দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতির কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করে জাতীয় পার্টি (রওশন)। এ জন্য এখনই সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার পূর্ণ প্রয়োগ চেয়েছে দলটি।

এ ছাড়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা, নৈরাজ্য, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, খুন, দখলবাজিসহ ধারাবাহিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবি করেছে জাতীয় পার্টি।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান জাতীয় পার্টির (রওশন) মহাসচিব কাজী মো.

মামুনুর রশিদ। আজ রোববার সকালে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিষয়গুলো তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে কাজী মো. মামুনুর রশিদ বলেন, সম্প্রতি পুরান ঢাকায় সংঘটিত নারকীয় হত্যাকাণ্ডসহ দেশব্যাপী অব্যাহত হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, খুন, দখলবাজিসহ ধারাবাহিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জাতি চরম আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তায় তটস্থ। মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। কোথাও জানমালের নিরাপত্তা নেই। দেশ এক চরম পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

জাতীয় পার্টি মনে করে, দেশের বিরাজমান সংকট নিরসনে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চরম সিদ্ধান্তহীনতা ও উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

দলের মহাসচিব বলেন, এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, ছাত্র ও সাধারণ ছাত্র-জনতা তথা গোটা জাতির ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে দেশি-বিদেশি শক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেন মামুনুর রশিদ। একই সঙ্গে এসব অপশক্তি দেশের অর্থনীতির চাকা থামিয়ে দিতে এবং শান্তিরক্ষী বাহিনী হিসেবে আন্তর্জাতিক সুনাম অর্জনকারী দেশের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।

এই অপশক্তি কারা—এমন প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির এই নেতা বলেন, স্বাধীনতার পরও দেশি-বিদেশি চক্রান্তের কারণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পুরো পরিবারকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালে ঘুমন্ত অবস্থায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে এই বিদেশি শক্তি বাংলাদেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। এই চক্রান্তকারীরাই নব্বইয়ের তথাকথিত গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পল্লিবন্ধু এরশাদকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। এখনো নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এদের চক্রান্তের কারণে দেশের পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপকে দেশের অর্থনীতির জন্য অশনিসংকেত বলে উল্লেখ করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব। একই সঙ্গে তিনি গত ১১ মাসে দেশে কোনো বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি বলে দাবি করেন।

তবে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে সাংবাদিকেরা উল্লেখ করলে মামুনুর রশিদ বলেন, এই তথ্য সঠিক নয়। এটা বিনিয়োগ নয়, প্রবাসী রেমিট্যান্স।

রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগ এক নয়—এমন তথ্য উল্লেখ করলে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘আমরাও খোঁজখবর নিয়েছি। ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এই ডেটা (তথ্য) যাচাই করে এই প্রশ্নের উত্তর দেব।’

সংবাদ সম্মেলনে দ্রুত দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের মাধ্যমে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থা থেকে উদ্ধারে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ সময় কাজী মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘দেশবাসী আজ আপনার দিকেই তাকিয়ে আছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুর রহমান, খন্দকার মনিরুজ্জামান, সৈয়দ ওয়াহেদুল ইসলাম, হাফসা সুলতানা প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স থ ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের