্শ

Published: 17th, June 2025 GMT

মধ্যবিত্তদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ একটি ভালো উপায় হতে পারে। তবে বুঝেশুনে পরিকল্পনা করে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা উচিত। সুদের হার বেশি হলেই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা ঠিক নয়। সার্বিকভাবে নিজের প্রয়োজন, সময়, করহার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা ভেবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে হবে। এতে আপনার বিনিয়োগ হবে নিরাপদ।

মধ্যবিত্ত ও অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ যেমন নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য, তেমনি রাষ্ট্রীয় নিশ্চয়তাও আছে। তবে সঞ্চয়পত্র কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ভালোভাবে বিবেচনা করা উচিত। এ জন্য ১০টি পরামর্শ বা টিপস দেওয়া হলো—

১.

দ্রুত টাকা তুলতে চাইলে সঞ্চয়পত্র নয়

এখানে প্রথমেই আপনাকে ভাবতে হবে, আপনি কত দিনের জন্য টাকা বিনিয়োগ করতে চান? সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ সাধারণত ৩ থেকে ৫ বছরের জন্য হয়। যদি আপনি দ্রুত টাকা তুলতে চান, তবে সঞ্চয়পত্র উপযুক্ত নয়। কারণ, নির্দিষ্ট সময়ের আগে ভাঙালে মুনাফা কমে যায়।

২. সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি হলে মুনাফা কমে

বর্তমানে বাংলাদেশে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার বিনিয়োগ ও মেয়াদভেদে ১১ থেকে সাড়ে ১২ শতাংশের মধ্যে। সাড়ে সাত লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে ধাপে ধাপে সুদের হার কমে যেতে পারে। অন্যদিকে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়। কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) না থাকলে এই হার ১৫ শতাংশ। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো উৎসে কর কাটা হয় না।

৩. সঞ্চয়পত্রের মুনাফা খেয়ে ফেলতে পারে উচ্চ মূল্যস্ফীতি

বর্তমান দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি আছে। সঞ্চয়পত্র কিনে যে মুনাফা পাওয়া যাবে, তা এই উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে খুব বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব নয়। উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সঞ্চয়পত্রের নির্দিষ্ট সুদের হার প্রকৃত অর্থে আপনার ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত হলেও দীর্ঘ মেয়াদে সব সময় লাভজনক না–ও হতে পারে। তাই সঞ্চয়পত্র কেনার আগে মূল্যস্ফীতির বিষয়টি বিবেচনায় রাখুন।

৪. কত টাকা পর্যন্ত কেনা যাবে

আপনি চাইলে কোটি কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। যেমন পরিবার সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা (নারীদের জন্য); ৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা; পেনশনার সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা (সরকারি অবসরপ্রাপ্তদের জন্য); তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা এবং যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা।

৫. কারা কিনতে পারবেন

বাংলাদেশি নাগরিক, অভিবাসী বাংলাদেশি এবং নির্দিষ্ট শর্তে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা। বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরাও নির্ধারিত নিয়মে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। মনে রাখবেন, পরিবার সঞ্চয়পত্র শুধু নারীরা কিনতে পারেন।

৬. পাঁচ ধরনের কাগজপত্র প্রস্তুত রাখুন

সঞ্চয়পত্র কিনতে হলে পাঁচ ধরনের কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। এগুলো হলো, জাতীয় পরিচয়পত্র; পাসপোর্ট সাইজ ছবি; ব্যাংক হিসাব নম্বর; টিআইএন সার্টিফিকেট (যদি থাকে); অর্থের উৎসের প্রমাণ (আয়কর বিবরণী বা বেতন স্লিপ)। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের আগে এসব কাগজপত্র জোগাড় করুন।

৭. অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া কেনা যাবে না

অনলাইন নিবন্ধন ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে না। তাই অনলাইন নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ডিএনএসএস) নিবন্ধন ছাড়া কেউ সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছেন না।

