ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে সব দলের সহযোগিতা চাইলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

রবিাবর (১৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনের সংলাপের শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ সহযোগিতা চান। 

আরো পড়ুন:

দুর্নীতিতে ৩ বার চ্যাম্পিয়ন দলকে জনগণ আর ভোট দেবে না: তাহের

বর্তমানে যে অবস্থা, তাতে নির্বাচনে অসুবিধা নেই: উপদেষ্টা

সিইসি বলেন, “সবার জন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেবে কমিশন।” নির্বাচনি আচরণবিধি মেনে চলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। 

ভোটারদের কেন্দ্রে আনা ও নিরাপদ নির্বাচনি পরিবেশের জন্য দলগুলোর সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। 

ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংলাপে  প্রথম পর্বে গণফোরাম, গণফ্রন্ট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি—মোট ছয়টি দল অংশ নিয়েছে। 

ইসি জানায়, দুপুর ২টা থেকে দ্বিতীয় পর্বে জাসদ, ন্যাপ, তৃণমূল বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে মতবিনিময় হবে।

আগামীকাল সোমবার (১৭ নভেম্বর) সংলাপের তৃতীয় দিনে জামায়াতে ইসলামীসহ ১২টি দলের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লেবার পার্টি, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, কল্যাণ পার্টি ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)-এর সঙ্গে বৈঠক হবে।

এছাড়া, সোমবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সংলাপে অংশ নেবে।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু করতে অংশীজনদের মতামত ও সুপারিশ নিতে পুরো নভেম্বরজুড়েই নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ চলবে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম দিনে ১২টি দলের সঙ্গে দুই পর্বে মতবিনিময় করে কমিশন।

প্রতি দলের বক্তব্য, দাবি ও পরামর্শ নথিবদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইসির কর্মকর্তারা।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস সহয গ ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

মনে হবে প্রধান উপদেষ্টা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন, কিন্তু এর মধ্যেও দ্বিমত থাকতে পারে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া ভাষণের বিষয়ে এখনো কারও কারও দ্বিমত থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরে যাওয়ার একমাত্র বিকল্প নির্বাচন।

‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬: জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক নির্বাচনী সংলাপে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন বিএনপি মহাসচিব। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এ সংলাপের আয়োজন করে ফাউন্ডেশন ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এফএসডিএস)।

এ সময় জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ভাষণের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটা নিঃসন্দেহে অনেকেই হয়তো মনে করবেন যে, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা বক্তব্য তিনি দিয়েছেন। কিন্তু এর মধ্যেও দ্বিমত থাকতে পারে, আপনার অন্য মত থাকতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে একটা নির্বাচন দিয়ে জনগণের একটা পার্লামেন্ট (সংসদ) নির্বাচিত করা হবে। সেই পার্লামেন্টই জনগণের সমস্ত যে ইস্যুগুলো আছে, সেই ইস্যুগুলো নিয়ে আলোচনা করে সুনির্দিষ্ট একটা পথ বাতলে দিতে পারবে।’

বাংলাদেশে বারবার গণতন্ত্রের চর্চা ব্যাহত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বরাবর গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছি, লড়েছি, সংগ্রাম করেছি; কিন্তু গণতন্ত্র চর্চা করার কোনো সুযোগ পাইনি।’ পাকিস্তান আমল থেকেই গণতন্ত্রের চর্চাকে নষ্ট করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বাংলাদেশে দুর্ভাগ্যক্রমে একটা গণতান্ত্রিক শক্তি প্রথম গণতন্ত্র ধ্বংস করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘গণতন্ত্রকে কার্যকর করার জন্য আমার জানামতে একটি মাত্র পন্থা রয়েছে। সেই পদ্ধতিটি কিন্তু হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন। নির্বাচনটা যদি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ না হয়; তাহলে কিন্তু কখনো গণতন্ত্র কোনো দেশে কার্যকর হতে পারে না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সবাই একমত— নির্বাচন ছাড়া এই জাতির ক্ষতে মলম দেওয়ার আর কোনো উপায় নেই।’ সে জন্য আগামী নির্বাচনে গণরায় মেনে নেওয়ার মানসিকতা তৈরি করারও আহ্বান জানান তিনি।

নির্বাচন চেয়ে গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা

সংলাপে কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, দেশে এখন যাঁরা সংবিধানের দোহাই দিয়ে নির্বাচনের দাবি করছেন, তাঁরা দেশে গৃহযুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, সংবিধানে লেখা আছে, নির্বাচন হবে পাঁচ বছর পরে; ২০২৪–এর পরের নির্বাচন ২০২৯ সালে।

কোন সাংবিধানিক যুক্তির ভিত্তি থেকে নির্বাচন চাওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্নও তোলেন ফরহাদ মজহার। দেশের প্রচলিত আইন মানার বাধ্যবাধকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যদি আপনারা মনে করেন ঠিক আছে উপদেষ্টার সরকার (অন্তর্বর্তী সরকার) শেখ হাসিনার সংবিধান মেনেছে, তাহলে ২০২৯ সালের নির্বাচন আপনাকে মেনে নিতে হবে।’

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা মনে করি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্পষ্ট করে ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশ কোনো দেশের কাছে এবং বিশেষভাবে ভারতের যে কর্তৃত্ব আছে বাংলাদেশের ওপরে, সার্বভৌমত্বের ওপরে; এটা কোনোভাবেই আর গ্রহণ করবে না।’ সে জন্য নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এবং জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দেন তিনি।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো বিপদে থাকলে ঐক্যবদ্ধ হয় উল্লেখ করে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আজকের এই মিটিং থেকে আমি প্রস্তাব করব একটা প্রস্তাব দেওয়ার জন্য যে আমরা কোনো রাজনৈতিক দল কারও ব্যাপারে হেট স্পিচ দেব না (ঘৃণা ছড়াব না)।’

‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬: জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক নির্বাচনী সংলাপে আলোচকেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোঁজামিলের গণভোট অগ্রহণযোগ্য: বাংলাদেশ জাসদ
  • মনে হবে প্রধান উপদেষ্টা গ্রহণযোগ্য বক্তব্য দিয়েছেন, কিন্তু এর মধ্যেও দ্বিমত থাকতে পারে
  • প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য সমাধান: এবি পার্টি