৪৯তম বিসিএসের সিলেবাস প্রকাশ, পদ ৬৮৩
Published: 24th, July 2025 GMT
৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা ২০২৫–এর সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন এই পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস প্রকাশ করেছে। এ সিলেবাসে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় আবশ্যিক বিষয়সমূহ এবং পদসংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আবশ্যিক বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, বাংলাদেশ বিষয়াবলি, আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি, মানসিক দক্ষতা ও গাণিতিক যুক্তি। প্রতিটি আবশ্যিক বিষয়ের পূর্ণমানও সিলেবাসে দেওয়া আছে।
এ ছাড়া বিভিন্ন পদসংশ্লিষ্ট বিষয় যেমন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, ইংরেজি, সংস্কৃত, মনোবিজ্ঞান, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ইসলামি শিক্ষা, দর্শন, শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, ভূগোল, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, ফলিত রসায়ন, গণিত, ফলিত গণিত, ভূ–তত্ত্ব, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, প্রাণরসায়ন, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞান, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান, হিসাববিজ্ঞান, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, ব্যবস্থাপনা, কৃষি, সমুদ্রবিদ্যা, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, পরিসংখ্যানসহ মোট ৩৬টি পদসংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিস্তারিত কাঠামো ও মানবণ্টন এই সিলেবাসে পাওয়া যাবে।
পরীক্ষার্থীরা এই সিলেবাস অনুসরণ করে তাঁদের পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবেন।
৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) ২০২৫–এর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ বিসিএস হবে শিক্ষার বিশেষ বিসিএস। এ বিসিএসে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৬৮৩ পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। অনলাইনে ৪৯তম বিসিএসের পদগুলোর জন্য আবেদন শুরু হয়েছে ২২ জুলাই (২২-০৭-২০২৫) দুপুর ১২টা থেকে। আবেদনের সুযোগ এক মাস। আবেদন করা যাবে ২২ আগস্ট (২২-০৮-২০২৫) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আগ্রহী প্রার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন৪৯তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি, পদ ৬৮৩ ২১ জুলাই ২০২৫৪৯তম বিসিএসে অনলাইন আবেদনের নির্দেশনা
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) ৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা-২০২৫ এর আবেদনপত্র অনলাইনে পূরণ এবং পরীক্ষার ফি জমাদানের বিস্তারিত নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। আগ্রহী প্রার্থীরা কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট অথবা টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই পরীক্ষাটির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের ক্ষেত্রে ১ জুলাই ২০২৫ সালে প্রার্থীর বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৩২ বছরের মধ্য।
আরও পড়ুন২২ ও ২৪ জুলাইয়ের স্থগিত পরীক্ষা একই দিনে সকাল-বিকেল হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা১৭ ঘণ্টা আগেআবেদনের মূল প্রক্রিয়া—
*আবেদনের শুরুতে প্রার্থীকে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার তথ্য প্রদান করে যাচাই সম্পন্ন করতে হবে। এই তথ্য শিক্ষা বোর্ডের ডাটাবেজের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করা হবে। আবেদন ফরমের তিনটি প্রধান অংশ রয়েছে: ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং ক্যাডার চয়েস।
* প্রার্থীকে অবশ্যই সাম্প্রতিককালে তোলা রঙিন ছবি (৩০০x৩০০ পিক্সেল, সর্বোচ্চ ১০০ কেবি) এবং স্বাক্ষর (৩০০x৮০ পিক্সেল, সর্বোচ্চ ৬০ কেবি) আপলোড করতে হবে। সাদাকালো ছবি গ্রহণযোগ্য নয় এবং ছবিটি অনধিক তিন মাস পূর্বের রঙিন হতে হবে।
* সফলভাবে আবেদনপত্র পূরণ ও আপলোড সম্পন্ন হলে একটি ইউজার আইডি (User ID) সহ আবেদনপত্র (Applicants Copy) পাওয়া যাবে, যা প্রিন্ট বা ডাউনলোড করে প্রার্থীর জন্য সংরক্ষণ করা আবশ্যক।
আবেদন ফি এবং জমাদানের পদ্ধতি—
সাধারণ প্রার্থীদের জন্য পরীক্ষার ফি ২০০/- (দুই শত) টাকা। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ৫০/- (পঞ্চাশ) টাকা। আবেদন ফি টেলিটক প্রিপেইড মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে দুটি এসএমএস পাঠিয়ে জমা দিতে হবে। ফি জমাদানের বিস্তারিত নির্দেশনা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—
ফি জমাদানের পর আবেদনপত্রে কোনো ধরনের সংশোধন করার সুযোগ থাকবে না, তাই সব তথ্য নির্ভুলভাবে পূরণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়াকালীন কারিগরি সহায়তার জন্য ০১৫৫৫৫৫৫১৪৯, ০১৫৫৫৫৫৫১৫০, ০১৫৫৫৫৫৫১৫১, ০১৫৫৫৫৫৫১৫২ নম্বরে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত (অফিস চলাকালীন) যোগাযোগ করা যাবে। ই-মেইল সহায়তাও ([email protected]) থেকে মিলবে।
