কেন কিনবেন প্রাইজবন্ড, আছে কত পুরস্কার
Published: 23rd, July 2025 GMT
১০০ টাকার বিনিময়ে ৬ লাখ টাকার স্বপ্ন—কথাটি শুনলে মনে হতে পারে কোনো লটারি কোম্পানির বিজ্ঞাপন। তবে বিষয়টি আদতে তা নয়; বরং এটি বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত সঞ্চয়পদ্ধতি বা প্রাইজবন্ড। প্রাইজবন্ড হলো বাংলাদেশের সরকার প্রবর্তিত এক ধরনের কাগুজে মুদ্রাপদ্ধতি। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম প্রাইজবন্ড চালু করা হয়।
প্রাইজবন্ড নাম শুনলেই ভেসে ওঠে ছোট কাগজের ছবি, যে কাগজ বছরের পর বছর আলমারির ভেতর পড়ে থাকে। এমনও হয়, এই কাগজ কখনো খুলে দেখা হয় না।
কিন্তু যারা মাঝেমধ্যে এই কাগজ নেড়েচেড়ে দেখেন বা বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইট ঘাঁটেন, তাঁরা জানেন, এই কাগজের মাহাত্ম্য কী। তিন মাস অন্তর প্রাইজবন্ডের যে ড্র অনুষ্ঠিত হয়, তাতে অনেকেই পুরস্কার পেয়ে যান। পুরস্কারের সংখ্যা কম নয়। সর্বশেষ ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রাইজবন্ডের ড্রতে ৩ হাজার ৭৭২টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ফলে পাঠক ভাবতেই পারেন, তিন মাস অন্তর যে ড্র অনুষ্ঠিত হয়, তাতে কারও ভাগ্যে কিছু লেগে যেতে পারে।
বছরে চারবার প্রাইজবন্ডের লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। এই ড্রয়ের তারিখ নির্ধারিত আছে। সেগুলো হচ্ছে ৩১ জানুয়ারি, ৩০ এপ্রিল, ৩১ জুলাই ও ৩১ অক্টোবর। ড্রর ফলাফল জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ে এই লিংকে (https://prizebond.
প্রাইজবন্ড লটারির মতো হলেও ঠিক লটারি নয়। লটারির ক্ষেত্রে একবার ‘ড্র’ হয়ে গেলে তার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। এ ছাড়া টিকেটের মূল্যও থাকে না। লটারিতে জয়ী না হলে পুরো টাকাই শেষ। কিন্তু প্রাইজবন্ডের ‘ড্র’ হয়ে যাওয়ার পরও মেয়াদ শেষ হয় না। পরবর্তী ‘ড্র’–এর সময়ও মেয়াদ থাকে। অর্থাৎ প্রাইজবন্ডের মেয়াদ শেষ হয় না। প্রাইজবন্ডের ‘ড্র’ কয়েকবার হয়ে যাওয়ার তা ভাঙানো যায়। তবে প্রাইজবন্ডের গ্রাহক সুদ বা লভ্যাংশ পাবেন না। মূলত প্রাইজবন্ড বিক্রি করে সরকার সরাসরি জনগণের কাছ থেকে ঋণ নেয় এবং তা কিনে সরকার সেই ঋণ পরিশোধ করে।
একব সময় সামাজিক অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে প্রাইজবন্ডের বহুল ব্যবহার ছিল। সরাসরি নগদ অর্থ উপহার হিসেবে দেওয়া অনেক ক্ষেত্রেই স্বস্তিকর নয়। তেমন পরিস্থিতিতে উপহার হিসেবে প্রাইজবন্ড কার্যকর সমাধান। বিয়ের সময় উপহার হিসেবে প্রাইজবন্ড যথাযথ। নব বিবাহিত দম্পতি চাইলে প্রাইজবন্ড ভাঙাতে পারেন। আবার চাইলে দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করে লটারি বা ড্রতে নিজের ভাগ্য যাচাই করতে পারেন। অর্থাৎ প্রাইজবন্ড থাকলে এক ধরনের স্বাধীনতা থাকে। বিয়ের পাশাপাশি জন্মদিন, মুখে ভাত ও খৎনার মতো উপলক্ষে প্রাইজবন্ড দেওয়া যায়।
কোথা থেকে কিনবেন ও ভাঙাবেনবাংলাদেশ ব্যাংকের সকল অফিস (ময়মনসিংহ অফিস ব্যতীত); শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ছাড়া সকল তফসিলি ব্যাংক; জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের অধীনস্থ সকল সঞ্চয় ব্যুরো অফিস ও ডাকঘর থেকে প্রাইজবন্ড কেনা ও ভাঙানো যায়। ক্রেতা সরাসরি এসব কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে নগদ অর্থের বিনিময়ে এই বন্ড কিনতে পারেন। আবদেন করার প্রয়োজনীয়তা নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের যে কোন অফিসে (ময়মনসিংহ অফিস ব্যতীত) অথবা শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংক ব্যতীত যেকোন তফসিলী বা যে কোন শাখায় অথবা যে কোনো সঞ্চয় ব্যুরো অফিস অথবা যে কোনো পোস্ট অফিসে বিজয়ী মূলবন্ড সহ নির্ধারিত (ফরম পিবি-২৩) ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে পুরস্কারের অর্থ দাবি করা যায়। পুরস্কার দাবির তারিখ হতে সাধারণত দুই মাসের মধ্যে পুরস্কারের অর্থ পাওয়া যায়। প্রাপকের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে পুরস্কারের অর্থ জমা হয়ে যায়। এ ছাড়া এসব কার্যালয় থেকে বন্ড ভাঙানো যায়।
