বিদায়টা হয়তো একটু রঙিন কল্পনা করেছিলেন আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কিংস্টনের সাবিনা পার্কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে গিয়ে তিক্ত স্বাদই মুখে লেগে থাকল এই ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয়টিই ছিল রাসেলের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। শুরুতে আবেগঘন দৃশ্য; ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সম্মানসূচক ‘গার্ড অব অনার’। কিন্তু ম্যাচের শেষে সব আবেগ মিশে গেল হতাশার ছায়ায়।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে তুলেছিল ১৭২ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। ইনিংসের ঝড় তোলেন দুজন। ব্র্যান্ডন কিং করেন ৩৬ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৫১ রান। আর বিদায়ী নায়ক রাসেল মাত্র ১৫ বলেই ঝড় তোলেন ৩৬ রানে (২ চার ও ৪টি ছক্কা)। মনে হচ্ছিল, রাসেল বুঝি নিজের শেষটা রাঙিয়েই যাবেন। কিন্তু ইনিংসটি বড় হতে না দিতেই থেমে গেল সেই সম্ভাবনা।

আরো পড়ুন:

বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের সিরিজ জয় উৎসর্গ বাংলাদেশের

শঙ্কার মেঘ সরিয়ে সিরিজ জয়ের আনন্দ

তাড়া করতে নেমে ১৩ রানে প্রথম ও ৪২ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় অজিরা। এরপর অবশ্য আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। ইংলিস ও ক্যামেরন গ্রিন গড়ে তোলেন অবিশ্বাস্য এক পার্টনারশিপ। মাত্র ৫৯ বলে ১৩১ রানের জুটি! এটি অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে তৃতীয় উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি ছিল ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৮ রান।

তবে এই রেকর্ড গড়া জুটি ভাঙা যেত অল্প রানেই। স্পিনার গুদাকেশ মতির ওভারে ইংলিসের ক্যাচ ফেলেন রাসেল নিজেই। শুধু ইংলিস নন, ওই ওভারে আরও দুবার জীবন পান গ্রিন। সেই সুযোগগুলো হারিয়ে ম্যাচও হাতছাড়া করে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

ইংলিস খেলেন বিধ্বংসী ইনিংস, ৩৩ বলে অপরাজিত ৭৮ রান (৭টি চার ও ৫টি ছক্কা)। সঙ্গে গ্রিন ৩২ বলে অপরাজিত থাকেন ৫৬ রানে (৩ চার ও ৪ ছক্কা)। দুজনই দলকে ৮ উইকেট আর ২৮ বল হাতে রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

রাসেল বিদায় বেলায় ছিলেন যেন ট্র্যাজেডির নায়ক। একদিকে দুর্দান্ত ব্যাটিং, অন্যদিকে ক্যাচ মিস, বোলিংয়ে মাত্র ১ ওভারে ১৬ রান! শেষটা যে এমন হবে, তা হয়তো তিনিও ভাবেননি।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অ্যাডাম জাম্পা নিয়েছেন ৩ উইকেট, নিয়ন্ত্রণ করেছেন মিডল ওভারের তাণ্ডব। ম্যাচসেরা হন ইংলিস।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইন ড জ ক র ক ট উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