পুঁজিবাজারের মাঠ খেলার জন্য প্রস্তুত: বিএসইসি কমিশনার
Published: 4th, July 2025 GMT
বর্তমানে পুঁজিবাজারের মাঠ তো খেলার জন্য পুরো প্রস্তুত। যারা বিনিয়োগ করতে চান, তাদের জন্য ভালো ফল পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার এম. আলী আকবর।
শুক্রবার (৪ জুলাই) ও শনিবার (৫ জুলাই) দুই দিনব্যাপী আশুলিয়ার ব্র্যাক সিডিএমে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) যৌথ উদ্যোগে আবাসিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কর্মশালার শুরুতে ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ।
আরো পড়ুন:
ডাটা সেন্টার বিক্রির কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি
বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার ব্যাখ্যা দিল রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স
এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ, সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন, ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিষ্টস ফোরামের (সিএমজেএম) সভাপতি এসএম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আবু আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক শহীদুল ইসলাম।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনারা কি ফাউল খেলতে চাচ্ছেন, এমন মাঠ নেই তাই আস্থা পাচ্ছেন না? নাকি শৃঙ্খলভাবে খেলার মাঠে আস্থা পাচ্ছেন না, যেখানে প্লেয়িং ফিল্ডে সুন্দরভাবে খেলা যায়? আমি বুঝতে পারছি না বিনিয়োগকারীরা কোন ধরনের মার্কেটের জন্য আস্থার সংকট দেখছে। আমরা চাই বিনিয়োগকারীরা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন। আর পুঁজিবাজারও যেন উন্নতি করে।”
তিনি আরো বলেন, “শেয়ারবাজারে আস্থা সংকট নিয়ে কথা হচ্ছে। আমি নিজেও জানি না আস্থা কখন কিভাবে, কার ওপর হয় এবং তা কতক্ষণ থাকে।তবে আমি বুকে হাত রেখে বলতে পারব এই বাজারে আমার কোনো নেতিবাচক ভূমিকা নেই। এই কমিশন ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজ করে না। বিশ্বাস বা কনফিডেন্স কখন কোন বিষয়ে কার ওপর হয়, সেটা কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারেন না। এই মাকেটের ব্যাপারে কোনো ধরনের নেতিবাচক ভূমিকা বিএসইসির নেই। আমরা চাই মার্কেট ভালো হোক।”
আলী আকবর বলেন, “সাধারণভাবে প্রশ্ন জাগে বিএসইসি এত জরিমানা কেন করে? যখন কেউ আইন বা বিধি লঙ্ঘন করে তখনই পেনাল্টি করা হয়। যে বা যারা পুঁজিবাজারকে ধ্বংস করবে বা করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তবে এটা আগেও করা হয়েছে, কৌশলে। অথবা করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “সত্য সুন্দরের সাথে অসত্যকে মিশ্রণ করা যাবে না। যিনি জরিমানা পরিশোধে রাজি, তার কোনো সমস্যা নেই। আর যিনি আপিল করবেন, সেটিও তার অধিকার। কমিশনের পক্ষে এই প্রক্রিয়া বন্ধ করা সম্ভব নয়। পুঁজিবাজার ধ্বংসে যেসব চক্র সক্রিয়, বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির জন্য দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিএসইসি কমিশনার বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি অ্যানফোর্সমেন্টের প্রয়োজন রয়েছে। এটা না করলে বাজারকে সঠিকপথে রাখা যাবে না। পেনাল্টির ব্যাপারে দুটো অপশন, একটি আমাদের পেনাল্টির টাকা আপনি দিয়ে দেবেন। অপরটি হলো টাকা না দিয়ে আপনি আদালতে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন। তবে পেনাল্টির টাকা একদিন না এক সময় আদায় হবেই।”
বিএসইসি কমিশনার ফারজানা লালারুখ বলেন, “পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিএসইসি ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।”
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, “তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিষয়ে অনুসন্ধানে সাংবাদিকদের রিপোর্ট আমাদের বড় সহায়তা করে। অনেক সময় সাংবাদিকরা ব্যক্তিগতভাবেও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন। আজকের এই প্রশিক্ষণ তাদের আরও কার্যকর রিপোর্টিংয়ে সহায়তা করবে বলে মনে করি।”
সিএমজেএফ সভাপতি এস এম গোলাম সামদানী ভূঁইয়া বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “বাজার উন্নয়নে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ ধরনের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত সময়োপযোগী।”
ঢাকা/এনটি/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র র জন য ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি কোম্পানির সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও তা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন না করায় সাত নিরীক্ষক (অডিটর) প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ বছরের জন্য অডিট এবং অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সেইসঙ্গে ওই নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষকদের কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না, সেই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে তাদের শুনানিতে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
আরো পড়ুন:
সোনালী পেপারের শেয়ার কারসাজি: ১১ কোটি ৮২ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজার উন্নয়নে ডিএসই ও ডিসিসিআইয়ের যৌথ সভা
গত মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৭৩তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক এ হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; রিংসাইন টেক্সটাইল লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৭, ২০১৮, ২০১৯ এবং ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক যথাক্রমে: আহমেদ অ্যান্ড আক্তার, মাহফেল হক অ্যান্ড কোং, আতা খান অ্যান্ড কোং এবং সিরাজ খান বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস; আমান কটন ফাইব্রাস লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০২০ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক ইসলাম কাজী শফিক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস এবং ফারইষ্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৩০ জুন, ২০১৮ ও ২০১৯ সমাপ্ত অর্থবছরের নিরীক্ষা ফার্ম ও নিরীক্ষক মাহফেল হক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড এ্যকাউন্ট্যান্টস আর্থিক প্রতিবেদনে গুরুতর আর্থিক অনিয়ম ও সিকিউরিটিজ আইনের লঙ্ঘন থাকা সত্ত্বেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উত্থাপন করেনি।
এ সকল নিরীক্ষা ফার্ম এবং নিরীক্ষককে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানি, সকল ধরনের বিনিয়োগ স্কিম (যথা- মিউচ্যুয়াল ফান্ড, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) এবং পুঁজিবাজারে মধ্যস্থতাকারী সকল প্রতিষ্ঠানের অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রম পরিচালনার উপর নিষেধাজ্ঞা তথা পাঁচ বছরের জন্য অডিট ও অ্যাসিউর্যান্স কার্যক্রমে অংশগ্রহণে কেন অযোগ্য ঘোষণা করা হবে না এই মর্মে ব্যাখ্যা তলব করে শুনানি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এনটি/বকুল