কতগুলো পুরস্কারপুরস্কারের ঘোষণার সময় বলা হয়, মোট পাঁচটি পুরস্কারের জন্য প্রতিটি সিরিজ থেকে কতগুলো পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রথম পুরস্কার ৬ লাখ টাকার জন্য ড্রতে একটি নাম্বার বাছাই করা হয়; কিন্তু বলে দেওয়া হয়, প্রতিটি সিরিজ থেকে একটি করে পুরস্কার দেওয়া হবে। ধরা যাক, প্রথম পুরস্কার ছয় লাখ টাকার জন্য ০২৬৪২৪৫ নম্বরটি ড্রতে নির্বাচিত হয়েছে; ৮২টি সিরিজের প্রতিটিতে এই নাম্বারের প্রাইজবন্ড আছে। ফলে প্রথম পুরস্কার পাবেন মোট ৮২ জন। একইভাবে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার দ্বিতীয় পুরস্কার পাবেন ৮২ জন; এক লাখ টাকার তৃতীয় পুরস্কার পাবেন প্রতিটি সিরিজের জন্য দুটি করে মোট ১৬৪ জন; ৫০ হাজার টাকার চতুর্থ পুরস্কার পাবেন প্রতিটি সিরিজের জন্য দুজন করে মোট ১৬৪ জন; ১০ হাজার টাকার পঞ্চম পুরস্কার পাবেন প্রতিটি সিরিজের জন্য ৪০টি করে মোট ৩ হাজার ২৮০ জন। সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৭৭২টি পুরস্কার।
প্রাইজবন্ডের পুরস্কারের অর্থে আয়কর আছে। আয়কর আইন ২০২৩-এর ১১৮ ধারার নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রাইজবন্ড পুরস্কারের অর্থ থেকে ২০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ক র প ব ন উপহ র হ স ব প রস ক র দ প রথম প র অন ষ ঠ ত শ ষ হয় ক নব ন র জন য র সময় সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স
রাজধানী ঢাকায় অত্যাধুনিক ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালু করেছে ফ্রান্স। স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ভিসাপ্রার্থী বাংলাদেশি আবেদনকারীদের উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য আবেদন কেন্দ্রটি চালু করা হয়েছে।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গুলশান অ্যাভিনিউয়ের র্যাংগস জেড স্কয়ারে এ কেন্দ্র গত মঙ্গলবার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুই।
আবেদনকারীরা বুধবার থেকে ভিএফএস গ্লোবালের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করে এ কেন্দ্রে তাদের ভিসা আবেদন জমা দিতে পারবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসদুপুই বলেন, এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো বাংলাদেশিদের ভ্রমণের সুবিধা আর দক্ষতা বাড়ানো।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, এর ফলে দৈনিক আবেদন জমা পড়ার সংখ্যা বাড়বে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে অপেক্ষার সময় কমবে, অর্থ প্রদানের বিকল্পগুলো আধুনিকীকরণ হবে এবং একটি বিশেষায়িত কেন্দ্রের মাধ্যমে আবেদনকারীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হবে।
ভিএফএস গ্লোবাল ২০০৪ সাল থেকে ভিসা প্রক্রিয়া করার কাজে ফরাসি সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। বর্তমানে ২৯টি দেশে ফ্রান্সের জন্য ৭০টি ভিসা কেন্দ্র পরিচালনা করছে তারা।
ভিএফএস গ্লোবাল জানিয়েছে, তাদের ভূমিকা কেবল আবেদনপত্র সংগ্রহ, প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তির মতো প্রশাসনিক কাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
শেনজেন ব্যবস্থার আওতায় ভিসাসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত, অনুমোদন ও প্রত্যাখ্যান করা ফরাসি দূতাবাসের এখতিয়ারভুক্ত।
নতুন এ আবেদন কেন্দ্রটি রবি থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অনলাইনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে পারবেন https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/fra এই ঠিকানায়।