দেশে গত ৯ বছরে বড় কোনো জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি। জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের উল্লেখযোগ্য প্রকাশ্য তৎপরতাও দেখা যায়নি। যদিও বিভিন্ন সময়ে ভেতরে-ভেতরে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করেছিল উগ্রবাদে সম্পৃক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী। তবে বড় হামলার শক্তি অর্জন করতে পারেনি তারা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এই গণ-আন্দোলনে অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং গুলি করে মানুষ হত্যায় জড়িয়ে পড়েন একশ্রেণির পুলিশ সদস্য। ফলে জনরোষের মুখে পড়ে পুলিশও। ভঙ্গুর অবস্থা থেকে পুলিশকে আবার সংগঠিত করে পুলিশি কার্যক্রম শুরু হলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে একরকম বন্ধ হয়ে গেছে উগ্রবাদীদের ওপর নজরদারি।

দেশে গত তিন দশকে যেসব জঙ্গি হামলা হয়েছে, তাতে চারটি সংগঠনের নাম সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে। এগুলো হলো হরকাতুল জিহাদ আল-ইসলামি বাংলাদেশ (হুজি-বি), জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি), নব্য জেএমবি ও আনসার আল–ইসলাম। 

আরও পড়ুনহোলি আর্টিজানে হামলা: নৃশংসতার সেই রাতের ৯ বছর আজ ১ ঘণ্টা আগেবড় হামলার ঘটনা না থাকলেও নজরদারি বন্ধ হলে পাল্টে যাওয়া পরিস্থিতিতে উগ্রবাদের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর বেশি আলোচনায় আসে নব্য জেএমবি। সেই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী ১৫টি অভিযানে ৬৪ জন নিহত হন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সিরিয়ায় আইএসের পতনের পর অন্যান্য দেশের মতো এ দেশেও তাদের অনুসারীরা আর সংগঠিত হতে পারেনি।

এবার বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচকেও বাংলাদেশের ৩ ধাপ উন্নতি হয়েছে। এ বছরের ৫ মার্চ সিডনিভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের (আইইপি) বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচক বা জিটিআই ২০২৫ প্রকাশ করে। এবার সন্ত্রাসবাদের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৫তম। স্কোর ৩.

০৩। আগের বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৩২তম। এবার দক্ষিণ এশিয়ায় সূচকে সাতটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। দক্ষিণ এশিয়ায় খারাপের দিক থেকে শীর্ষে অবস্থানে আছে পাকিস্তান, দ্বিতীয় স্থানে আফগানিস্তান ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত।

জঙ্গিবাদ নিয়ে কাজ করা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, জঙ্গিবাদের বিস্তার একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অংশ। অনেক ক্ষেত্রে বৈশ্বিক বা আঞ্চলিক প্রভাব জঙ্গিবাদে বড় ভূমিকা রাখে। এ জন্য বাংলাদেশ বর্তমানে ঝুঁকিমুক্ত অবস্থায় আছে তা বলার সুযোগ নেই। কারণ, অনলাইনে এখনো উগ্রবাদ প্রচারের তৎপরতা রয়েছে।

আরও পড়ুনহোলি আর্টিজানে হামলা: ৭ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ১৭ জুন ২০২৫

এদিকে মালয়েশিয়ায় জঙ্গি নেটওয়ার্কে জড়ানোর অভিযোগে ৩৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছেন। মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম দ্য স্টার ও দ্য ভাইবস–এর খবর অনুযায়ী, গত ২৪ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে। ওই দেশের সরকার জানিয়েছে, এই ব্যক্তিরা মালয়েশিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতাদর্শ প্রচার করছিলেন। পাশাপাশি তাঁদের কমিউনিটির (যাঁদের সঙ্গে থাকেন) ভেতরে সদস্য সংগ্রহের সেল গঠন করেছিলেন।

এসব বিষয় উল্লেখ করে জঙ্গিবাদের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সঙ্গে। সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার মো. মাসুদ করিম প্রথম আলোকে বলেন, দেশে বর্তমানে জঙ্গি হামলার বড় কোনো ঝুঁকি নেই। তবে স্থিতিশীল অবস্থা ধরে রাখতে নজরদারি চলছে।

আরও পড়ুনচার মাস প্রস্তুতি নিয়ে হোলি আর্টিজানে হামলা০১ জুলাই ২০২৩

উঠেছে বিতর্ক, এখন ভয়

উগ্রবাদ নির্মূলে কাজ করা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপকভাবে তৎপর ছিল। তবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলার নামে বিরোধী রাজনৈতিক মত দমনে নিরীহ ব্যক্তিদের হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগও ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এমন অভিযোগ আরও তীব্র হয়। এমন পরিস্থিতিতে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রকৃত কার্যক্রমও বিতর্কের মুখে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও ওঠে।

গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনেও এ বিষয়টি উঠে আসে। ১৯ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে একটি বাস্তব হুমকি। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ২০১৬ সালের হোলি আর্টিজানে হামলার মতো ঘটনা এর প্রমাণ। তবে এই হুমকি মোকাবিলায় রাষ্ট্রের সততা, মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি ও আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় অটল থাকা জরুরি। সরকার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণাকে যখন রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, তখন তা আইনের শাসন, প্রতিষ্ঠান ও জনগণের বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়।

এদিকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত কর্মকর্তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। আবার জঙ্গিবাদে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেপ্তার হওয়া অনেকে এখন অনেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বেআইনি আটক ও নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। এমন পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জঙ্গিবাদ নির্মূলের কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত ইউনিটগুলোতে যোগ দেওয়া নতুন কর্মকর্তারাও দায়িত্ব পালনে অস্বস্তিতে আছেন। যার কারণে উগ্রবাদের ওপর নজরদারিতে বড় ধরনের ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুনহোলি আর্টিজান হামলা: যে প্রশ্নগুলো তোলা জরুরি০১ জুলাই ২০২২

জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমে অনেক দিন ধরে কাজ করছে ডিএমপির সিটিটিসি ইউনিট। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ মুহূর্তে উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর তাদের নজরদারি নেই বললেই চলে। উগ্রবাদী কার্যক্রমের বিষয়ে অনলাইন মাধ্যমেও আগের মতো তাদের তৎপরতা (সাইবার প্যাট্রোলিং) নেই। সন্দেহভাজনদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের কার্যক্রমও কখনো খুব সীমিত পরিসরে, আবার কখনো বন্ধ থাকছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, উগ্রবাদকে নির্মোহভাবে দেখে ঝুঁকি মোকাবিলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

জঙ্গিবাদ বিষয়েবিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মী নূর খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশে পর পর বেশ কিছু জঙ্গি হামলায় অনেকে নিহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। পাশাপাশি জঙ্গি বার্তা সামনে নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পশ্চিমাদের দৃষ্টি আকর্ষণে কিছু নাটকীয় ঘটনাও ঘটেছে। কেবল ধর্মকর্ম পালনকে পর্যবেক্ষণে নিয়ে আটক করে জঙ্গি তকমা দেওয়ার ঘটনাও দেখা গেছে। তবে ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর প্রকৃতপক্ষে জঙ্গিবাদের সঙ্গে যুক্ত এমন অনেকেই জামিনে মুক্ত বা বিভিন্নভাবে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁদের ওপর নজরদারিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শৈথিল্য দেখছি। এটা বেশি দিন চলতে দেওয়া ঠিক হবে না। এ বিষয়ে যথাযথ গুরুত্ব না দিলে সেটা পরে বড় বিপদের কারণ হতে পারে।’ 

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত ত কর মকর ত র নজরদ র আর ট জ ন রক ষ ক র অবস থ ন দ র ওপর র অবস থ সরক র র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ

চলতি অক্টোবর মাসে দেশে অজ্ঞাতনামা লাশ এবং কারা হেফাজতে মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় বেশ খানিকটা বেড়েছে। এ তথ্য তুলে ধরেছে মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। প্রতিষ্ঠানটির অক্টোবর মাসের মানবাধিকার প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এমএসএফ বলেছে, এসব ঘটনায় জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ দুই ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে জনমনে সন্দেহ আছে।

এমএসএফ প্রতি মাসে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরে। আজ শুক্রবার অক্টোবর মাসের প্রতিবেদন গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং নিজস্ব তথ্যানুসন্ধানের ওপর ভিত্তি করে এমএসএফ মানবাধিকার প্রতিবেদন তৈরি করে।

বেড়েছে অজ্ঞাতনামা লাশ

এমএসএফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে মোট ৬৬টি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে। এটি অনাকাঙ্ক্ষিতই নয়; বরং নাগরিক জীবনে নিরাপত্তাহীনতার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত মাসে (সেপ্টেম্বর) এর সংখ্যা ছিল ৫২। এসব অজ্ঞাতনামা লাশের বেশির ভাগই নদী বা ডোবায় ভাসমান, মহাসড়ক বা সড়কের পাশে, সেতুর নিচে, রেললাইনের পাশে, ফসলি জমিতে ও পরিত্যক্ত স্থানে পাওয়া যায়। অল্পসংখ্যক মৃতদেহ গলাকাটা, বস্তাবন্দী ও রক্তাক্ত বা শরীরে আঘাতের চিহ্নসংবলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

