কখনো চোর, কখনো পকেটমার! তিন বছর নিজের গ্রামে যাননি নওয়াজ
Published: 16th, November 2025 GMT
অনলাইন/// কখনো চোর, কখনো পকেটমার! তিন বছর নিজের গ্রামে যাননি নওয়াজ
কখনো চোর, কখনো পকেটমার! তিন বছর নিজের গ্রামে যাননি নওয়াজ
বিনোদন ডেস্ক
ভারতীয় সিনেমার এই সময়ের অন্যতম আলোচিত অভিনেতা হিসেবে পরিচিত নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকি। ক্যারিয়ারের শুরুতে যিনি ‘সারফারোশ’ ও ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’-এর মতো সিনেমায় ব্যাকগ্রাউন্ড চরিত্রে অভিনয় করতেন, তিনিই এখন সময়ের প্রভাবশালী অভিনেতা। তবে এ অবস্থানে আসতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়েছে নওয়াজকে। সম্প্রতি এই অভিনেতা এসেছিলেন রাজ শামানির পডকাস্টে। সেখানেই কথা বলেছেন ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবনের নানা ঘটনা নিয়ে।
বলিউডে প্রাথমিক সংগ্রাম
রাজ শামানির সঙ্গে সম্প্রতি কথোপকথনে নওয়াজউদ্দিন তাঁর প্রাথমিক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘শুরুর সময় এমন চরিত্রে অভিনয় করতাম, যেখানে আমি মার খাচ্ছিলাম। আমার প্রথম সিনেমা “সারফারোশ”-এ আমি মার খাচ্ছিলাম। তারপর “মুন্না ভাই এমবিবিএস”-এও একই। কখনো আমি চোর, কখনো পকেটমার। আমার গ্রামের মানুষেরা যখন এই সিনেমাগুলো দেখত, তারা বাবার কাছে বলত, “আপনার ছেলে সব সময় সিনেমায় মার খাচ্ছে।” প্রতিবছর একই কথা, আর আমার বাবা খুবই চিন্তিত ছিলেন।’
বাবার প্রতিক্রিয়া ও গ্রামের নিষেধাজ্ঞা
ক্যারিয়ারের এক কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করে নওয়াজউদ্দিন বলেন, ‘একদিন বাবা আমাকে ডেকে বললেন, “তুমি এসব সিনেমায় কী করছ?” আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কী বোঝাচ্ছেন। তিনি বললেন, “সবাই বলছে, তোমার ছেলে এই সিনেমায় মার খাচ্ছে। কেন এসব চরিত্র নাও?” আমি বললাম, আমার আর কোনো সুযোগ নেই, আমি চেষ্টা করছি। তখন তিনি বললেন, “তাহলে মার খেয়ে এখানে এসো না।” শুনে আমি খুব কষ্ট পেলাম, তিন বছর আমার গ্রামে যাইনি।’
‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’ দিয়ে আলোচনায়
নওয়াজউদ্দিন ক্যারিয়ারের বাঁকবদলের মুহূর্ত হিসেবে অনুরাগ কাশ্যপের ‘গ্যাংস অব ওয়াসেপুর’-এর কথা স্মরণ করলেন, যা তাঁকে পরিচিত মুখ বানিয়েছিল। তিনি এখানে এক গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সিনেমা মুক্তির পর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রামে ফিরে যান। ‘আমি বাবার কাছে গিয়ে বললাম, আপনি কী মনে করেন? তিনি বললেন,“হ্যাঁ, এবার তুমি ভালো কাজ করেছ।”’
নওয়াজউদ্দিনের সাফল্যে মায়ের গর্ব
একই সাক্ষাৎকারে মায়ের কথাও বলেন নওয়াজউদ্দিন। সালমান খানের ‘কিক’-এ তাঁকে দেখার পর মায়ের প্রতিক্রিয়া স্মরণ করে বলেন, ‘ছবির একটি দৃশ্যে আমি টাকার ওপর বসে ছিলাম। মায়ের দেখার পর আমি জানতে চেয়েছিলাম, কেমন লাগল? তিনি বললেন, “ভালো সিনেমা, তোমার চরিত্রও ভালো লেগেছে।” আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সবচেয়ে ভালো কোনটা লাগল। তিনি বললেন, “যখন তুমি হাজার হাজার নোটের ওপর বসে ছিলে, সেই দৃশ্য সত্যিই ভালো লেগেছে।”’
সাম্প্রতিক কাজ
নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিকে ২০২৫ সালে সর্বশেষ ‘থামা’ সিনেমায় দেখা গেছে, যেখানে তিনি ‘যক্ষসান’-এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আদিত্য সারপোতদারের পরিচালিত সিনেমায় আরও দেখা গেছে আয়ুষ্মান খুরানা, রাশমিকা ও পারেশ রাওয়ালকে।
হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে
বাবার প্রতিক্রিয়া ও গ্রামের নিষেধাজ্ঞা
ক্যারিয়ারের এক কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করে নওয়াজউদ্দিন বলেন, ‘একদিন বাবা আমাকে ডেকে বললেন, “তুমি এসব সিনেমায় কী করছ?” আমি জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কী বোঝাচ্ছেন। তিনি বললেন, “সবাই বলছে, তোমার ছেলে এই সিনেমায় মার খাচ্ছে। কেন এসব চরিত্র নাও?” আমি বললাম, আমার আর কোনো সুযোগ নেই, আমি চেষ্টা করছি। তখন তিনি বললেন, “তাহলে মার খেয়ে এখানে এসো না।” শুনে আমি খুব কষ্ট পেলাম, তিন বছর আমার গ্রামে যাইনি।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত ন বছর জউদ দ ন চর ত র বলল ন নওয় জ
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী তিনমাস দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ: অর্থ উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যায়নি, বরং পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামী তিন মাস দেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগস্ট মাসে অর্থনৈতিক অবস্থা কঠিন ছিল, কিন্তু আমরা ভেতরের অবস্থা জানি। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ বেড়েছে, এক্সপোর্টও বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব হলো, অর্থনৈতিক কাঠামোটি সুসংহত করা, যাতে আগামী সরকার দায়িত্ব নিয়ে এটিকে আরও উন্নত করতে পারে।’’
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত নগদ-ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নগদ পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান কায়সার আহমেদ চৌধুরী, গেস্ট অব অনার হিসেবে নগদ লিমিটেডের প্রশাসক মো. মোতাছিম বিল্লাহসহ নগদ পরিচালনা বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, সাংবাদিক এবং দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণীজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘যদি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব না নিত, তবে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত। বর্তমানে মুদ্রাস্ফীতি ১৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশে নেমে এসেছে এবং এটি আরও কমবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সাংবাদিকরা ‘জনগণের কণ্ঠ’। দেশের চলমান ক্রান্তিকালে সঠিক তথ্য সরবরাহ করে জনগণের পাশে থাকা সাংবাদিকদের জন্য জরুরি। যারা প্রতিবেদন দাখিল করেছেন, তাদের কাজগুলো দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বিশ্ব প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত মূল্যবান। সাংবাদিকরা তাৎক্ষণিক সমস্যাগুলো তুলে ধরলে দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হয়।’’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের কাছে অনুরোধ, আপনারা সমালোচনার পাশাপাশি সরকারের ভালো কাজের দিকগুলোও তুলে ধরবেন এবং গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে সরকারকে আরও সুশৃঙ্খল ও জবাবদিহিমূলক কাজ করতে সহায়তা করবেন, যাতে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় ক্ষেত্রেই দ্রুত এগিয়ে যায়।’’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। বক্তব্য রাখেন বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড জুরি বোর্ড চেয়ারম্যান ও সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ।
আবু সালেহ আকন বলেন, ডিআরইউ বেস্ট রিপোর্টিং এ্যাওয়ার্ডে স্পন্সর করায় নগদকে ধন্যবাদ। আজকে যারা ডিআরইউ বেস্ট রিপোটিং এ্যাওয়ার্ড পেয়েছে তাদের অভিনন্দন আর যারা পাননি তারা ভবিষ্যতে পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, ‘‘আজকের এই অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান ডিআরইউর বার্ষিক কর্মকাণ্ডের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পেশাদার সাংবাদিকতায় নিষ্ঠা, দক্ষতা ও দায়িত্ববোধকে সম্মান জানাতে ডিআরইউ প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা রিপোর্টিং পুরস্কার প্রদান করে আসছে। এটি শুধু স্বীকৃতি নয়, দেশের সাংবাদিকতার গতিপথকে ইতিবাচক ও শক্তিশালী করার একটি ধারাবাহিক প্রচেষ্টা।’’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) এ বছর ২৪টি ক্যাটাগরিতে ২৭ জনকে বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেছে। অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ ও ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
পুরস্কার পেলেন যারা
মৌসুমী ইসলাম (দ্য ডেইলি সান), মো. শওকত আলী (দৈনিক দেশ রূপান্তর), সালাহ উদ্দিন জসিম (জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম), সাজ্জাদুর রহমান (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), রফিকুল ইসলাম (দ্য ডেইলি সান), এমএ নোমান (দৈনিক আমার দেশ), জিয়াদুল ইসলাম (দৈনিক আমাদের সময়), মো. শাখাওয়াত প্রিন্স (দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড), মো. শরিফুল ইসলাম (দ্য ডেইলি স্টার), দীপন নন্দী (দ্য ডেইলি স্টার), হারুন আর রশিদ (দৈনিক কালবেলা), মো. আবু সালেহ রনি (দৈনিক সমকাল), মো. রাহেনুর ইসলাম (সকালসন্ধ্যা ডটকম), মো. জসীম উদ্দীন (ঢাকা পোস্ট ডটকম), এহসানুল হক জসীম (দ্য ডেইলি সান), মো. হেলিমুল আলম (দ্য ডেইলি স্টার), শামসুল হক মোহাম্মদ মিরাজ (দৈনিক কালের কণ্ঠ), শাহ মো. রাশেদুর রহমান (ডিবিসি নিউজ), আবু জাহেদ মুহম্মদ সেলিম (মাছরাঙা টেলিভিশন), আলমগীর হোসেন (যমুনা টেলিভিশন), রাজিব ঘোষ (ডিবিসি নিউজ), মো. ইমদাদুল হক (চ্যানেল টোয়েন্টিফোর), মো: ইউসুফ আলী (ডিবিসি নিউজ), সুশান্ত সিনহা (একাত্তর টেলিভিশন), শাহনাজ শারমীন (একাত্তর টেলিভিশন), মেহ্দী আজাদ মাসুম (বৈশাখী টেলিভিশন) এবং হাসান আরিফ (দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ)।
ঢাকা/এনটি//