দেশের সারের চাহিদা মেটাতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে এক লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৯২ কোটি ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। চারটি পৃথক প্রস্তাবের আওতায় এই সার আমদানি করা হবে।

বুধবার (২৩ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড.

সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রস্তাব ৪টিতে অনুমোদ দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, মরক্কো এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় প্রথম লটের ৪০,০০০ মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে। ফসল উৎপাদনে ডাই-এ্যামোনিয়াম ফসফেট (ডিএপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।বাংলাদেশে ডিএপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত চাহিদা প্রায় ১৪.৮৫ লাখ মেট্রিক টন। বিএডিসিতে নিরাপত্তা মজুত হিসেবে প্রতি বছর ৩.০০ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার মজুত রাখতে হয়। উক্ত নিরাপত্তা মজুতসহ ডিএপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত মোট চাহিদা ১৭.৮৫ লাখ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরের শুরুতে বিএডিসিতে ডিএপি সারের প্রারম্ভিক মজুত ছিল ৩.০৪ লাখ মেট্রিক টন। বিসিআইসি বছরে প্রায় ১.০০ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার উৎপাদন করে থাকে। বেসরকারি পর্যায়ে ৫.০০ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানিক্রমে সরবরাহ কার্যক্রম চলমান। অবশিষ্ট ৮.৮১ লাখ মেট্রিক টন ডিএপি সার বিএডিসির মাধ্যমে আমদানিক্রমে সরবরাহ করা হচ্ছে।

ফসল উৎপাদনে মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। বাংলাদেশে এমওপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত চাহিদা ৯.৫০ লাখ মেট্রিক টন। বিএডিসিতে নিরাপত্তা মজুত হিসেবে প্রতি বছর ২.০০ লাখ মেট্রিক টন এমওপি সার মজুত রাখতে হয়। উক্ত নিরাপত্তা মজুতসহ এমওপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে নিরুপিত মোট চাহিদা ১১.৫০ লাখ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরের শুরুতে বিএডিসিতে এমওপি সারের প্রারম্ভিক মজুত ছিল ৩.০১ লাখ মেট্রিক টন। বেসরকারি পর্যায়ে ২.৫০ লাখ মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানিক্রমে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অবশিষ্ট ৫.৯৯ লাখ মেট্রিক টন এমওপি সার বিএডিসির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে আমদানি কার্যক্রম চলমান।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়া ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১২তম (ঐচ্ছিক ২য়) লটের ৩০,০০০ মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। ফসল উৎপাদনে মিউরেট-অব-পটাশ(এমওপি) সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

বাংলাদেশে এমওপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত চাহিদা ৯.৫০ লাখ মেট্রিক টন। বিএডিসিতে নিরাপত্তা মজুত হিসেবে প্রতি বছর ২.০০ লাখ মেট্রিক টন এমওপি সার মজুত রাখতে হয়। উক্ত নিরাপত্তা মজুতসহ এমওপি সারের ২০২৫-২৬ অর্থবছরে নিরূপিত মোট চাহিদা ১১.৫০ লাখ মেঃটন। চলতি অর্থবছরের শুরুতে বিএডিসিতে এমওপি সারের প্রারম্ভিক মজুদ ছিল ৩.০১ লাখ মে.টন। বেসরকারি পর্যায়ে ২.৫০ লাখ মেঃটন এমওপি সার আমদানিক্রমে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অবশিষ্ট ৫.৯৯ লাখ মেঃটন এমওপি সার বিএডিসির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে আমদানি কার্যক্রম চলমান। দেশের কৃষি উৎপাদনে এমওপি সারের চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে বিএডিসির মাধ্যমে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান  জেএসসি ‘ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন (প্রডিংটরক)’ থেকে রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছর থেকে এমওপি সার আমদানি করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, বিএডিসি কর্তৃক রাশিয়া হতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে এমওপি সার আমদানিতে ব্যয় হবে  ১২৯ কোটি ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা।

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় মরক্কো এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ১ম লটের ৩০,০০০ মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানি করা হবে।ফসল উৎপাদনে টিএসপি সার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। বাংলাদেশে টিএসপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত চাহিদা প্রায় ৭.৫০ লাখ মেট্রিক টন। বিএডিসিতে নিরাপত্তা মজুত হিসেবে প্রতি বছর ২.০০ লাখ মেট্রিক টন টিএসপি সার মজুত রাখতে হয়। উক্ত নিরাপত্তা মজুতসহ টিএসপি সারের ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের নিরুপিত মোট চাহিদা ৯.৫০ লাখ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরের শুরুতে বিএডিসিতে টিএসপি সারের প্রারম্ভিক মজুত ছিল ২.২৫ লাখ মেট্রিক টন। বিসিআইসি বছরে প্রায় ১.০০ লাখ মেট্রিক টন টিএসপি সার উৎপাদন করে থাকে। অবশিষ্ট ৬.২৫ লাখ মেট্রিক টন টিএসপি সার বিএডিসি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিক্রমে সরবরাহ কার্যক্রম চলমান। চলতি বছরে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি লক্ষমাত্রা ২.০০ লাখ মেট্রিক  টন। চলতি অর্থবছরে বিএডিসি কর্তৃক আমদানিতব্য সারের পরিমাণ ৪.২৫ লাখ মেট্রিক টন, যা পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। মরক্কো থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার আমদানি করতে ব্যয় হবে ২১১ কোটি ৮১ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ টাকা।

