জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কর্তৃপক্ষের চারটি হলের নতুন নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের একাংশ।

মঙ্গলবার (১৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এই প্রস্তাবনা দেয় সংগঠনটি। বুধবার (১৮ জুন) উপাচার্য তাদের স্মারকলিপি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

জানা গেছে, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলসহ পূর্বনাম বাতিলকৃত চারটি হলের নতুন নামকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় তিনটি হলের নতুন নামের প্রস্তাব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট (একাংশ) উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়।

আরো পড়ুন:

রাঙামাটিতে ভেঙে ফেলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য

জেলা বঙ্গবন্ধু আদর্শ বাস্তবায়নের সভাপতি গ্রেপ্তার

স্মারকলিপিতে যে তিনটি হলের নতুন নামকরণের দাবি জানিয়েছে, সেগুলো হলো- শেখ রাসেল হলের পরিবর্তে লালন শাহ হল অথবা কাঙাল হরিনাথ মজুমদার হল, শেখ হাসিনা হলের পরিবর্তে কাঁকন বিবি হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের পরিবর্তে চন্দ্রাবতী হল।

স্মারকলিপিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি জনিয়ে বলা হয়েছে, ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলন একই মুক্তির বোধ থেকে উৎসারিত। ৭১ ও ২৪ প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং একই মুক্তির বোধের পরিচায়ক। তাই বঙ্গন্ধুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। তাকে অস্বীকার করে ৭১ ও ২৪ কে প্রতিদ্বন্দ্বী অবস্থানে দাঁড় করানো অপচেষ্টা। যা প্রকৃতপক্ষে স্বৈরাচারী ‘রেজিমেরই’ মনেবৃত্তি। এই অপচেষ্টা পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে যাবে।

এতে আরো বলা হয়েছে, আমরা সর্বকালের (৭১ থেকে ২৪) মুক্তির বোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীলরা তা হতে দিতে পারি না। ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ২০২৪ এর জুলাই গণঅভ্যুত্থান এর মুক্তিকামী বোধের প্রতি সম্মান জানিয়েই আমাদের এই প্রস্তাবনা। তাই জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের প্রস্তাবনা ব্যক্ত করছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

এ বছর ৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ পরিবারের চারটি আবাসিক হলের নামফলক মুছে দেন শিক্ষার্থীরা। চারটি হল- শেখ রাসেল হল, শেখ হাসিনা হল, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল।

১৭ মার্চ শেখ রাসেল হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বাতিল করে সিন্ডিকেট।

পরবর্তীতে গত ২৭ মে হলগুলোর নতুন নামের প্রস্তাবনা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ খ ম জ ব র রহম ন হল জ হ ঙ গ রনগর ল র নত ন ন ম স ম রকল প প রস ত ব র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই জলদস্যু আটক

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই জলদস্যুকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত সাড়ে নয়টা ও ১১টার দিকে উপজেলার উপকূলবর্তী যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় আটক দুই জলদস্যুর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এর আগে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে উঠে আসার সময় স্থানীয়দের ধাওয়ার মুখে অপর কয়েক সহযোগীসহ তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। আটককৃতরা যথাক্রমে শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের নওশাদ গাজী এবং আশাশুনি উপজেলার চাকলা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে।

আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন ও আকবর আলীসহ স্থানীয়রা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে অপরিচিত ৫-৭ জন ব্যক্তি সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে পৌঁছায়। এ সময় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এসব ব্যক্তি মাইক্রোবাস বা ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলের সন্ধান করছিল। একপর্যায়ে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে নাম-পরিচয়সহ সুন্দরবন এলাকায় আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় যতীন্দ্রনগর বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে আটকের পর পুলিশকে খবর দেয়।

পরে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছে নজীরকে আটকের পাশাপাশি তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই চক্রের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকার মধ্যে থেকে একটি একনলা বন্দুক ও একটি দা উদ্ধার করে।

আটক নজীর আলীর ভাষ্য তিনি সুন্দরবনের ত্রাস কুখ্যাত জোনাব বাহিনীর সদ্যদের ওপরে তুলে দেওয়া এবং সুন্দরবনে নামিয়ে দেওয়ার কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে জোনাব বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন।

আটক অপর জলদস্যু দিদারুল জানান, তিনি নজীর আলীর শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করারসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। তবে তার কাছে মোবাইলে পাওয়ার ব্যাংকসহ নানান সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে নিরুত্তর থাকেন।

এদিকে শাহাজান ও আতিয়ারসহ একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছে, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে খুব বেশী তৎপর না। বরং নজীর ও তার ছেলে আব্দুর রহিম দিদারুলসহ মুন্সিগঞ্জ আটিরউপর এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জোনাব নামে সুন্দরবনে দস্যুতা করে। পরিবহন ব্যবসার সাথে জড়িত মুন্সিগঞ্জের এক ব্যক্তির নৌকার জেলে হিসেবে দিদারুল সুন্দরবনে প্রবেশ করে বলেও তাদের দাবি।

এসব ব্যক্তি আরও জানান, প্রায় প্রতিটি জেলে নৌকা একাধিকবার জলদস্যুদের কবলে পড়লেও অজ্ঞাত কারণে উক্ত পরিবহন ব্যবসায়ীর কোন নৌকা থেকে জেলে উঠিয়ে নেওয়ার ঘটনা কখনো শোনা যায়নি। 

এদিকে অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে আটকের বিষয়ে শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককশিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো অবস্থায় একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার হয়েছে। আটকের পর উভয়কে শ্যামনগর থানায় নেওয়া হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের নতুন কমিটি ঘোষণা
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি
  • বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম মারা গেছেন
  • ৫ রাজাকারকে কোপানো সেই মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগমের মৃত্যু
  • শ্যামনগরে ২ বনদস্যু আটক, বন্দুক জব্দ
  • একাত্তরের রণাঙ্গনের সাহসী যোদ্ধা সখিনা বেগমের মৃত্যু
  • অস্ত্রসহ সুন্দরবনের দুই জলদস্যু আটক
  • ডাকসুর নির্বাচনে নতুন চার সম্পাদকীয় পদ যুক্ত
  • ভৈরব পৌর স্টেডিয়াম থেকে সরানো হলো আইভি রহমানের নাম