হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, মোশাররফ হোসেন ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া, নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে।

বুধবার (১৮ জুন) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম.

মিজবাহ উর রহমান এ  আদেশ দেন।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শাহবাগে জুট ব্যবসায়ী মো. মনির হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের  পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

২০২৩ সালে পল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবং বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারীর তিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। এদিকে, ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় মাদ্রাসা ছাত্র আরাফাত হুসাইন হত্যা মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাবেক প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

গত ২৮ মে মনির হত্যা মামলায় আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই মাইনুল ইসলাম খান পুলক।

মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীর ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন পল্টন মডেল থানার এসআই বিমান তরফদার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার এসআই আব্দুস সালাম গত ৬ জুন তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।

আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন বুধবার ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

প্রথমে আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করা হয়। এরপর রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

আনিসুল হকের পক্ষে ব্যারিস্টার সুমন হোসেন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি শুনানি করেননি। পরে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীরও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন ওমর ফারুক ফারুকী। মোশাররফ হোসেনের পক্ষে তানভীরুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। বাবুল সরদার চাখারীর পক্ষে আইনজীবী শুনানি করেননি। পরে আদালত তাদের তিন দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এরপর আদালত তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

আনিসুল হকের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চানখারপুল এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন ক্ষুদ্র জুট ব্যবসায়ী মো. মনির। দুপুরে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী গত ১৪ মার্চ শাহবাগ হত্যা মামলা করেন।

মোশাররফ হোসেন এবং বাবুল সরদার চাখারীর মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর শেখ হাসিনা সরকারের গুম, খুন, নিপীড়ন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ আয়োজন করা হয়। এতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদসহ অন্যান্য সমমনা রাজনৈতিক দল মহাসমাবেশের ডাক দেয়। ভুক্তভোগী গণ অধিকার পরিষদের কর্মী বদরুল ইসলাম সায়মনও সমাবেশে অংশ নেন। শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আসামিরা অতর্কিতভাবে হামলা করে। এ সময় আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে সায়মন গুলিবিদ্ধ হন। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন তিনি। এ ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ভুক্তভোগী বদরুল ইসলাম সায়মন বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন মডেল থানা হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪৫ জনকে আসামি করা হয়।

তুরিন আফরোজের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, আরাফাত হুসাইন (১২) আিরিন উত্তরা পশ্চিম থানাধীন জামিয়া রওযাতুল উলুম মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছিল। গত ৫ আগস্ট সকাল ৮ টা থেকে আরাফাত হুসাইন জুলাই আন্দোলনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ৭ নং সেক্টর এলাকায় বিক্ষোভ করছিল। এসময় পুলিশ ও আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয় সে। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ ডিসেম্বর সে মারা যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মো. হাসান আলী উত্তরা পশ্চিম থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/এম/ইভা

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ব ল সরদ র চ খ র র ত র ন আফর জ র ল ইসল ম ন কর ন শ হব গ

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৮ জুন) পুলিশ লাইনস্ ড্রিল শেডে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় জেলার বিভিন্ন ইউনিটের ইউনিট ইনচার্জগণ ও ফোর্স সামষ্টিক সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। পুলিশ সুপার মহোদয় সেসব সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারদের নির্দেশ প্রদান করেন।

পরে দুপুরে মে মাসের বিভিন্ন মামলার অগ্রগতি বিষয়ে “অপরাধ পর্যালোচনা সভা” অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ সুপার মহোদয় ওয়ারেন্ট তামিল, অবৈধ মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধার করতে নির্দেশ প্রদান করেন। 
এসময় পুলিশ সুপার মহোদয় জেলার শ্রেষ্ঠ অফিসার হিসেবে সোনারগাঁও থানায় কর্মরত এসআই (নিঃ)/ মোঃ ইসলাম, শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে বন্দর থানায় কর্মরত এসআই (নিঃ)/মোঃ হুমায়ুন কবির, শ্রেষ্ঠ ওয়ারেন্ট তামিলকারী অফিসার হিসেবে সোনারগাঁও থানায় কর্মরত এএসআই (নিঃ)/ আব্দুর রশিদ, শ্রেষ্ঠ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারকারী অফিসার হিসেবে সোনাগাঁও থানার এসআই (নিঃ)/ নাইমুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারকারী অফিসার হিসেবে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এএসআই (নিঃ)/ এসএম ইলিয়াস এবং শ্রেষ্ঠ মাদক উদ্ধারকারী অফিসার হিসেবে জেলা গোয়েন্দা শাখার কর্মরত এসআই (নিঃ)/অংকুর কুমার ভট্টাচার্য-গনকে পুরস্কৃত করেন।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার মহোদয়। এছাড়া জেলা পুলিশের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এবং জেলার সকল পদমর্যাদার পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা
  • যশোরে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পুলিশের এসআই সাময়িক বরখাস্ত
  • যশোরে পুলিশের এসআই সাময়িক বরখাস্ত
  • অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে, বাবা থানায় আটকা ২৬ ঘণ্টা 
  • প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় স্কুলছাত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার