৩৮তম ওভারে দলীয় ২০০ রান পায়। দুইশ পেরিয়ে জাকের আলী অনিক ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে আসিথার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ড্রেসিং রুমের পথ ধরলেন জাকের। ৪০ বলে ২৪ রান করেন তিনি। তার বিদায়ে ভাঙল ৪৫ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। ক্রিজে নতুন ব্যাটসম্যান তানজিম হাসান। ৬৩ বলে ৪৫ রানে খেলছেন তাওহিদ হৃদয়। ৩৯ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২০৪ রান। 

টিকলেন না শামীম

৪ উইকেটের পর শামীম-হৃদয়ের জুটিতে আশা দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু থিতু হয়েও টিকতে পারলেন না শামীম। আসিথার বলে ক্যাচ দিয়ে ২৩ বলে ২২ রান করে ফেরেন শামীম। তার বিদায়ে ভাঙে ৩৭ বলে ৩৩ রানের জুটি। বাংলাদেশ ২৯ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রানে ব্যাট করছে। ক্রিজে হৃদয়ের সঙ্গী জাকের আলী।

পারভেজের পর ফিরলেন মিরাজ

অনেকক্ষণ ধরেই বাউন্ডারি নেই বাংলাদেশের। তাতে চাপ বাড়ছিল ক্রিজে থাকা ব্যাটারদের। সেই চাপের মধ্যেই হাসারাঙ্গার গুগলিতে বোল্ড হয়ে গেছেন পারভেজ হোসেন। ৬৯ বলে ৬৭ রানে ফিরেছেন এই ওপেনার। তার বিদায়ের পর ব্যাটিংয়ে নেমে ১০ বল খেলেই ফিরেছেন মিরাজ। চামিরার বলে সাজঘরে ফেরার আগে ৯ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ক্রিজে তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে আছেন নতুন ব্যাটার শামীম হোসেন পাটোয়ারী। বাংলাদেশ ২৩ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রানে ব্যাট করছে।

ফিরলেন তানজিদ-শান্ত, ইমনের ফিফটি

দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফিরেছেন ওপেনার তানজিদ তামিম ও তিনে নামা নাজমুল শান্ত।

বাংলাদেশ ১৪ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৮৯ রানে ব্যাট করছে। ক্রিজে থাকা ওপেনার পারভেজ ইমন ৫১ রানে খেলছেন। তার সঙ্গী তাওহীদ হৃদয়। তানজিদ ৯  ও শান্ত ১৪ রান করে ফিরেছেন। 

বাংলাদেশ একাদশে দুই পরিবর্তন এনেছে। লিটন দাসকে বাদ দিয়ে শামীম পাটোয়ারিকে একাদশে নেওয়া হয়েছে। তাসকিন আহমেদকে বিশ্রাম দিয়ে হাসান মাহমুদকে নেওয়া হয়েছে। শ্রীলঙ্কাও দুই পরিবর্তন এনেছে। পেস অলরাউন্ডার মিলান রত্নায়েকের জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন স্পিনার দুনিথ ভেল্লালাগে। এসান মালিঙ্কার বদলে খেলছেন পেসার দুশমন্ত চামিরা।

বাংলাদেশ একাদশ: তানজিদ তামিম, পারভেজ ইমন, নাজমুল শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মেহেদী মিরাজ, জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারি, তানজিম সাকিব, তানভীর ইসলাম, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কা একাদশ: নিশান মাদুষ্কা, পাথুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, চারিথা আশালঙ্কা, জানিথ লিয়ানাগে, দুনিথ ভেল্লালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মহেশ থিকসানা, দুশমন্ত চামিরা, আসিথা ফার্নান্দো। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উইক ট হ র য় র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে

অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।

১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’

এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।

পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।

পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