ভালো নির্বাচনের জন্য সংস্কার জরুরি: জামায়াতের আমির
Published: 4th, July 2025 GMT
ভালো নির্বাচনের জন্য মৌলিক বিষয়ে কার্যকর সংস্কার জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রংপুরে জনসভায় যোগ দেওয়ার উদ্দেশে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের আমির বলেন, আমরা সবসময় মবের ঘোর বিরোধী। মব ১৯৭২ সাল থেকে শুরু হয়েছে। এখন দেশে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে কিসের নির্বাচন? এজন্য আগে পরিবেশ পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে। এই পরিবেশ তৈরির জন্যই সংস্কারের প্রস্তাব এসেছে। তাই আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন করতে হবে।
তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার রংপুর জিলা স্কুল মাঠে শুরু হয় জামায়াতের বিভাগীয় জনসভা। ১৭ বছর পর রংপুরের এই জনসভায় দুই লক্ষাধিক লোক সমাগমের টার্গেট নিয়েছে দলটি। বিকেল ৩টায় আয়োজিত জনসভা উপলক্ষে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠের ভেতরে প্রবেশের জন্য নতুন দুটি প্রবেশপথ তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া নারীদের পর্দার সঙ্গে বক্তব্য শোনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জনসভাকে কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরে মাইকিং করার পাশাপাশি রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। বড় বড় বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। সেই সঙ্গে পোস্টার, ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়। মাইকিং ছাড়াও জেলা উপজেলায় করা হয়েছে গণসংযোগ। বিশাল মোটরসাইকেল র্যালি করেছে দলটি। বিভাগীয় জনসভা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে প্রচারণাসহ ১৩টি উপ-কমিটি দিন-রাত কাজ করছে। এছাড়াও মেডিকেল টিম, নিজস্ব ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম র রহম ন ল ইসল ম র জন য র আম র
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার ছাড়া নির্বাচন নয়: জামায়াতের আমির
জাতীয় নির্বাচনের আগে সংস্কারের তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় মৌলিক সংস্কার ছাড়া কোনো গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। ইনশাআল্লাহ, সংস্কার করেই নির্বাচন হবে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জেলা ও মহানগর জামায়াতের আয়োজনে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, “আগামী নির্বাচনে কালো টাকা ও অপকর্ম রুখতে যুবকদের মাঠে থাকতে হবে। সব যুবককে এ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।”
সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫৪ বছর ধরে যারা সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে মায়াকান্না করেছে, তারাই জাতির ক্ষতির জন্য দায়ী। আমরা সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করব। সংবিধানের পাহারাদার হবো। দেশের মালিক নয়, সেবক হবো, ইনশাআল্লাহ।”
আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “গত ১৫ বছরে আমাদের ১১ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে অন্যায়ভাবে হত্যা ও বহু নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। তবু, বিপ্লব-পরবর্তী ১০ মাসে আমরা কোনো প্রতিশোধ নিইনি। আমরা অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে নয়, মানবিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে দেশে মবতন্ত্র চলছে। জামায়াত মব রাজনীতি সমর্থন করে না। জনগণ মব সন্ত্রাসীদের বিচার দেখতে চায়। মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী কঠোর অবস্থানে থাকবে।”
তিস্তা মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন ও জুলাই বিপ্লবে আবু সাঈদসহ অন্যদের হত্যার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, এ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না।
জনসভায় জামায়াতে ইসলামীর রংপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের ঢল নামে। তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে জনসভাস্থলেই দুপুর দেড়টায় জুমার নামাজ আদায় করেন তারা।
জনসভায় বক্তব্য দেন দীর্ঘদিন কারাবন্দি থাকা জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ফাঁসির মঞ্চ থেকে ফিরে এসেছি। এখন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় নিজেকে উৎসর্গ করব।”
আবু সাঈদের জীবনের বিনিময়ে তার মুক্তি হয়েছে, উল্লেখ করে এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, “অন্যায়ভাবে যারা ১৫ বছর ইসলামপ্রিয় মানুষদেরকে জেল-জুলুম দিয়েছে, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী। এই কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, তাদের শাস্তি দিতে হবে।”
শুক্রবার বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জনসভা শেষ হয়। সভায় রংপুর অঞ্চলের ৩৩টি আসনের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্যে দিয়ে উত্তরাঞ্চল সফর শুরু করেন ডা. শফিকুর রহমান। সেই ধারাবাহিকতায় এ পর্যন্ত রংপুর বিভাগে তিনি ১০টি জনসভা করেন। এ টি এম আজহারুল ইসলামের কারামুক্তির পর আজ একাদশতম জনসভা করা হলো।
ঢাকা/আমিরুল/রফিক