আনিস-মোশাররফ-চাখারীর রিমান্ড, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার তুরিন আফরোজ
Published: 18th, June 2025 GMT
হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোশাররফ হোসেন ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে।
বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম.
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শাহবাগে জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
২০২৩ সালে পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর তিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এদিকে, ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হুসাইন হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গত ২৮ মে মনির হত্যা মামলায় আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মাইনুল ইসলাম খান পুলক।
মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন পল্টন মডেল থানার এসআই বিমান তরফদার।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আব্দুস সালাম গত ৬ জুন তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।
আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
প্রথমে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়। এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।
আনিসুল হকের পক্ষে ব্যারিস্টার সুমন হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি শুনানি করেননি। পরে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীরও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন ওমর ফারুক ফারুকী। মোশাররফ হোসেনের পক্ষে তানভীরুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। বাবুল সরদার চাখারীর পক্ষে আইনজীবী শুনানি করেননি। পরে আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এরপর আদালত তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
আনিসুল হকের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।
মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীর মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল মহাসমাবেশের ডাক দেয়। ভুক্তভোগী গণ অধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনও সমাবেশে অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে সায়মন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন তিনি। এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।
তুরিন আফরোজের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আরাফাত হুসাইন (১২) আিরিন উত্তরা পশ্চিম থানাধীন জামিয়া রওযাতুল উলুম মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। গত ৫ আগস্ট সকাল ৮ টা থেকে আরাফাত হুসাইন জুলাই আন্দোলনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৭ নং সেক্টর এলাকায় বিক্ষোভ করছিল। এসময় পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয় সে। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ ডিসেম্বর সে মারা যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মো. হাসান আলী উত্তরা পশ্চিম থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
ঢাকা/এম/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ব ল সরদ র চ খ র র ত র ন আফর জ র ল ইসল ম ন কর ন শ হব গ
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে সড়ক দুর্ঘটনায় এসআইসহ নিহত ৩
যশোরে বাঁশ বোঝাই ট্রাকে বাসের ধাক্কায় পুলিশের এসআইসহ তিনজন মারা গেছেন।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়নের ভাঙ্গুড়া বাজার সংলগ্ন ব্রিজের কাছে যশোর-নড়াইল মহাসড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন তারা।
আরো পড়ুন:
বরিশালে দুই বাসের সংঘর্ষে আহত ৬
বরিশালে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর মৃত্যু
নিহতরা হলেন- যশোর সদর উপজেলার বড় ভেকুটিয়া গ্রামের মুজিদ হাওলাদারের ছেলে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক এম জাফর আলী, বসুন্দিয়া আহমেদ আলীর ছেলে আক্তার হোসেন, বাঘারপাড়া উপজেলার ছাতিয়ানতলা এলাকার নিশিকান্ত অঢ্যের ছেলে এসআই নিক্কন অঢ্য।
তুলারামপুর হাইওয়ে পুলিশ জানায়, নড়াইল-যশোর মহাসড়কের ভাঙুড়া বাজার এলাকায় একটি বাঁশ বোঝাই ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। ঢাকা থেকে যশোরগামী ‘নড়াইল এক্সপ্রেসের’ একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান বাসযাত্রী আক্তার হোসেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী আবু জাফর ও পুলিশ কর্মকর্তা নিক্কন আঢ্যকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান এলাকাবাসী। হাসপাতালে নেওয়ার পর আবু জাফরকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
পুলিশ কর্মকর্তা নিক্কনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে নড়াইল সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। রাত সাড়ে ১২ টার দিকে চিকিৎসক নিক্কনকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, এসআই নিক্কন আঢ্য ৩৭ ব্যাচে আউটসাইড ক্যাডেট হিসাবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেন। তিনি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে লোহাগড়া থানার লাহুড়িয়া তদন্তে কেন্দ্রে যোগ দেন। এর আগে তিনি র্যাবে কর্মরত ছিলেন।
তুলারামপুর হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী জানান, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা জাফর ও আক্তারের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তার মরদেহ নড়াইল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ঢাকা/রিটন/মাসুদ