গোপালগঞ্জে জমিজমা বিরোধের জেরে শিশুকে বেদম প্রহার
Published: 6th, July 2025 GMT
গোপালগঞ্জে জমিজমা বিরোধের জেরে আবু তালিফ মোল্যা (৮) নামে এক শিশুকে বেদম প্রহারের অভিযোগ উঠেছে। ওই শিশুকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার (৬ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের ঘ্যানাশুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিশু তালিফ বাগেরহাটের কচুয়া থানার গজালিয়া গ্রামের মো.
আরো পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনে শহীদ মেয়েদের হারিয়ে যেতে দেব না: উপদেষ্টা
পঞ্চগড়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
ওই শিশুর বাবা মো. সোহাগ মোল্লা জানান, গত সোমবার (৩০ জুন) বাগেরহাটের কচুয়া থানার গজালিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি জালালাবাদ ইউনিয়নের ঘ্যানাশুর গ্রামে আসেন। গত দুইদিন আগে একই গ্রামের বশির মোল্যার ছোট ছেলের সঙ্গে তার ছেলে তালিফের মারামারি হয়।
রবিবার সকালে নানা হাবিবার খলিফার দোকানে যায় তালিফ। পরে স্থানীয়রা তালিফকে মারাত্মক আহতাবস্থায় মধুমতি নদীর পাড়ে পরে থাকতে দেখে খবর দেন। পরিবারের সদস্যরা শিশু তালিফকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
তিনি ধারণা করছেন, তার শ্বশুর হাবিবার খলিফার সঙ্গে একই গ্রামের বশির মোল্যার জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে বশির মোল্যার ছেলে হাকিম মোল্যা (১৭) তার ছেলেকে বেদম মারধর করে মৃত ভেবে মধুমতি নদীর পাড়ে ফেলে আসতে পারে।
শিশু মা হাফজা বেগম বলেন, “আমার ছেলেকে প্রায় মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করি। আমার ছেলেকে মারধর করে গুরুতর আহত করেছে। এখন গাছ থেকে পড়ে গিয়ে আমরা ছেলে আহত হয়েছে বলে প্রতিপক্ষরা প্রচার করছে। আমি এ ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল রাজীব বলেন, “সকালে তালিফ নামের এক শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন করেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান জানান, এখন পযর্ন্ত থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/বাদল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর গ প লগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’
ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।
এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।
লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’
ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।
কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?
কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।
ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।
সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’
ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা