রুমায় অভিযানে নিহত দুই কেএনএ সদস্যের পরিচয় শনাক্ত
Published: 4th, July 2025 GMT
বান্দরবানের রুমা উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত কুকি-চীন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) দুই সদস্যের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার বান্দরবান সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বম সোশ্যাল কাউন্সিল (বিএসসি) ও ইয়াং বম অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়াইবিএ) নেতারা নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন লালহিম সাং বম (৩০) ও লালতোলয়াং থাং বম (২৮), তিনি অজয় বাবু নামেও পরিচিত।
লালহিম সাং বম রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুন্নুয়াপাড়ার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মৃত জিরখুম বমের ছেলে। অপরজন লালতোলয়াং থাং বম একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রৌনিনপাড়ার লালতিন সম বমের ছেলে। পুলিশের ভাষ্য, তাঁর আরেক ভাইও কেএনএফের সদস্য।
বান্দরবান সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে রুমা উপজেলার মুয়ালপিপাড়া ও পলিপ্রাংসাপাড়ার মাঝামাঝি নাইতং পাহাড়সংলগ্ন তাইদাংম্রংঝিরি এলাকায় কেএনএর একটি আস্তানায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে গোলাগুলির পর ঘটনাস্থল তল্লাশি করে দুটি মরদেহ, তিনটি এসএমজি, একটি চাইনিজ রাইফেল, বিপুল পরিমাণ গুলি ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বান্দরবানে সাম্প্রতিক সময়ে গঠিত সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) দাবি করে, কেএনএ তাদের সশস্ত্র শাখা। ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার দুর্গম এলাকায় সংগঠনটির সশস্ত্র তৎপরতা বাড়ে।
বিএসসি সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লালজার লম বম বলেন, ‘নিহত দুজন কেএনএর সদস্য। পরিচয় শনাক্ত করার পর আমরা মরদেহগুলো তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতা সাংমিন বম ওরফে পুতিন বমও ওই অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হলেও তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়নি।
রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন উপজ ল র এল ক য় সদস য মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে হাসপাতালের বারান্দায় ২ নারীর সন্তান প্রসব
সিলেট ওসমানী হাসপাতালের বারান্দায় ১০ মিনিটের ব্যবধানে দুই নারী সন্তান প্রসব করেছেন। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে।
স্বজনদের অভিযোগ, প্রসব বেদনায় ছটফট করলেও লেবার ওয়ার্ডের কর্মরত চিকিৎসক ও নার্সরা জানারও পরও সেবা দিতে এগিয়ে আসেনি প্রসূতিদের। পরে হাসপাতালের বারান্দায় নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে আড়াল করে সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করেন অন্যান্য রোগীর স্বজনরা।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। দুই প্রসূতির একজন এসেছিলেন গোলাপগঞ্জের বাউসি গ্রাম থেকে। তিনি ওই গ্রামের রতন দাসের স্ত্রী মিতালী দাস (২৫)। তিনি একটি পূত্র সন্তান প্রসব করেছেন।
অন্যজন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর গ্রামের মো. শাহিনের স্ত্রী সুমি বেগম (১৯)। তিনিও একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দুই প্রসূতির স্বজনদের কাছ থেকে জানা যায়, এদিন বিকেল ৪টার দিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২য় তলার ১৫নং ওয়ার্ডে সামনে পৌঁছান দুই প্রসূতি ও তাদের স্বজনরা। স্বজনরা কর্তব্যরত নার্সের কাছে গেলেও তারা তাদের কথা শোনেনি বরং সিরিয়াল ধরার নির্দেশ দিয়ে দুই নার্স নিজেদের মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। রোগীর অবস্থা জরুরি বলার পরেও তারা জানিয়ে দেন তাদের করার কিছু নেই।
এ অবস্থায় বসে থাকা একজন প্রসূতির চিৎকার ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বসা অবস্থাতেই তিনি একটি পূত্র সন্তানের জন্ম দেন। তখন উপস্থিত স্বজন ও অন্যান্যরা দ্রুত আড়াল দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এই আড়াল দিতে গিয়েও তারা নার্সদের কাছ থেকে কোনো সহযোগীতা পাননি। পর্দা করার জন্য একটা চাদর চাইলেও তারা সাড়া দেননি। পরে সেখানে উপস্থিত নারীরা নিজেদের পরনের কাপড় দিয়ে পর্দার ব্যবস্থা করেন। প্রথমজনের ১০ মিনিট পরে অপর প্রসূতিও একইভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, “যে ওয়ার্ডটিতে সন্তান প্রসব করেছেন সেটা পুরোটাই লেবার ওয়ার্ড। এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে ২০০ নারী আসেন। যারা বিভিন্ন উপজেলা থেকে রেফার্ড হয়ে আসেন। দেখা যায় তারা অন্তিম মুহূর্তে আসেন তখন সিরিয়াল থাকে না। এছাড়া একটি বাচ্চা চার মাস আগে ডেড ছিল। সেটি মৃত অবস্থায় জন্ম নিয়েছে। অপর মায়ের ব্যাপারে আমরা খোঁজ নিচ্ছি।”
তিনি জানান, কোন এক রোগীর স্বজন লেবার ওয়ার্ডের ছবি তুলে বাইরে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এখানে ডাক্তার বা নার্সদের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিল না। সবাই ওভার লোডেড হয়ে কাজ করছে। তার জন্য চাইলেও আমরা শতভাগ সার্ভিস দিতে পরি না। সে বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, “আমরা আন্তরিকভাবে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।”
ঢাকা/নূর/এস