*৪৯তম বিসিএসের সিলেবাস দেখুন এখানে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব স এস র পর ক ষ র র জন য প রক শ আবশ য
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুদের জন্য কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প
কাতার চ্যারিটি (কিউসি) বাংলাদেশে তাদের অগ্রগামী কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প চালু করেছে, যা পড়তে অসুবিধার সম্মুখীন শিশুদের কোরআন তিলাওয়াত, হিফজ এবং এর অর্থ বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করছে। এ প্রকল্প কিউসির বৃহত্তর আল-ফুরকান কোরআনিক সাক্ষরতা প্রোগ্রামের অংশ, যা কেবল কোরআন শিক্ষার ওপরই কেন্দ্রীভূত নয়; বরং এর সুবিধাভোগীদের নৈতিক, মানসিক ও সামাজিক উন্নয়নের ওপরও জোর দেয়।
কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্পটি বাংলাদেশের সেই শিশুদের লক্ষ করে যারা পড়তে অসুবিধার সম্মুখীন হয়। এটি তাদের কোরআন তিলাওয়াত ও হিফজ এবং কোরআনের অর্থ বোঝার মাধ্যমে তাদের আধ্যাত্মিক ও নৈতিক বিকাশেও সহায়তা করে।
ড. মোহাম্মদ আমিন হাফেজ ওমর, কিউসির বাংলাদেশ শাখার কান্ট্রি ডিরেক্টর। তিনি বলেছেন, ‘এ উদ্যোগ কেবল একটি সাক্ষরতা প্রচারণা নয়, এটি একটি রূপান্তরকারী যাত্রা। পবিত্র কোরআন শিক্ষা দেওয়া শুধু শব্দ ও নিয়ম শেখানো নয়, এটি এমন ব্যক্তি গড়ে তোলা, যারা মূল্যবোধ, আত্মসম্মান ও উদ্দেশ্যে সমৃদ্ধ। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের ঐশী বাণীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে এবং জীবনে নতুন পরিচয়, মর্যাদা ও দিকনির্দেশনার দ্বার উন্মোচন করতে সাহায্য করি।’
আরও পড়ুনযে দানে ত্যাগের অনুভূতি হয়, সেটিই প্রকৃত দান১১ ডিসেম্বর ২০২৪প্রকল্পটি কিউসির দুটি ফ্ল্যাগশিপ সামাজিক কল্যাণ কেন্দ্র—মারকাজ মুহাম্মদ বিন আজাজ আল-কুবাইসি সেন্টার এবং শাখা সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে, যেখানে ৬০০ জনের বেশি স্পনসর করা শিশু অংশগ্রহণ করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ছিল প্রাণবন্ত এবং অংশগ্রহণমূলক, যেখানে কোরআন তিলাওয়াত, নাট্য প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
কোরআন শিক্ষক মনজুরুল হক শিক্ষণপদ্ধতি সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক আরবি ভাষা দিয়ে শুরু করি। শিক্ষার্থীদের অক্ষর ও শব্দ চিনতে সাহায্য করি। তারপর ধীরে ধীরে কোরআনের আয়াত ও তাদের অর্থের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিই। আমাদের লক্ষ্য কেবল কোরআন পড়ে যাওয়া নয়; বরং গভীরভাবে বোঝা এবং কোরআনের সঙ্গে আধ্যাত্মিক সংযোগ ঘটানো।’ এ পদ্ধতি শিশুদের জন্য শিক্ষাকে আকর্ষণীয় ও অর্থপূর্ণ করে তোলে।
কাতার চ্যারিটি বাংলাদেশে ১৯৮৮ সাল থেকে তাদের জনহিতকর কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে, যখন দেশটি প্রলয়ংকরী বন্যার সম্মুখীন হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে ঢাকায় তাদের কার্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে কিউসি বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল সরবরাহ ও জীবিকা উন্নয়নের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০২৪ সালে কিউসি ২ হাজার ২৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যা ৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৭ জনকে উপকৃত করেছে (গালফ টাইমস, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)। এ ছাড়া কিউসি বাংলাদেশে ৫ হাজার ৮২ শিক্ষার্থীকে ব্যাপক আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে, যা তাদের উজ্জ্বল ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
আরও পড়ুনযে দানে ত্যাগের অনুভূতি হয়, সেটিই প্রকৃত দান১১ ডিসেম্বর ২০২৪কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্পটি কিউসির শিক্ষা ও সামাজিক কল্যাণ প্রকল্পের একটি অংশ। এটি ২০২৩ সালে শুরু হওয়া ২০টি কোরআন মুখস্থকরণ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা দুই হাজার শিক্ষার্থীকে উপকৃত করবে। এ ছাড়া কিউসি গত পাঁচ বছরে ৫০টি স্কুল নির্মাণ করেছে, যা ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে উপকৃত করেছে এবং ৩ হাজার ৩১২ জন এতিম শিশুকে স্পনসর করছে।
কিউসি একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এনজিও, যা ১৯৯২ সাল থেকে ৫০টির বেশি দেশে ১৭৮ মিলিয়নের বেশি মানুষকে সহায়তা করেছে। এটি জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে অংশীদারত্বে কাজ করে (কাতার চ্যারিটি ওয়েবসাইট, ২০২৫)।
কাতার চ্যারিটির কোরআন সাক্ষরতা প্রকল্প শিশুদের মধ্যে মূল্যবোধ, আত্মসম্মান ও জীবনের উদ্দেশ্য জাগ্রত করে। প্রকল্পটির সাফল্য শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া ও কিউসির দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে স্পষ্ট। বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এ উদ্যোগ একটি আশার আলো, যা শিক্ষা ও ইমানের মাধ্যমে তাদের জীবনকে রূপান্তরিত করছে।
সূত্র: কাতার ট্রিবিউন
আরও পড়ুনকোরআনের সঙ্গে সংযোগ বাড়াতে ‘কোরআন জার্নালিং’২২ জুলাই ২০২৫