ঢাকা/হাসনাত/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৫০ ল খ ম ট র ক টন র ষ ট র য় পর য য় চ ক ত র আওত য় স র ব এড স স র আমদ ন আমদ ন ক র সরবর হ ক ব এড স ত অবশ ষ ট স র একট ব সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি ঋণ শোধে রেকর্ড, এক বছরে ৪০৯ কোটি ডলার দিল বাংলাদেশ

বিদেশি ঋণ পরিশোধ প্রথমবারের মতো ৪০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বিদায়ী অর্থবছরের (২০২৪-২৫) বিদেশি ঋণের সুদ ও আসলসহ মিলিয়ে প্রায় ৪০৯ কোটি ডলার শোধ করেছে বাংলাদেশ। এটি এযাবৎকালের রেকর্ড। এর আগে কখনো এত ঋণ শোধ করা হয়নি। আগের অর্থবছরে ৩৩৭ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করা হয়েছিল।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) বিদেশি ঋণের প্রতিশ্রুতি, ছাড় ও সুদাসলের হালনাগাদ চিত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বিদেশি ঋণের দায় ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে, যা অর্থনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাই-জুন সময়ে ৪০৮ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর মানে, প্রতি মাসে গড়ে ৩৪ কোটি ডলারের বেশি ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে।

ইআরডির সর্বশেষ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে জুন পর্যন্ত সরকার এ বাবদ যে অর্থ ব্যয় করেছে, এর মধ্যে ঋণের আসল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ২৫৯ কোটি ডলার। ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ১৪৯ কোটি ডলার।

এদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাড়লেও কমেছে বিদেশি ঋণ ছাড় ও ঋণের প্রতিশ্রুতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিদেশি ঋণ ছাড় হয়েছে ৫৬০ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭০২ কোটি ডলার। একই সময়ে নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে ৫৪৮ কোটি ডলারের। যদিও গত অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি এসেছিল ৭৯২ কোটি ডলারের। গত অর্থবছরে ঋণ ছাড় হয়েছে ৮৫৭ কোটি ডলার। আর প্রতিশ্রুতি ছিল ৮৩২ কোটি ডলার।

এদিকে ঋণ দেওয়ার শীর্ষে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জুন সময়ে ২৫২ কোটি ডলার ছাড় করেছে। এরপর বিশ্বব্যাংক ও জাপানের অবস্থান। তবে ঋণের অর্থ ছাড় করলেও ভারত, চীন ও রাশিয়া চলতি অর্থবছরে নতুন ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়নি।

এক যুগে বিদেশি ঋণ শোধ প্রায় চার গুণ

কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১১০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। প্রায় ১০ বছর পর ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধ বেড়ে ২০১ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা পৌনে ৩০০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। বিদায়ী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ ৪০৯ কোটি ডলার দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে, অর্থাৎ গত এক যুগে বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়ে প্রায় চার গুণের কাছাকাছি হয়েছে।

ভবিষ্যতে ঋণের চাপ আরও বাড়বে। কারণ, বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ শুরু হচ্ছে। যেমন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, হজরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শুরু হচ্ছে শিগগিরই। জাপানকে এ অর্থ দিতে হবে। এদিকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ ও মেট্রোরেল প্রকল্পের ঋণের কিস্তি শুরু হয়েছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা বলছেন, বড় বড় মেগা প্রকল্পের ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে হওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চীন–কোরিয়াকে পেয়ে ঋতুপর্ণা বললেন ‘আমরা হাল ছাড়ব না’
  • সার আমদানি ও জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন
  • হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ঘোষণা
  • জুলাইয়ের ২৭ দিনে ৯ ব্যাংকে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি
  • বিদেশি ঋণ শোধে রেকর্ড, এক বছরে ৪০৯ কোটি ডলার দিল বাংলাদেশ
  • ২৬ দিনে প্রবাসী আয় ২ বিলিয়ন ছুঁই ছুঁই
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের ১৬৭ সন্তানকে পোষ্য শিক্ষাবৃত্তি প্রদান
  • চলতি মাসে ২৬ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯৩ কোটি ডলার
  • মোটরসাইকেল বিক্রি ১৭ শতাংশ বেড়েছে
  • জার্মানিতে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ: বিশ্বসেরা গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