জাবিতে বঙ্গবন্ধু হলের নাম পুনর্বহালের দাবি সাংস্কৃতিক জোটের
Published: 18th, June 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষের চারটি হলের নতুন নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের একাংশ।
মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এই প্রস্তাবনা দেয় সংগঠনটি। বুধবার (১৮ জুন) উপাচার্য তাদের স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ পূর্বনাম বাতিলকৃত চারটি হলের নতুন নামকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় তিনটি হলের নতুন নামের প্রস্তাব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট (একাংশ) উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়।
আরো পড়ুন:
রাঙামাটিতে ভেঙে ফেলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য
জেলা বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়নের সভাপতি গ্রেপ্তার
স্মারকলিপিতে যে তিনটি হলের নতুন নামকরণের দাবি জানিয়েছে, সেগুলো হলো- শেখ রাসেল হলের পরিবর্তে লালন শাহ হল অথবা কাঙাল হরিনাথ মজুমদার হল, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে কাঁকন বিবি হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পরিবর্তে চন্দ্রাবতী হল।
স্মারকলিপিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি জনিয়ে বলা হয়েছে, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলন একই মুক্তির বোধ থেকে উৎসারিত। ৭১ ও ২৪ প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং একই মুক্তির বোধের পরিচায়ক। তাই বঙ্গন্ধুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। তাকে অস্বীকার করে ৭১ ও ২৪ কে প্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থানে দাঁড় করানো অপচেষ্টা। যা প্রকৃতপক্ষে স্বৈরাচারী ‘রেজিমেরই’ মনেবৃত্তি। এই অপচেষ্টা পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে যাবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আমরা সর্বকালের (৭১ থেকে ২৪) মুক্তির বোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীলরা তা হতে দিতে পারি না। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ২০২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান এর মুক্তিকামী বোধের প্রতি সম্মান জানিয়েই আমাদের এই প্রস্তাবনা। তাই জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের প্রস্তাবনা ব্যক্ত করছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
এ বছর ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ পরিবারের চারটি আবাসিক হলের নামফলক মুছে দেন শিক্ষার্থীরা। চারটি হল- শেখ রাসেল হল, শেখ হাসিনা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।
১৭ মার্চ শেখ রাসেল হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বাতিল করে সিন্ডিকেট।
পরবর্তীতে গত ২৭ মে হলগুলোর নতুন নামের প্রস্তাবনা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম জ ব র রহম ন হল জ হ ঙ গ রনগর ল র নত ন ন ম স ম রকল প প রস ত ব র পর ব
এছাড়াও পড়ুন:
শিবিরের এই সাফল্য জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতকে সুবিধা দেবে কি?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের ভূমিধস জয় কাউকে কাউকে আনন্দিত করেছে, কাউকে শঙ্কিত বা চিন্তিত করেছে। তবে প্রায় সবাইকে অবাক করেছে। অবাক হওয়ারই কথা। কারণ, কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে ছাত্র সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচয় দিতে পারত না, তাদের এ ধরনের জয় বিস্মিত করার মতো ব্যাপার বৈকি।
এই ফল দেখে কিছু মানুষ এ কারণে খুশি যে কয়েক দশক পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দলের একচেটিয়া আধিপত্য শেষ হয়ে গেল। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, ছাত্রশিবিরের এ জয়ে অনেকে কেন শঙ্কিত বা চিন্তিত?
সম্ভবত এর প্রধান কারণ ছাত্রশিবির জামায়াতে ইসলামীর একটি অঙ্গসংগঠন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে জামায়াত একটি প্রশ্নবিদ্ধ রাজনৈতিক দল। ১৯৭১ সালে তাঁরা শুধু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেই ছিল না, দলটি ছিল পাকিস্তানের সামরিক সরকারের সমর্থনপুষ্ট। দলটি কেবল মৌখিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষ নেয়নি, ইতিহাস বলে, তারা রাজাকার, আলবদর, আলশামস ইত্যাদি স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গড়ে পাকিস্তানি বাহিনীকে গণহত্যায় সহায়তা করেছিল।
আরও পড়ুনশিবিরের বিজয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কি নতুন ধারার সূচনা হলো১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ কারণে তাদের বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিবর্জিত করা একটি স্বাধীন দেশের পক্ষে খুব স্বাভাবিক ছিল। তাই এ দেশে জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতার পর অন্তত প্রথম কয়েক বছর রাজনীতি করতে পারেনি। তবে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর পটপরিবর্তন হতে শুরু করে। কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানের পর জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবির্ভাব সেই পরিবর্তনকে আরও বেগবান করে।
মূলত জিয়াউর রহমান নতুন দল সৃষ্টির জন্য একটি বিরাট জাল ফেলেছিলেন এবং সেই দলে সব মতের লোকদের অন্তর্ভুক্তি এই পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করেছিল। তিনি নিজে মুক্তিযোদ্ধা হলেও তাঁর নতুন দলে এমন ব্যক্তিদের এনেছিলেন, যাঁরা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন মুসলিম লীগের শাহ আজিজুর রহমান, যিনি ১৯৭১ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘে পাকিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পাকিস্তান সরকারের সাফাই গাওয়ার জন্য। এই আজিজুর রহমানকে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানান।
জাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজয়ীদের উচ্ছ্বাস। এখানেও শিবিরের বড় সাফল্য অর্জিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, ১৩ সেপ্টেম্বর