৮. অগ্রিম পরিকল্পনা ছাড়া বিনিয়োগ নয়

আপনার জরুরি প্রয়োজনে টাকা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু আপনার সব সঞ্চয় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা আছে। আপনি বিপাকে পড়বেন। কারণ, সঞ্চয়পত্র তাৎক্ষণিকভাবে ভাঙালে মুনাফা কমে যায়। তাই আপনার ভবিষ্যৎ প্রয়োজন বিবেচনা করে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করুন। তাই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পর কিছু নগদ টাকা নিজের কাছে রাখতে পারেন।

৯. প্রতারণা এড়াতে অফিসে গিয়ে কিনুন

সঞ্চয়পত্র কিনতে দালাল বা ব্যক্তিপর্যায়ে লেনদেন একদম করবেন না। এটি করলে আপনার টাকা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। তাই ডাকঘর, বাংলাদেশ ব্যাংক বা নির্ধারিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সঞ্চয়পত্র কিনুন।

১০. ব্যাংক হিসাব খুলে ঘরে বসেই মুনাফার টাকা নিন

সঞ্চয়পত্র কেনার আগে নিজের ব্যাংক হিসাব খুলে রাখুন। কারণ, সঞ্চয়পত্র কেনার সময়ই আপনাকে একটি ব্যাংক হিসাব নম্বর দিতে হয়। সেই হিসাবেই মুনাফার টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে জমা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন য় গ কর দ র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

নারীদের সেরা সঞ্চয়; পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা কত, কীভাবে কিনবেন

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র। নারীরা এই সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন। এই সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার তুলনামূলক বেশি এবং প্রতি মাসে মুনাফা তোলা যায়।

পরিবার সঞ্চয়পত্র নামে এই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে মেয়াদ শেষে অর্থাৎ পাঁচ বছর পর ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।

বর্তমানে যে চারটি সঞ্চয়পত্র আছে, এর মধ্যে পেনশনার সঞ্চয়পত্রের পরেই এই সঞ্চয়পত্রে সবচেয়ে বেশি মুনাফার হার। ২০০৯ সালে এই সঞ্চয়পত্র চালু করে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর। দেড় দশক ধরে এই সঞ্চয়পত্র দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সঞ্চয়পত্র হিসেবে পরিচিত।

মূল্যমান কত

১০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকা, ১ লাখ টাকা, ২ লাখ টাকা এবং ১০ লাখ টাকা।

কোথায় পাওয়া যায়

জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখাসমূহ, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং ডাকঘর থেকে কেনার পাশাপাশি নগদায়ন করা যায়।

মেয়াদ

পাঁচ বছর

মুনাফার হার

১ জুলাই থেকে সরকার সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়েছে। যেমন পরিবার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে পঞ্চম বছর শেষে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

মেয়াদ পূর্তির আগে নগদায়ন করলে কম হারে মুনাফা প্রাপ্য হবে এবং অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধিত হয়ে থাকলে তা মূল টাকা থেকে কর্তন করে সমন্বয়পূর্বক অবশিষ্ট মূল টাকা পরিশোধ করা হবে।

উৎসে কর

পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত সর্বমোট বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ৫ শতাংশ হারে এবং এর অধিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার ওপর ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করা হয়।

কারা কিনতে পারবেন

তিন শ্রেণির বিনিয়োগকারী পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবে। এক. ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি নারী; দুই. যেকোনো বাংলাদেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী (পুরুষ ও মহিলা); তিন. ৬৫ ও তদূর্ধ্ব বয়সের যেকোনো বাংলাদেশি (পুরুষ ও মহিলা) নাগরিক।

ক্রয়ের ঊর্ধ্বসীমা

একক নামে সর্বোচ্চ ৪৫ (পঁয়তাল্লিশ) লাখ টাকা।

অন্য সুবিধা

পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনায় কিছু সুবিধা আছে। যেমন মাসিক ভিত্তিতে মুনাফা পাওয়া যায়; নমিনি নিয়োগ বা পরিবর্তন ও বাতিল করা যায়; সঞ্চয়পত্রের ক্রেতার মৃত্যুর পর নমিনি সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করে টাকা উত্তোলন করতে পারেন অথবা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত যথারীতি মাসে মাসে মুনাফা উত্তোলন করতে পারেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারীদের সেরা সঞ্চয়; পরিবার সঞ্চয়পত্রে মুনাফা কত, কীভাবে কিনবেন