ইরাকের রাজধানী বাগদাদে জেনারেটর বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ আলী (২৫) নামের এক বাংলাদেশি তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের লোকজন গতকাল বৃহস্পতিবার এ খবর জানতে পারেন।

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের কারণে আলীর মরদেহ দেশে আনা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাহায্য চেয়েছেন তাঁরা।

আলী ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের পূর্ববাপ্তা চেউয়াখালী গ্রামের সালেহ আহমেদের ছেলে। ২০২০ সালে আলী ইরাকে যান। সেখানে বাগদাদের একটি কোম্পানিতে কাজ নেন তিনি। তাঁর আয়ে ৫ বোন, এক ভাই ও মা-বাবাসহ ৯ সদস্যের পরিবারটি চলত। ১৫ জুন বাগদাদে কর্মক্ষেত্রের জেনারেটর কক্ষে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন আলী।

আলীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর তাঁর গ্রামের বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা। গতকাল বিকেলে চেউয়াখালীতে গিয়ে দেখা যায়, আলীর পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। আলীর বাবা সালেহ আহমেদ বাড়ির এক পাশে বসে বিড়বিড় করে কথা বলছিলেন আর কাঁদছিলেন। তিনি বলেন, ‘বাড়ি অইলো, ঘর অইলো, তুমি (আলী) বুকের ধন আর ফিরা আইলা না। তোমারে বিয়ে করান অইলো না, তোমার নতুন বউ আইলো না। নতুন দালানে তোলা অইলো না।’

স্বজন ও প্রতিবেশীরা জানান, মোহাম্মদ আলী সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বর মাসে দেশে এসেছিলেন। তখন তাঁর বিয়ে করার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু ভাঙাচোরা ঘরের কারণে বিয়ে পেছানো হয়। ওই অবস্থায় ইরাক ফিরে যান আলী। কোম্পানির মালিকের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। বাড়ির কাজও প্রায় শেষ। আলীর বাবার কত আশা ছিল, ছেলে দেশে ফিরলে বিয়ে দেবেন। এ জন্য বাড়িতে পাকা দালান নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। পাত্রীও দেখা শুরু করেছেন। কিন্তু তাঁদের সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

আলীর পরিবারের সদস্যরা জানান, আলীর মরদেহ দেশে আনার ব্যাপারে মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। লাশ দেশে পাঠানোর ব্যাপারে তাঁদের কোনো আপত্তি নেই। আর ইরাকে দাফন করতে চাইলেও করতে পারেন। কিন্তু ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে মরদেহ আনা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ইরাক থেকে আপাতত ফ্লাইট বন্ধ। এ ছাড়া আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেও সময় লাগবে। আলীর কর্মক্ষেত্রের এসব তথ্য পেয়ে পরিবারটি আরও বেশি দুশ্চিন্তায় পড়েছে। যে করেই হোক মরদেহ দেশে আনতে চান তাঁরা। শেষবারের মতো আলীকে দেখতে চান তাঁরা।

ভোলার জেলা প্রশাসক আজাদ জাহান বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে কোনো চিঠি আসেনি। হয়তো অফিস খুললে আসতে পারে। তখন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে চায় জামায়াত: আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের

ছবি: প্রথম আলো

সম্পর্কিত নিবন্ধ