৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা ২০২৫–এর সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন এই পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস প্রকাশ করেছে। এ সিলেবাসে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় আবশ্যিক বিষয়সমূহ এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবশ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি। প্রতিটি আবশ্যিক বিষয়ের পূর্ণমানও সিলেবাসে দেওয়া আছে।

এ ছাড়া বিভিন্ন পদসংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি, সংস্কৃত, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামি শিক্ষা, দর্শন, শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, ভূগোল, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ফলিত রসায়ন, গণিত, ফলিত গণিত, ভূ–তত্ত্ব, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, প্রাণরসায়ন, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, ব্যবস্থাপনা, কৃষি, সমুদ্রবিদ্যা, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, পরিসংখ্যানসহ মোট ৩৬টি পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিস্তারিত কাঠামো ও মানবণ্টন এই সিলেবাসে পাওয়া যাবে।

পরীক্ষার্থীরা এই সিলেবাস অনুসরণ করে তাঁদের পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবেন।

৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) ২০২৫–এর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ বিসিএস হবে শিক্ষার বিশেষ বিসিএস। এ বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৬৮৩ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। অনলাইনে ৪৯তম বিসিএসের পদগুলোর জন্য আবেদন শুরু হয়েছে ২২ জুলাই (২২-০৭-২০২৫) দুপুর ১২টা থেকে। আবেদনের সুযোগ এক মাস। আবেদন করা যাবে ২২ আগস্ট (২২-০৮-২০২৫) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন।

আরও পড়ুন৪৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি, পদ ৬৮৩ ২১ জুলাই ২০২৫

৪৯তম বিসিএসে অনলাইন আবেদনের নির্দেশনা

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) ৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা-২০২৫ এর আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ এবং পরীক্ষার ফি জমাদানের বিস্তারিত নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রার্থীরা কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অথবা টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই পরীক্ষাটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের ক্ষেত্রে ১ জুলাই ২০২৫ সালে প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্য।

আরও পড়ুন২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা একই দিনে সকাল-বিকেল হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা১৭ ঘণ্টা আগে

আবেদনের মূল প্রক্রিয়া—

*আবেদনের শুরুতে প্রার্থীকে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার তথ্য প্রদান করে যাচাই সম্পন্ন করতে হবে। এই তথ্য শিক্ষা বোর্ডের ডাটাবেজের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করা হবে। আবেদন ফরমের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে: ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ক্যাডার চয়েস।

* প্রার্থীকে অবশ্যই সাম্প্রতিককালে তোলা রঙিন ছবি (৩০০x৩০০ পিক্সেল, সর্বোচ্চ ১০০ কেবি) এবং স্বাক্ষর (৩০০x৮০ পিক্সেল, সর্বোচ্চ ৬০ কেবি) আপলোড করতে হবে। সাদাকালো ছবি গ্রহণযোগ্য নয় এবং ছবিটি অনধিক তিন মাস পূর্বের রঙিন হতে হবে।

* সফলভাবে আবেদনপত্র পূরণ ও আপলোড সম্পন্ন হলে একটি ইউজার আইডি (User ID) সহ আবেদনপত্র (Applicants Copy) পাওয়া যাবে, যা প্রিন্ট বা ডাউনলোড করে প্রার্থীর জন্য সংরক্ষণ করা আবশ্যক।

আবেদন ফি এবং জমাদানের পদ্ধতি—

সাধারণ প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষার ফি ২০০/- (দুই শত) টাকা। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা। আবেদন ফি টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে দুটি এসএমএস পাঠিয়ে জমা দিতে হবে। ফি জমাদানের বিস্তারিত নির্দেশনা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—

ফি জমাদানের পর আবেদনপত্রে কোনো ধরনের সংশোধন করার সুযোগ থাকবে না, তাই সব তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়াকালীন কারিগরি সহায়তার জন্য ০১৫৫৫৫৫৫১৪৯, ০১৫৫৫৫৫৫১৫০, ০১৫৫৫৫৫৫১৫১, ০১৫৫৫৫৫৫১৫২ নম্বরে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত (অফিস চলাকালীন) যোগাযোগ করা যাবে। ই-মেইল সহায়তাও ([email protected]) থেকে মিলবে।

*৪৯তম বিসিএসের সিলেবাস দেখুন এখানে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব স এস র পর ক ষ র র জন য প রক শ আবশ য

এছাড়াও পড়ুন:

তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন

সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।

কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।

জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।

প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।

জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।

এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।

বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।

এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।

আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
  • মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ৬৫ পদে চাকরির সুযোগ, করুন আবেদন
  • সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রাজস্ব শাখায় নিয়োগ, পদ ৫০
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক মহড়ায় কেন অংশ নিল ভারত
  • নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ, আবেদন ডাকযোগে
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূবিজ্ঞান অনুষদে এমএস প্রোগ্রাম, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের সুযোগ
  • পানি উন্নয়ন বোর্ডে ৪৬৮ পদের আবেদনের সুযোগ আর ২দিন
  • তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
  • তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরে ৪৯৭ পদে বড় নিয়োগ, করুন আবেদন