নিজের যেসব তথ্য একান্ত ব্যক্তিগত রাখাই ভালো
Published: 19th, June 2025 GMT
ব্যক্তিগত লক্ষ্য
অনেকেই কাজের শুরুতেই নিজের লক্ষ্য তৈরি করে রাখেন। কাজের সুবিধার্থে অথবা লম্বা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিজের জন্য বড় পরিকল্পনা করেন অনেকে। কিন্তু সবার সঙ্গে নিজের জীবন নিয়ে পরিকল্পনার কথা ভাগাভাগি করবেন না। এতে লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিজের ওপর আলাদা চাপ পড়তে পারে। পাশাপাশি অপর পক্ষও আশা করে বসে থাকে আপনাকে সফল অথবা ব্যর্থ হতে দেখার জন্য। বরং যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অন্য কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার আগে যতটা সম্ভব নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকতে।
সম্পর্ক অথবা সঙ্গীর কথাহাসিকান্না, সুখ–দুঃখ মিলিয়েই গড়ে ওঠে সম্পর্ক। সঙ্গীর সঙ্গে সবকিছু ভালো যাবে, আপনার পছন্দমতো চলবে, এমনও কিন্তু নয়। সম্পর্কে মনোমালিন্য থাকবে, টানাপোড়েন থাকবে। কিন্তু সেই কথা অন্যকে বলে নিজেদের মধ্যকার ভরসা নষ্ট করবেন না। সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিষয়াদি আপনাদের একেবারে ব্যক্তিগত। সেসব বিষয়ে বাইরের মানুষের না জানাই শ্রেয়।
অর্থনৈতিক অবস্থানিজের অর্থনৈতিক অবস্থা যতটা গোপন রাখা যায়, তত ভালো। বিশেষ করে আপনার কাছে কত টাকা আছে, বাসাবাড়িতে টাকা আছে কি না, এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কারও সঙ্গেই শেয়ার করবেন না। দেখা যায়, বেশির ভাগ ক্ষতিই হয় পরিচিত মানুষদের দ্বারা।
আরও পড়ুনব্যক্তিগত জীবন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এনে এই বিপদগুলো ডেকে আনছেন না তো?২৯ মার্চ ২০২৪শারীরিক সমস্যাশারীরিক যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে সবার আগে প্রয়োজন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। আর সমস্যার কথা পরিবারের বাইরে শুধু বলুন চিকিৎসকের কাছে। জনে জনে শারীরিক অবস্থার অবনতির কথা বলতে না যাওয়াই ভালো। এতে নানা জনের নানা মত যেমন শুনতে হবে, তেমনই তাদের অতিরিক্ত কথা থেকে তৈরি হবে আলাদা দুশ্চিন্তা। শারীরিক সমস্যা থেকে মানসিক পীড়া তখন হয়ে উঠতে পারে গুরুতর।
পারিবারিক সমস্যাকোনো পরিবারই ঝামেলার ঊর্ধ্বে নয়। পরিবারে একসঙ্গে থাকতে গেলে খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হবেই। তাই বলে পরিবারের গোপন খবর বাইরে বলে বেড়ানোর কোনো অর্থ হয় না। খুব কাছের বন্ধুবান্ধব (যাঁদের কাছ থেকে আপনি সুপরামর্শ বা উপদেশ পেতে পারেন), এমন কেউ বাদে কারও সঙ্গে পারিবারিক সমস্যার কথা ভাগাভাগি করতে নেই।
আরও পড়ুনব্যক্তিগত কথা সহকর্মীর সঙ্গে কতটা বলবেন?০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪নিজের দুর্বলতাপ্রতিটি মানুষেরই কিছু না কিছু দুর্বলতা আছে। পরিচিত মানুষের কাছে কখনোই আগবাড়িয়ে এই দুর্বলতা স্বীকার করতে যাবেন না। নিজের দুর্বলতা ঢেকে নিজে নিজে অবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করুন। এতে লাভ হবে আপনার নিজের। নিজের দুর্বলতা জানিয়ে দিলে পরবর্তী সময়ে সেই দুর্বলতার সুযোগ নিতে পারে অনেকে।
নিজের বিশ্বাসযেকোনো আলোচিত কিংবা বিতর্কিত বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে সাবধানতা অবলম্বন করুন। বিশেষ করে কোনো বিষয়ে আপনার চিন্তাধারা কিংবা বিশ্বাস কেমন, তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। এসব ব্যাপার গোপন রাখতে পারলে অযথা ঝগড়াঝাঁটি কিংবা মনোমালিন্য থেকে অনেকটাই দূরে থাকা সম্ভব।
সূত্র: মিডিয়াম
আরও পড়ুনএই পাঁচ তথ্য চ্যাটজিপিটিকে দিয়ে ভুল করছেন না তো?১৭ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ক সমস য দ র বলত লক ষ য পর ব র আপন র অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
অবৈধভাবে খাল দখল: এক কিলোমিটারেই ১১ ভবন, ৭০ দোকান
লক্ষ্মীপুরে অবৈধভাবে খাল দখলের যেন মহোৎসব চলছে। জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক খাল ইতিমধ্যে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। প্রতিদিনই খালের দুই পাড় ভরাট করে গড়ে উঠছে অবৈধ স্থাপনা। এতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যহত হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