এমএসএফ বলেছে, অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের ঘটনা বেড়েই চলেছে এবং তা জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি জোরালোভাবে সবার সামনে প্রতিফলিত হচ্ছে। পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় উদ্ধারে অপারগতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১টি শিশু, ১ কিশোর, ১১ জন নারী ও ৫৩ জন পুরুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭ বছর বয়সী শিশু; ১৫ বছর বয়সী কিশোর; ২০ থেকে ৩০ বয়সী ১৫ জন পুরুষ ও ২ জন নারী; ৩১ থেকে ৪০ বয়সী ১৯ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী; ৪১ থেকে ৫০ বয়সী ১ নারী ও ৫ জন পুরুষ এবং ৫০ বছর বয়সের বেশি ১১ জন পুরুষ ও ১ নারী রয়েছেন। এর মধ্যে অজ্ঞাতনামা তিনজনের বয়স শনাক্ত করা যায়নি।

এমএসএফ বলেছে, শুধু অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না; বরং পরিচয় জানার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। পরিচয় উদ্ধার করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের কর্তব্য।

কারা হেফাজতে মৃত্যু বাড়ছেই

এমএসএফের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরে কারা হেফাজতে মোট ১৩ জন বন্দীর মৃত্যু হয়েছে। গত মাসে এ সংখ্যা ছিল মোট ৮। এ মাসে ছয়জন কয়েদি ও সাতজন হাজতির মৃত্যু হয়েছে।

কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চারজন কয়েদি ও দুজন হাজতি, গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন কয়েদি ও শেরপুর জেলা কারাগারে একজন কয়েদি মারা যান। এ ছাড়া খুলনা জেলা কারাগারে, টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে, চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে, সিরাজগঞ্জ কারাগারে ও মানিকগঞ্জ জেলা কারাগারে একজন করে হাজতি বন্দী মারা যান। সব বন্দীর মৃত্যু হয় কারাগারের বাইরে হাসপাতালে।

এমএসএফের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কারা হেফাজতে মৃত্যু এবং অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধারের সংখ্যা বৃদ্ধি মানবাধিকার পরিস্থিতির চরম অবনতির চিত্র তুলে ধরে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই লাশ উদ্ধার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে। কিন্তু এসব লাশ উদ্ধার করে তার পরিচয় শনাক্ত করা এবং সুরতহাল ও ময়নাতদন্ত করে মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটন করাই শুধু নয়, এসব লাশ আত্মীয়-পরিজনের কাছে পৌঁছে দেওয়া এসব বাহিনীর কাজ। কিন্তু একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করা ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আর কোনো কাজ নেই।

সাইদুর রহমান বলেন, অজ্ঞাতনামা লাশের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হেফাজতে মৃত্যু বৃদ্ধি জনমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করে।

গণপিটুনিতে হত্যা চলছেই, বেড়েছে রাজনৈতিক সহিংসতা

অক্টোবর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার শিকার হয়েছেন ৫৪৯ জন। এর মধ্যে ২ জন নিহত এবং ৫৪৭ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ এবং নিহত ব্যক্তিরা বিএনপির কর্মী–সমর্থক। সেপ্টেম্বর মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ৩৮টি ঘটনা ঘটেছিল।

সহিংসতার ৪৯টি ঘটনার মধ্যে ১১টি ঘটনায় রাজনৈতিক বিরোধ ও সহিংসতাকে কেন্দ্র করে পার্টি অফিস, বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিকাণ্ড এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

অক্টোবর মাসে মোট গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে ৪৪টি। আগের মাসে এ ঘটনা ঘটেছিল ৪৩টি। এ মাসে গণপিটুনির শিকার হয়ে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা ছিল ১২। আগের মাসে নিহত হয়েছিলেন ২৪ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানবাধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবতা ভিন্ন
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
  • প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ, নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • গাজায় ব্যাংক খুলেছে, নেই নগদ অর্থ
  • গণভোট নিয়ে উত্তাপ নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: প্রেস সচিব
  • অজ্ঞাতনামা লাশ আর কারা হেফাজতে মৃত্যু বেড়েছে, শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় জনমনে সন্দেহ: এমএসএফ
  • কথার আগে গুলি চালায় ‘কাকন বাহিনী’, দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পদ্মার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল