এই হত্যার বিচার করা হবে : উপদেষ্টা শারমিন
Published: 6th, July 2025 GMT
সমাজ কল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশীদ বলেছেন, আমার দুটি স্পষ্ট ও গভীর আগ্রহের জায়গা রয়েছে। প্রথমত, আমাদের নারী শহীদ যোদ্ধারা, যারা জাতির জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের পূর্ণ অধিকার যেন রাষ্ট্র নিশ্চিন্তভাবে নিশ্চিত করে, সেটি দেখা।
দ্বিতীয়ত, আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা যেটুকু শক্তি, রিসোর্স ও সুযোগ-সুবিধা আছে, তা কাজে লাগিয়ে শহীদ নারীদের পরিবার বিশেষত সন্তানদের পাশে থেকে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চেষ্টা করা।
রোববার (৬ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জের নয়ামাটি এলাকার শহীদ রিয়া গোপের ও দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদি এলাকার শহীদ সুমাইয়ার বাড়িতে তাদের খোঁজ খবর নেওয়ার পর তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় মেয়ের স্মৃতিচারণ উপদেষ্টাকে বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন একমাত্র সন্তান হারানো রিয়ার মা। তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের। পরে উপদেষ্টা রিয়ার মাকে নানাভাবে সান্ত্বনা দেন এবং আশ্বস্ত করেন যে, এই হত্যার বিচার করা হবে।
উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশীদ আরও বলেন, আমরা পুরো মাসটিকে ডেডিকেট করেছি এই জুলাই আন্দোলনের ওপর। যারা চলে গেছে, তাদের পরিবারের কাছে গিয়ে এটা বলা আমরা তোমাদের ভুলিনি এবং ভুলব না।
তোমরা যে আত্মত্যাগ করে গেলে, যে ক্ষতি তোমাদের হয়েছে, সেটার জন্য রাষ্ট্র সর্বোচ্চটা করবে। এ দেশের মানুষও তাদের স্মরণে রাখবে। এটা যেন আমাদের মননে থাকে, বয়ানে থাকে।
তিনি বলেন, আজ রিয়ার মায়ের কাছে আসতে পেরেছি। সব শহীদের বাড়িতে যাওয়া কঠিন। তবে এই এগারোটি মেয়ে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের এবং ১৩৫টি শিশু শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারের চোখের জল মুছে দিতে চাই।
ছোট্ট রিয়ার নামে একটি স্টেডিয়াম হয়েছে। সেখানে যখন বাচ্চারা খেলতে যাবে, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ রিয়ার নামটা থাকবে। তারা যখনই দেখবে, তখনই জিজ্ঞেস করবে, এই নাম কেন দেওয়া হলো? তখনই রিয়ার গল্পটা সবাই জানবে। স্টেডিয়ামে সুন্দর একটা কর্নার থাকবে। সেখানে আমাদের যে বাচ্চারা হারিয়ে গেছে, তাদের নামসহ একটি কর্নার থাকবে।
উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশীদ আরও বলেছেন, আমার দুটি স্পষ্ট ও গভীর আগ্রহের জায়গা রয়েছে। প্রথমত, আমাদের নারী শহীদ যোদ্ধারা, যারা জাতির জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের পূর্ণ অধিকার যেন রাষ্ট্র নিশ্চিন্তভাবে নিশ্চিত করে, সেটি দেখা।
দ্বিতীয়ত, আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা যেটুকু শক্তি, রিসোর্স ও সুযোগ-সুবিধা আছে, তা কাজে লাগিয়ে শহীদ নারীদের পরিবার বিশেষত সন্তানদের পাশে থেকে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চেষ্টা করা।
সমাজ কল্যাণ উপদেষ্টা সুমাইয়ার পরিবার ও তার মেয়ে সোয়াইবার উদ্দেশ্যে বলেন, এই শহীদ মেয়েটির পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের অন্তত এটুকু নিশ্চয়তা দেওয়া উচিত যে, এই শিশুদের শিক্ষার পথ যেন বন্ধ না হয়। তাদের নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আমরা যেন একটি সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি।
