রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) সামনে চাঁদা না দেওয়ায় সোহাগ নামে এক ভাঙাড়ি ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি)।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে ফিরে এলে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় দেশব্যাপী চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের ‘চাঁদাবাজের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘রক্তে ভেজা আমার ভাই, খুনি তোমার রেহাই নাই’, ‘এক-দুই-তিন-চার, চাঁদাবাজ দেশছাড়’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে রাতের ক্যাম্পাস।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-রাবির সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো.
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন-রাবির সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আমরা কোনোভাবে কাউকে আওয়ামী লীগ হয়ে উঠতে দেব না। সেটা বিএনপি, জামায়াত কিংবা অন্য রাজনৈতিক দল হোক।’
ইবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
একই ঘটনার জেরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভে অংশ নেন। তারা ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘চাঁদাবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, চাঁদাবাজের বিচার চাই’, ‘ওয়ান-টু-থ্রি-ফোর, চাঁদাবাজ নো মোর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
মিছিল-পরবর্তী সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে একজন নাগরিককে চাঁদা না দেওয়ার অজুহাতে পাথর নিক্ষেপ করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কারা করেছে– সেটা জাতির কাছে স্পষ্ট। তারা লাশের ওপর দাঁড়িয়ে নৃত্য করেছে। চব্বিশ-উত্তর স্বাধীন বাংলাদেশে চাঁদাবাজি কায়েম করা জাতি কখনও মেনে নেবে না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজি দেখার জন্য আমরা আন্দোলন করি নাই। আবু সাঈদরা এমন বাংলাদেশের জন্য রক্ত দেয় নাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, আপনাদের মেরুদণ্ড সোজা করুন। মানুষ মারার বিচার করতে না পারলে ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই। অপরাধী যে দলেরই হোক, তার সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিত করুন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত
সম্প্রতি দেশে পাথর মেরে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, লাগামহীন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা।
শনিবার বাদ ডি আই টি মসজিদ সংলগ্ন সড়কে এ বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ মিছিল পূর্ববর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগর এর সভাপতি মাওলানা রবিউল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা.আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ হাসান।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ এবং ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রশিদ।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ৫ই আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দল বেপরোয়াভাবে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর কারণে সারা দেশের ব্যবসায়ী সমাজ ও জনগণ আজ আতঙ্কিত।
খুন, ধর্ষন, চাঁদাবাজি সবই এমনভাবে বেড়ে গেছে যেনো বিগত ১৬ বছরেরই প্রতিচ্ছবি বলে মনে হচ্ছে। সর্বশেষ পুরান ঢাকায় একজন ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে চাঁদার জন্য ইট নিক্ষেপ করে হত্যা এবং লাশের উপর দাঁড়িয়ে খুনিদের পৈশাচিক উল্লাস যেনো বর্বরতার প্রতীক হয়ে দাড়িয়েছে ।
দিনে দুপুরে, প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি করলেও এদেরকে প্রশাসন সমূলে উৎখাত করছে না। আগে এর দিনের পর দিন আরো বেপরোয়া হচ্ছে। তাই এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন এবং জনগণের পক্ষ থেকে একযোগে প্রতিরোধ করতে হবে।
অতি অল্পতেই নব্য চাঁদাবাজদের দল যদি সংশোধন না হয় তাহলে জনগণ পুনরায় বিপ্লবের মাধ্যমে এদেশের নব্য চাঁদাবাজদের শায়েস্তা করতে দ্বিতীয়বার ভাববে না।
বক্তারা অবিলম্বে বর্বরোচিত হত্যার বিচার, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস নির্মূলের দাবি জানান এবং ইসলামী আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের আহ্বান জানান।