বিল না পেয়ে সকল কাজ বন্ধ করে দিলেন রাসিক ঠিকাদাররা
Published: 23rd, July 2025 GMT
বিল না পেয়ে সব উন্নয়ন কাজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ঠিকাদাররা।
বুধবার (২৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের সপুরা এলাকায় রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কে সমাবেশ করে তারা এ ঘোষণা দেন।
এসময় ঠিকাদাররা দাবি করেন, ঠিকাদারদের বিলের প্রায় ২৫০ ফাইল আড়াই মাস ধরে টেবিলে ফেলে রেখেছেন সিটি করপোরেশনের সচিব রুমানা আফরোজ। এতে ১৫ জন ঠিকাদারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা আটকে আছে। পাওনা টাকা না পেয়ে তারা কাজের শ্রমিকের মজুরি দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের উপায় নেই।
সমাবেশে ঠিকাদার রেজাউল করিম বলেন, ‘‘গত ২০ জুলাই আমরা সংবাদ সম্মেলন করে বিল ছাড় করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। এরপরও কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আমাদের সঙ্গে আলোচনারও প্রয়োজন বোধ করেননি। ফলে আমাদের এখন কাজ বন্ধ করতে হচ্ছে।’’
আগামী রোববার (২৭ জুলাই) শ্রমিক ও সর্দারদের নিয়ে নগর ভবনের সামনে সমাবেশ করা হবে জানিয়ে ঠিকাদার সালাহউদ্দিন গাজী বলেন, ‘‘শহরে চারটি ফ্লাইওভার, ছয়টি কাঁচাবাজারসহ বেশকিছু রাস্তার কাজ চলছে। আমরা মাসে মাসে বিল নিয়ে কাজ করি। কিন্তু নতুন প্রশাসন কোন বিলই ছাড়ছে না। এ অবস্থায় শ্রমিকেরা টাকার জন্য বাড়ির সামনে চলে আসছে। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। তাই কাজ বন্ধ ছাড়া উপায় নেই।’’
আরেক ঠিকাদার ইঞ্জিনিয়ার শাকিলুর রহমান শাকিল বলেন, ‘‘হাতে টাকা না থাকায় ঠিকাদাররা দ্রুত কাজ শেষ করতে পারছেন না। ফলে কাজ চলমান অবস্থায় রাস্তায় প্রতিনিয়ত নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি প্রচুর দূষণ হচ্ছে। রাজশাহী যে গ্রিনসিটি, সেটা আগামীতে থাকবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ফ্যাসিস্ট আমলে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, এখনও নব্য স্টাইলে আমাদের সঙ্গে অন্যায় করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের মনে রাখা দরকার, আমাদের ওপর কয়েক হাজার পরিবার নির্ভরশীল। তারাও খুব কষ্টে আছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘সিটি করপোরেশন আমাদের ভ্যালুলেস হিসেবে ট্রিট করছে। একজন পিয়নের দাম আছে, আমাদের নেই। সচিবের কাছে গেলে ঠিকাদার অ্যালাউ না। এটা তো হতে পারে না। টাকা বিনিয়োগের পর বিল না পেয়ে ঠিকাদারদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।’’
আরেক ঠিকাদার ও বিএনপি নেতা ইয়াহিয়া খান মিলু বলেন, ‘‘আড়াই মাস ধরে সচিব কোন বিল ছাড়েননি। এতে জনগণের স্বার্থে ব্যাঘাত ঘটছে। জনগণই তো দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এই সচিব সময়মতো অফিসও করেন না। অফিস করেন রাতে। তিনি আওয়ামী লীগের দোসর। বিল আটকে রেখে জনদুর্ভোগ তৈরি করে তিনি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান।’’
সমাবেশ শেষে ওই এলাকার ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাসেল ইসলাম। পাশাপাশি অন্য ঠিকাদাররাও তাদের সব কাজ বন্ধের ঘোষণা দেন। এসময় ঠিকাদার হাফিজুল ইসলাম, বেলাল খানসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন রাসিকের সচিব রুমানা আফরোজ।
তবে বিল আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘‘কোথায় ঠিকাদারদের ২৫০ ফাইল আটকে আছে আমি জানি না। বিল আটকে থাকলে তো তারা আমাদের জানাতেন। আমাকে কেউ তো জানাননি।’’
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ বন ধ আম দ র ল আটক
এছাড়াও পড়ুন:
উপদেষ্টা আসিফের সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া
কুমিল্লার মুরাদনগর স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্য রয়েছেন।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে উপজেলা সদরের আল্লাহ চত্বরে ঘটনাটি ঘটে।
এলাকাবাসী জানান, বুধবার বিকেলে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সদরের আল্লাহ চত্বরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হন। সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে কয়েকটি ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ১০ থেকে ১৫ জন সমর্থক আহত হন, তাদের মধ্যে একজন ইউপি সদস্যও রয়েছেন।
আরো পড়ুন:
কুষ্টিয়া প্রেস ক্লাবে বিএনপির অভিযোগ বক্স, যা পাওয়া গেল
সরকারের একটি অংশ অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে: তারেক রহমান
মিছিল নিয়ে আসা নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মিনাজুল হক বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। মিছিল নিয়ে আসার পর শত শত ইটপাটকেল ছুড়ে আমাদের ধাওয়া দিতে থাকে। আমাদের অনেক সমর্থক আহত হন।”
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। বিএনপির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, “তারা হামলা করার পর আমাদের ছেলেরা প্রতিরোধ করেছে।”
কুমিল্লার মুরাদনগর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান জানান, আজ মুরাদনগর সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উসকানিতে তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এরপরে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাজ করে।
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