জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি
Published: 18th, June 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের (একাংশ) শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে তাঁরা উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের সদস্যদের নামের বিভিন্ন স্থাপনার নাম পরিবর্তনের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। এরপর চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি ৪টি আবাসিক হলের নামফলক মুছে দেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নতুন নামকরণের দাবি জানান তাঁরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ মার্চ শেখ রাসেল হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, শেখ হাসিনা হল ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম বাতিল করে সিন্ডিকেট। সম্প্রতি এসব স্থাপনার নতুন নামকরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশীজনদের কাছ থেকে নাম প্রস্তাবের আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ। এরই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোট (একাংশ) উপাচার্যের কাছে একটি স্মারকলিপি দেয়।
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি (একাংশ) ফাইজা মেহজাবিনের সই করা ওই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ‘১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলন একই মুক্তির বোধ থেকে উৎসারিত। ৭১ ও ২৪ প্রতিদ্বন্দ্বী নয় বরং একই মুক্তির বোধের পরিচায়ক। তাই বঙ্গবন্ধুর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে জয় লাভ করেছেন, তাঁকে অস্বীকার করে ৭১ ও ২৪ কে প্রতিদ্বন্দ্বীর অবস্থানে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা প্রকৃতপক্ষে স্বৈরাচারী রেজিমেরই মনোবৃত্তি। এই অপচেষ্টা পতিত স্বৈরাচারের পক্ষে যাবে, যা আমরা সর্বকালের (৭১ থেকে ২৪) মুক্তির বোধের প্রতি যাঁরা শ্রদ্ধাশীল—তাঁরা হতে দিতে পারি না।’
এ ছাড়া ওই স্মারকলিপিতে বাকি তিনটি স্থাপনার নতুন নামকরণেরও প্রস্তাব দিয়েছেন সংগঠনটির শিক্ষার্থীরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ রনগর স ম রকল প হল র ন ম
এছাড়াও পড়ুন:
ধাওয়া করে সুন্দরবনের ‘জলদস্যু’ ধরল জনতা, বন্দুক ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলায় নজির গাজী (৪৯) ও দিদারুল ইসলাম (৩৮) নামে দুই ‘জলদস্যুকে’ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার যতীন্দ্রনগর ও মীরগাং থেকে তাদের আটকের পর গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে একজনকে আটকের পর তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে আরেকজনকে আটক করে পুলিশ।
আটক দু’জনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুকসহ ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামনগর থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা। এর আগে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে আসার সময় স্থানীয় লোকজনের ধাওয়ায় তাদের কয়েকজন সহযোগী পালিয়ে গেছেন।
আবু হামজা, সিদ্দিক হোসেন, আকবর আলীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অপরিচিত পাঁচ থেকে সাতজন সুন্দরবন তীরবর্তী যতীন্দ্রনগর বাজারে আসেন। তারা গন্তব্যে যাওয়ার জন্য মাইক্রোবাস বা ভাড়ায় মোটরসাইকেল সন্ধান করছিলেন। স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের পরিচয়সহ সুন্দরবনে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা পালানোর চেষ্টা করেন।
এ সময় বাজারে উপস্থিত লোকজন ধাওয়া করে দিদারুলকে আটকের পর পুলিশে খবর দেন। শ্যামনগর থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালিয়ে নজীরকে আটক করেন। এ সময় তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহৃত মাছ শিকারের নৌকা থেকে একটি একনলা বন্দুক, গুলি ও দা উদ্ধার করা হয়।
আটক নজীর আলীর ভাষ্য, তিনি সুন্দরবনের ত্রাস জোনাব বাহিনীর সদস্যদের ‘ওপরে তুলে দেওয়া’ এবং সুন্দরবনে পাঠানোর কাজ করেন। সোমবার ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে বাহিনীর দুই সদস্যকে যতীন্দ্রনগর বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন। দিদারুল বলেন, তিনি নজীরের শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনে যাওয়া জেলেদের জিম্মি করাসহ মুক্তিপণ আদায়ের কাজ করেন। তাঁর কাছে থাকা অন্য সরঞ্জামাদির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
শাহাজান, আতিয়ারসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জোনাব বাহিনী এখন সুন্দরবনে বেশি তৎপর নয়। নজীর ও তাঁর ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুলসহ উপজেলার মুন্সীগঞ্জ আটির উপর এলাকার কয়েকজনকে নিয়ে জোনাব নামে সুন্দরবনে দস্যুতা করেন। পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মুন্সীগঞ্জের এক ব্যক্তির নৌকার জেলে হিসেবে দিদারুল বনে প্রবেশ করেন।
এ ঘটনায় শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক মুরসালিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। এতে নজির আলী, তার ছেলে আব্দুর রহিম, দিদারুল ইসলাম ও বজরুল ইসলামের নাম উল্লেখ রয়েছে। অজ্ঞাতনামা দুই-তিনজনকে এতে আসামি করা হয়েছে।
অস্ত্র উদ্ধারসহ দু’জনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে শ্যামনগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির মোল্যা বলেন, নজীরের দেওয়া তথ্যে নৌকায় থাকা ককসিটের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকানো একনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মাছ শিকারির ছদ্মবেশে সুন্দরবনে প্রবেশ করতেন বলে প্রাথমিক তথ্য মিলেছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাহিনীর নাম-পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।