রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য কম দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫৭ শতাংশই শতকোটি টাকার। এসব ঋণ আদায় জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে সব ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে আয়োজিত ব্যাংকার্স সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এমডিরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক পরিদর্শন করে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচার এবং হুন্ডির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দেখানো, পণ্যের ওজন বেশি দেখানো এবং শুল্ক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি এড়াতে একটি ইএক্সপির বিপরীতে একাধিক ইনভয়েসের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করা হচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশে যে মূল্য ও ওজন হিসাব করে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশে কয়েক গুণ কম মূল্য এবং বেশি ওজন দেখিয়ে পণ্য রপ্তানি করছে।

বৈঠকে আরও বলা হয়, নামমাত্র মূল্যে স্টক লটের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইনভয়েসে স্টক লটের বিষয় উল্লেখ না করেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। আবার বিদেশি ক্রেতাকে শুল্ক ফাঁকির সুবিধা দিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। অবশিষ্ট মূল্য রেমিট্যান্স হিসেবে এনে প্রণোদনা নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৭টির শতকোটি টাকা বা তার বেশি অঙ্কের খেলাপি চিহ্নিত হয়েছে। ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বড় খেলাপির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা বা মোট খেলাপি ঋণের ৫৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৯ সালে এ ধরনের খেলাপি ঋণ তদারকিতে বিশেষ সেল গঠন এবং প্রতি ত্রৈমাসিকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে এ ধরনের ঋণ তদারকির নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকালের সভা থেকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে এসব ঋণ আদায়ের কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে মামলা পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকালের বৈঠকে ব্যাংক থেকে এলসির দায় পরিশোধের পর আমদানিকারক পরিশোধ না করলে তাৎক্ষণিকভাবে ফোর্স ঋণ সৃষ্টি এবং ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার যথাযথ প্রতিফলন নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা বছরের নবম মাস ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমাসহ বিভিন্ন আলোচনা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অর থ প চ র

এছাড়াও পড়ুন:

পণ্যমূল্য কম দেখিয়ে রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচার হয়েছে

রপ্তানি করা পণ্যের মূল্য কম দেখিয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচারের তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৫৭ শতাংশই শতকোটি টাকার। এসব ঋণ আদায় জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে সব ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে আয়োজিত ব্যাংকার্স সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এমডিরা ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে জানানো হয়, বৈদেশিক মুদ্রা পরিদর্শন বিভাগ থেকে বিভিন্ন ব্যাংক পরিদর্শন করে তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচার এবং হুন্ডির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দেখানো, পণ্যের ওজন বেশি দেখানো এবং শুল্ক কর্মকর্তাদের দৃষ্টি এড়াতে একটি ইএক্সপির বিপরীতে একাধিক ইনভয়েসের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে অর্থ পাচার করা হচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশে যে মূল্য ও ওজন হিসাব করে পণ্য রপ্তানি হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্যের দেশে কয়েক গুণ কম মূল্য এবং বেশি ওজন দেখিয়ে পণ্য রপ্তানি করছে।

বৈঠকে আরও বলা হয়, নামমাত্র মূল্যে স্টক লটের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ইনভয়েসে স্টক লটের বিষয় উল্লেখ না করেও অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে। আবার বিদেশি ক্রেতাকে শুল্ক ফাঁকির সুবিধা দিতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। অবশিষ্ট মূল্য রেমিট্যান্স হিসেবে এনে প্রণোদনা নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ব্যাংকগুলোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৭টির শতকোটি টাকা বা তার বেশি অঙ্কের খেলাপি চিহ্নিত হয়েছে। ব্যাংক খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে বড় খেলাপির কাছে ব্যাংকগুলোর পাওনা ১ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা বা মোট খেলাপি ঋণের ৫৭ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৯ সালে এ ধরনের খেলাপি ঋণ তদারকিতে বিশেষ সেল গঠন এবং প্রতি ত্রৈমাসিকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে এ ধরনের ঋণ তদারকির নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকালের সভা থেকে পরিচালনা পর্ষদ থেকে এসব ঋণ আদায়ের কর্মপরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে মামলা পরিচালনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকালের বৈঠকে ব্যাংক থেকে এলসির দায় পরিশোধের পর আমদানিকারক পরিশোধ না করলে তাৎক্ষণিকভাবে ফোর্স ঋণ সৃষ্টি এবং ব্যাংকের আর্থিক অবস্থার যথাযথ প্রতিফলন নিশ্চিত করতে নিরীক্ষা বছরের নবম মাস ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন ডিসেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমাসহ বিভিন্ন আলোচনা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