জেলার কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট বাজার এলাকায় জারিরদোনা খালের এক কিলোমিটার জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ১১টি বহুতল ভবন ও ৭০টির মতো দোকানপাট। নির্মাণ করা হয়েছে ১১টি বক্স কালভার্ট। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নাকের ডগায় খাল দখল করলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। এতে দখলদাররা বেপরোয়া হয়ে উঠছে এবং দখল করেই যাচ্ছে।
এদিকে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ৮০ জন দখলবাজের তালিকা তৈরি করে তাদের দখলে থেকে খালটি উদ্ধার করতে উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আব্দুল ওহাব, আক্তার হোসেন ও এলাকাবাসী আজাদ উদ্দিন ও আব্দুর রহমান জানান, উপজেলার চরফলকন, চরলরেন্স, হাজিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিকাজে এই খালের পানি ব্যবহার করা হয়। পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে যেমন পানির সংকটে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। আবার বর্ষা মৌসুমেও পানি নিষ্কাশনজনিত সমস্যায় সয়াবিন, ধান, মরিচ, বাদাম ও সবজিসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খালের দুই পাড়ে রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে গড়ে উঠছে কোনো না কোনো স্থাপনা। পাউবোর কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে চলে এসব অবৈধ দখল। কয়েক দিন পরপর দখলদারদের হাত থেকে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালায় প্রশাসন। কিন্তু উচ্ছেদের কিছুদিন পর আবারও দখল হয়ে যায়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাজিরহাট বাজারের উত্তর অংশের ১০০ মিটারের মধ্যে ‘হাজী মোতাহের হোসেন সুপারমার্কেট, আল মোস্তফা মঞ্জিল নামে চারতলাসহ অন্তত ১১টি বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ছোট-বড় প্রায় ৭০টি টিনশেড দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্য মতে, পিএস জরিপে হাজিরহাট বাজার অংশে খালের প্রশস্ততা ছিল গড়ে প্রায় ৩২ ফুট। বর্তমান আরএস জরিপে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ ফুটে।
কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হুসাইন বলেন, “এরই মধ্যে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদেরকে নোটিশ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন সাড়া দেয়নি। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তালিকাভূক্ত ৮০ স্থাপনার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযানসহ শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে রহমতখালী খালের লক্ষ্মীপুর পৌরসভা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ময়লা পানি, আবর্জনা আর সংকীর্ণতায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে খালটি। দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠেছে দোকান ও বাড়িঘরসহ অবৈধ স্থাপনা। বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনা চলছে বহাল তবিয়তে। এতে ময়লা-আর্বজনার স্তূপ জমে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে খালটি। এর ফলে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে আর দুর্ভোগ বাড়ছে মানুষের। একই অবস্থা ডাকাতিয়া নদীতেও।
লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর, রায়পুর, রামগতি, কমলনগর ও রামগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া রহমতখালী খাল ও ডাকাতিয়া নদীসহ প্রায় অর্ধশতাধিক খালই এখন মৃতপ্রায়। প্রায় ১৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এসব খাল ও নদীর অস্তিত্ব ছিল।
লক্ষ্মীপুর জেলা জজ কোর্টের আইনজীবী মাহীর আসহাব বলেন, “রহমতখালী খাল প্রায় ২০০ ফুট চওড়া ছিল। দখলের কারণে তা এখন মাত্র ৩০-৪০ ফুটে দাঁড়িয়েছে। পৌরসভার বেশির ভাগ বর্জ্যই এখন এই খালে যাচ্ছে। ফলে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।”
জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুল জামাল বলেন, “খাল দখলে কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে অবৈধ দখলদারদের তালিকা করা হয়েছে। এরপর উদ্ধার অভিযান চালানো হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে কিছু কিছু জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে।”
ঢাকা/লিটন/এস