ঝিনাইদহে বটগাছ থেকে ট্রাক চালকের মরদেহ উদ্ধার
Published: 17th, June 2025 GMT
ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংলগ্ন পুকুরের পাশে মধু হোসেন (২৮) নামে এক ট্রাক চালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুকুরের পাশে বটগাছের ডালে ওই ট্রাকচালকের মরদেহ ঝুলতে দেখে স্থানীয়রা। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৭টার দিকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত মধু হোসেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি ইউনিয়নের হীরাডাঙ্গা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকালে পুকুর পাড়ের বটগাছের ডালে মধুর লাশ ঝুলতে দেখে পুলিশে খবর দেয়ে স্থানীয়রা। পরে সদর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মধুর ছোট ভাই পরশ হোসেন জানান, ট্রাক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন মধু হোসেন। গত কয়েক মাস ধরে বাবার সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল মধু হোসেনের। যে কারণে প্রায় ২-৩ মাস ধরে মধু হোসেন বাড়িতে আসা-যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
সোমবার বিকেলে পরিবারের সদস্যদের ফোন করে মধু হোসেন বলে, “আমার ভুল হয়ে গেছে, তোরা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিস।”
পরিবারের অন্য সদস্যরা জানায়, সোমবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মধু তার মামাতো ভাই রমজান হোসেনের সঙ্গে ছিলেন। পরে মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের উত্তর-পশ্চিম পাশে বড় পুকুরের পাড়ে বটগাছে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে।”
ঢাকা/সোহাগ/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঝ ন ইদহ বটগ ছ
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে গিয়েও সুদিন ফেরেনি, কলা চাষে এল সাফল্য
দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত এক একর জমি এখন সবুজে আচ্ছাদিত। সেখানে দেড় বছর আগে রোপণ করা হয় ৩২০টি কলা গাছ। সঠিক পরিচর্যা পেয়ে গাছগুলো সুস্থ ও সবল হয়ে বেড়ে উঠেছে। সারি সারি কলাগাছে ঝুলছে কলার ছড়া। মেহের সাগর জাতের এই কলা চাষে সুদিন ফিরেছে বিদেশ ফেরত আবু সিদ্দিকের।
আবু সিদ্দিক (৫৫) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। ২০১৭ সালে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে অধিকাংশ সময় বেকার থেকেছেন। তাই প্রবাসে গিয়েও সচ্ছলতার মুখ দেখেননি। ২০২৪ সালে দেশে ফিরে আসেন সিদ্দিক। স্থানীয় বাজারগুলোতে সারা বছর চাহিদা থাকায় কলা চাষের উদ্যোগ নেন, তবে তাঁর নিজের কোনো জমি নেই।
লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে আট কিলোমিটার দক্ষিণে চুনতি শাহ সাহেব গেট। সেখান থেকে চুনতি ইসহাক মিয়া সড়ক ধরে গেলে হাতের ডানে একটি মাঠের পর চুনতি সুফি নগর বাগানপাড়া এলাকায় আবু সিদ্দিকের কলাবাগানটি চোখে পড়ে।
আবু সিদ্দিক বলেন, খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে পরিত্যক্ত এক একর জমি চোখে পড়ে তাঁর। বছরে ছয় হাজার টাকায় ওই জমি ভাড়া নেন। কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে গত বছরের জুনে শুরু করেন কলা চাষ। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৪০ টাকা দরে ৩২০টি চারা সংগ্রহ করেন তিনি। এতে তাঁর খরচ হয় ১৩ হাজার টাকা। রোপণের ১০ মাস পর কলা বিক্রির উপযোগী হয়। সাত মাস আগে থেকেই তিনি কলা বিক্রি শুরু করেছেন। শ্রমিকের মজুরি, সার, কীটনাশক ও নিয়মিত সেচ বাবদ এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। প্রতিটি ছড়া গড়ে ৫০০ টাকা দরে গত ৭ মাসে আড়াই লাখ টাকার কলা বিক্রি করেছেন তিনি। এখন খরচ বাদে কলা ও গাছের চারা বিক্রি করে প্রতি মাসে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পান সিদ্দিক।
সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, ১ একর আয়তনের জমিতে ৬ ফুট দূরত্বে রোপণ করা হয়েছে ৩২০টি মেহের সাগর জাতের কলাগাছ। একটি গাছ থেকে নতুন চারা গজিয়ে আরও চার থেকে পাঁচটি গাছ হয়েছে। প্রায় প্রতিটি আট ফুট উচ্চতার প্রাপ্তবয়স্ক গাছে ঝুলছে কলার ছড়া। একেকটি ছড়ায় রয়েছে ৮০ থেকে ১৫০টি কলা। আবু সিদ্দিক সেখানে কলাগাছের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন।
কলা চাষে সফলতার মুখ দেখে উৎসাহিত হয়ে এক মাস আগে আধা কিলোমিটার দূরত্বে নতুন করে ২ বিঘা জমিতে আরও ৬০০টি কলাগাছ লাগিয়েছেন সিদ্দিক। তিনি বলেন, কলা চাষে প্রথমবার চারা কিনতে যে ব্যয় হয়েছিল, পরের বার তা ব্যয় হবে না। খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। প্রতিবছর চারা বিক্রির টাকা দিয়ে খরচ মেটানো সম্ভব হবে। এতে এক একর এই বাগান থেকে খরচ বাদে প্রতিবছর সাড়ে তিন লাখ টাকা আয় হবে তাঁর। স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে কলা নিয়ে যান। তাই বাড়তি শ্রম ও পরিবহন খরচ দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি পেলে কলা চাষের পরিধি বাড়াবেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরোয়ার আলম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর পরিশ্রমের কারণে আবু সিদ্দিক সফল হয়েছেন। তাঁকে প্রণোদনা হিসেবে সার ও অর্থসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। লোহাগাড়ার আবহাওয়া ও মাটি কলা চাষের জন্য উপযোগী। তা ছাড়া এ অঞ্চলে কলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।