জুলাই আন্দোলনের শহীদ নারীদের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, আমার পক্ষ থেকে একটি নির্দিষ্ট চাহিদা রয়েছে- আমরা ১১ জন শহীদ নারীর ওপর একটি গবেষণামূলক সংকলন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশ করব। আমাদের মেয়েরা হারিয়ে যাবে না, এই কথাটি বারবার বলেছি, কারণ তাদের বীরত্বগাথা আছে, কিন্তু সেসব গল্প আমাদের সামনে আসে না। আমি মনে করি, সেই ইতিহাস রক্ষা করা ও তুলে ধরা আমার দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, শহীদ পরিবারের ভাতাকে কেন্দ্র করে নানা জটিলতা দেখা যায়, সেসব বিষয় আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সরকারের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একটি পরিষ্কার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। শহীদদের সন্তান এবং তাদের অভিভাবক যিনি শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তাদের যেন সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা নীতিমালা প্রণয়ন করছি এবং প্রশাসনও ন্যায্যতার সঙ্গে সেই কাজ করছে।
এসময় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ দ র পর ব র পর ব র র উপদ ষ ট আম দ র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে সুভদ্রা মহারানীর উল্টো রথযাত্রা মহোৎসব পালিত
নারায়ণগঞ্জে উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সুভদ্রা মহারানীর উল্টো শুভ রথযাত্রা মহোৎসব পালিত হয়েছে।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকেল তিনটায় রথযাত্রা মহোৎসবে উপলক্ষে বরফকল মাঠ হতে এক সুবিশাল রথে শ্রী জগন্নাথদেব, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর শোভাযাত্রা নারায়ণগঞ্জ শহরের পরিক্রমা করে মাসির বাড়ী দেওভোগ আখড়ায় প্রবেশ করে।
এদিকে উল্টো রথযাত্রা সফলে শহরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি নিজস্ব ভলান্টিয়ার এবং কর্মীবহিনী দিয়ে পূজা পরিষদের নেতৃবৃন্দ রথযাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তত্ত্বাবধান করেন।
উল্টো রথযাত্রার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন, সহ- সভাপতি তিলোত্তমা দাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক উত্তম কুমার সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে, দেওভোগ আখড়া শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ শ্রী হংসকৃষ্ণ দাস।
সভাপতিত্ব করেন শ্রীশ্রী নিতাই চৈতন্য প্রীচিং সেন্টার, গোয়ালপাড়া, নগরখানপুরের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ শ্রীকৃষ্ণকান্ত দাস, সভাপতি শ্রী মহারাজ পোদ্দার (কানাই), নি.সভাপতি রতন চন্দ্র শীল ও সা.সম্পাদক শ্রী কৃষ্ণ কেশব দাস।
উল্লেখ্য: শ্রীশ্রী হরে কৃষ্ণ নামহট্ট সংঘ (ইসকন অনুমোদিত), শ্রীশ্রী নিতাই চৈতন্য প্রীচিং সেন্টার, গোয়ালপাড়া, নগর খানপুর বিগত ৫ বৎসর যাবৎ শ্রীজগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রা মহারানীর শুভ রথযাত্রা মহোৎসব ও শোভাযাত্রা ছোট পরিসরে উদযাপন করে আসছে। শনিবার হাজার হাজার ভক্তের মহাসমারোহে শ্রীজগন্নাথ, বলদেব, সুভদ্রা মহারানী নারায়ণগঞ্জ শহর পরিক্রমা করে শ্রীশ্রী নিতাই চৈতন্য প্রীচিং সেন্টার, গোয়ালপাড়া, নগরখানপুর, নারায়ণগঞ্জ এ প্রবেশ করলে মহাভোগ ও আরতি নিবেদনের মাধ্যমে শ্রীবিগ্রহগণকে শ্রীমন্দিরে স্থাপন করা হয়।