Prothomalo:
2025-07-09@09:32:47 GMT

প্রয়োজন সর্বাত্মক অভিযান

Published: 9th, July 2025 GMT

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সেনাসদস্যরাও নিয়োজিত আছেন। উদ্বেগের বিষয় হলো এত সব বাহিনী মোতায়েন সত্ত্বেও সরকার কোনোভাবে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। সাম্প্রতিক কালে খুন, ধর্ষণ, নারী নিগ্রহ ও সংঘবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা বেড়ে যাচ্ছে।

অনেক অপরাধের সঙ্গে পলাতক বন্দীদের জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না, যেখানে তাদের মধ্যে জঙ্গি ও পেশাদার সন্ত্রাসীদের সংখ্যা অনেক। প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে ও পরে দেশের কয়েকটি কারাগারে বিশৃঙ্খল অবস্থা সৃষ্টি হয়। এ সময় দেশের পাঁচ কারাগারে চরম বিশৃঙ্খলা ও বিদ্রোহ করে ২ হাজার ২৪০ বন্দী পালিয়ে যান। হামলাকারীরা কারাগার থেকে ৯৪টি শটগান ও চায়নিজ রাইফেল লুট করেন। এগুলো হলো কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগার, নরসিংদী জেলা কারাগার, সাতক্ষীরা জেলা কারাগার, কুষ্টিয়া জেলা কারাগার ও শেরপুর জেলা কারাগার। উল্লেখ্য, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় হাইসিকিউরিটি কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ছয় বন্দী মারা যান।

অন্যদিকে কারাগারে আটক চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের কেউ কেউ রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে জামিনে বেরিয়ে গেছেন বলেও জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পেছনে জেলপলাতক বন্দীদের ভূমিকা আছে, এটা হলফ করে বলা যায়। কিন্তু সরকার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলে মনে হয় না। যখন কোনো দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা দেশে জঙ্গি নেই বলে আওয়াজ দেন, তখন চরমপন্থীরা আরও উৎসাহিত হয়। জামিন পাওয়া শীর্ষ সন্ত্রাসীদের জামিন বাতিলের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরুর কথাও বলেছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। কিন্তু শীর্ষ সন্ত্রাসী কারও জামিন বাতিল হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জেলপলাতক আসামিদের খুঁজে বের করার বিষয়ে সর্বাত্মক অভিযানের কথা বললেও তেমন সফলতা দেখাতে পারেননি। দায়িত্ব নেওয়ার ১১ মাস পরও ৭ শতাধিক পলাতক বন্দীকে পাকড়াও করতে না পারা সরকারের বড় ব্যর্থতা বলেই মনে করি।

অপরাধবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মতে, পলাতক বন্দীদের স্থায়ী বা বর্তমান ঠিকানা ধরে তল্লাশি চালালে সফলতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। এসব বন্দী দূরবর্তী এলাকায় আত্মগোপন করে থাকার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে দেশের প্রতিটি এলাকায় অভিযান চালাতে হবে, সেখানে নতুন আসা ব্যক্তিদের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে হবে। তবে কাজটি শুধু থানা–পুলিশ দিয়ে হবে না। তঁারা কজনকে চেনেন? নজরদারিতে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় নাগরিকদের সম্পৃক্ত করতে পারলে সুফল পাওয়া যাবে আশা করা যায়।

গত বছর ডিসেম্বরের শুরুতেও পলাতক আসামি নিয়ে প্রথম আলোয় প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময়ে যাঁরা পলাতক বন্দী ছিলেন, তাঁদের খুব কমই ধরা পড়েছেন। তাহলে এই ছয় মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী করল? জেলপলাতক বন্দীদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যে বিদেশে চলে গেছেন, তাঁদের ফেরত আনা সহজ হবে না। কিন্তু দেশের ভেতরে আত্মগোপনে থাকা বন্দীদের খুঁজে বের করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়।

আমরা আশা করব, বিলম্বে হলেও সরকারের চৈতন্যোদয় হবে এবং জেলপলাতক বন্দীদের আটক ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে সর্বাত্মক অভিযান চালাবে। জেলপলাতক সাত শতাধিক বন্দীকে ‘মুক্ত’ রেখে দেশে অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের আশা দুরাশাই বটে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক বন দ দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফের অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলি, অপহৃত একজনকে উদ্ধার

কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ের আস্তানায় ডাকাত ও অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অপহরণের শিকার এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও মাদক জব্দ করেছে যৌথ বাহিনী।

আজ রোববার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশীদ তানভীর। তিনি জানান, অপহরণকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. সোহেল (২০)। তিনি টেকনাফ পৌরসভার নতুন পল্লান পাড়ার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।

লে. কমান্ডার সালাহউদ্দিন রশীদ তানভীর বলেন, গতকাল শনিবার মধ্যরাতে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমোরা–সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ অবস্থান করছে এমন সংবাদ পায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে কোস্টগার্ড ও পুলিশের একটি যৌথ দল সেখানে অভিযান চালায়। এতে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে অতর্কিতে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়েন। গোলাগুলির একপর্যায়ে দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে গহিন পাহাড়ের দিকে পালিয়ে যায়।

পরে দুর্বৃত্তদের গোপন আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে ১টি জি-৩ রাইফেল, ২টি বিদেশি পিস্তল, ৩টি দেশে তৈরি বন্দুক, ৩ হাজার ১০০টি রাইফেলের গুলি, ১৪টি পিস্তলের গুলি, ১ কেজি আইস মাদক (ক্রিস্টাল মেথ) ও ৪ লিটার দেশি মদ উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুর্বৃত্ত চক্রের হাতে জিম্মি থাকা একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা অস্ত্র ও মাদক টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশাল-ভোলা সড়ক অবরোধ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের
  • দশ মাসে ২৬ খুনের ২২টির তদন্ত শেষ, গ্রেপ্তার ৮৪
  • মামলা ডিবিতে, ৮ আসামির রিমান্ড চেয়ে আবেদন
  • আইনশৃঙ্খলার রাজনৈতিক আমলনামা
  • আগামী নির্বাচনে পুলিশ ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ দেখছেন সিইসি
  • প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, বাদী নিরাপত্তাহীন
  • ‘মবের’ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত কঠোর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • টেকনাফে যৌথবাহিনীর সঙ্গে ডাকাত-অপহরণকারীদের গোলাগুলি, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার
  • টেকনাফের অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলি, অপহৃত একজনকে উদ্ধার