দুর্দান্ত এই থ্রিলার আপনাকে নাড়িয়ে দেবে
Published: 10th, July 2025 GMT
বিষণ্ন সুন্দর। নতুন এই ব্রিটিশ সিরিজকে এককথায় বোঝাতে এর চেয়ে উপযুক্ত শব্দবন্ধ পাওয়া মুশকিল। ফি সপ্তাহে ওটিটিতে আসা এন্তার ক্রাইম-থ্রিলারের মতো ঝাঁ-চকচকে ব্যাপার নেই, দর্শককে বুঁদ রাখতে অপ্রয়োজনীয় চমক নেই, শটস আর রিলসপ্রেমীদের কথা ভেবে ছোট ছোট সেট পিস আর হাজারো জাম্প কাটে ত্যক্তবিরক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। নির্মাতার যেন কোনো তাড়াহুড়াই নেই। তিনি যেন আপনাকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন, ধূসর এক দুনিয়ায় ঢুকে পড়ার। যে দুনিয়া বড্ড ধীর, চরিত্ররা মেজাজে শান্ত। নিষ্ঠুর অপরাধ, চতুর অপরাধী সবই আছে, কিন্তু সেগুলো আপনার সামনে হাজির করা হয়েছে আলাদা গ্ল্যামার ছাড়াই।
একনজরেসিরিজ: ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’
ধরন: ক্রাইম-থ্রিলার
স্টিমিং: নেটফ্লিক্স
ক্রিয়েটর: স্কট ফ্র্যাঙ্ক ও চাঁদনি লাখনানি
অভিনয়ে: ম্যাথিউ গুড, জেমি সিভস, কেটি ডিকি, অ্যালেক্স মানভেলভ, লিয়া বায়ার্ন, ক্লোয়ে পেরি
পর্ব সংখ্যা: ৯
রানটাইম: ৪২-৭১ মিনিট
‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’ সিরিজটি প্রখ্যাত ড্যানিশ ক্রাইম-থ্রিলার লেখক ইউসি অ্যালডার-ওলসেনের বহুল পঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’ সিরিজ থেকে নির্মিত হয়েছে। ‘নর্ডিক নোয়া’ উপন্যাস সিরিজটি থেকে ডেনমার্কে ছয়টি সিনেমা হয়েছে। প্রথম তিনটি ছাড়া বাকিগুলো ঠিক পাতে দেওয়ার মতো নয়। তবে এবারই প্রথম ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’ থেকে তৈরি হলো সিরিজ। গত ২৯ মে নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে একই নামের সিরিজটির প্রথম মৌসুম। ‘নর্ডিক নোয়া’র গন্ধের সঙ্গে সিরিজটির ক্রিয়েটর স্কট ফ্র্যাঙ্ক আর চাঁদনি লাখনানি জুড়ে দিয়েছেন ব্রিটিশ হাস্যরস; সব মিলিয়ে ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’ হয়ে উঠেছে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করার মতো এক সিরিজ।
অনেকেরই হয়তো মনে নেই ২০০৭ সালের সিরিজ ‘দ্য লুকআউট’-এর কথা। ওটিটির এই রমরমার আগেই বুদ্ধিদীপ্ত সিরিজটি বানিয়ে আলোচনায় আসেন স্কট ফ্র্যাঙ্ক। সেই সিরিজের প্রাণভোমরা ছিলেন ম্যাথিউ গুড; সিরিজে তাঁর করা চরিত্রটি এখনো মনে রেখেছেন অনেক ভক্ত। প্রায় ১৮ বছর পর ফ্র্যাঙ্ক ও গুড আবার একসঙ্গে কাজ করলেন ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’ সিরিজে; তাঁদের প্রত্যাবর্তন যে মনে রাখার মতো হলো, বলাই বাহুল্য। স্কট ফ্র্যাঙ্ক এর আগে ‘গডলেস’, ‘দ্য কুইনস গ্যাম্বিট’-এর জন্য আলোচিত ছিলেন, এবার তাঁর নামের সঙ্গে যুক্ত হলো ‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’-এর নামও।
আরও পড়ুনসাইফ, এই সিনেমা আপনি কেন করলেন৩০ মে ২০২৫সিরিজের শুরুটাই হয় হত্যাকাণ্ড দিয়ে। এক ক্রাইম সিনে গিয়ে আক্রমণের শিকার হন ডিটেকটিভ চিফ ইন্সপেক্টর কার্ল মর্ক (ম্যাথিউ গুড) আর টিম। আততায়ীর গুলিতে এক পুলিশ সদস্য মারা যান, কার্লের সহকারী জেমস (জেমি সিভস) পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। কার্লের নিজেরও গলায় গুলি লাগে। অস্ত্রোপচার শেষে তিনি কাজে ফেরেন। তবে এই ঘটনা তাঁকে ভেতর থেকে নাড়িয়ে দেয়। এক সহকর্মীর মৃত্যু আর প্রিয় সহকারী জেমির এই অবস্থার জন্য নিজেকেই দায়ী করেন কার্ল।
‘ডিপার্টমেন্ট কিউ’–এর দৃশ্য। নেটফ্লিক্স.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড প র টম ন ট ক উ স র জট
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি