উত্তরায় শুটিং হাউজ বন্ধের নোটিশ, নির্মাতা-শিল্পীদের প্রতিবাদ
Published: 24th, July 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের একটি বাড়ি—যেখানে বহু বছর ধরে নাটক ও সিনেমার শুটিং হয়ে আসছে, সম্প্রতি সেই বাড়িতে শুটিং বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে সেক্টরের আবাসিক কল্যাণ সমিতি।
গত ২০ জুলাই, ইস্যুকৃত নোটিশে বলা হয়েছে, শুটিং ঘিরে অতিরিক্ত জনসমাগম ও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এলাকাবাসীর অসুবিধা হচ্ছে। তাই বাড়ির মালিককে ভবিষ্যতে শুটিং না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
তবে এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং গণমাধ্যমে এই নোটিশের বিরোধিতা করেছেন পরিচালক তপু খান, মাহমুদ দিদার, চয়নিকা চৌধুরী, অভিনেতা রওনক হাসানসহ অনেকে।
আরো পড়ুন:
রাজস্থানের ফটোশুটে বর জয়, কনে জেরিন
শুটিং সেটে আহত সুনেরাহ
নাট্য নির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল হাসান রাইজিংবিডিকে বলেন, “এই শুটিং হাউজে বহু ধারাবাহিক নাটকের কাজ চলছে। হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে ধারাবাহিকতায় সমস্যা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সকল সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর উত্তরা কল্যাণ সমিতির সঙ্গে বসার পরিকল্পনা রয়েছে।”
অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মামুন অপু বলেন, “শিল্প-সংস্কৃতি বন্ধের একটি অপচেষ্টা আমরা দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্য করছি। লাবনী একটি ঐতিহ্যবাহী শুটিং হাউজ। কারো ব্যক্তিগত ক্ষতির কারণ না হয়েও একে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা দুঃখজনক। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি।”
অভিনেতা রওনক হাসান তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, “উত্তরা সেক্টর ৪ কল্যাণ সমিতি থেকে শুটিং বন্ধের নোটিশ এসেছে। আবাসিক এলাকায় নানান রকম অফিস হয়। শতশত স্কুল হয়, মাল্টিটাইপ ব্যাবসা হয়। শুধু শুটিংয়ে সমস্যা!”
অভিনয়শিল্পী সংঘের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক আরো লিখেন, “আগেও এ ধরনের চেষ্টা হয়েছে। সেগুলো সংশ্লিষ্ট সংগঠন, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসন মিলে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা করে সমাধান করেছেন। এবারো আশা করি, তাই হবে। সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
নাট্য ও চলচ্চিত্র নির্মাতা তপু খান তার ফেসবুকে লিখেন, “সরাসরি নিষেধাজ্ঞা আরো গ্রহনযোগ্য নয়। এটা শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে বাধার সামিল। আমাদের অনেকের স্মৃতিবিজরিত শুটিং হাউজ উত্তরার লাবনী ৪। এই হাউজের আসলাম ভাই আমার দেখা অন্যতম ভালো এবং নিরীহ মানুষ। সেখানে শুটিং না করার জন্য অনুরোধ করেছেন উত্তরা সেক্টর কর্তৃপক্ষ।(হয়ত আরো অনেককেই বলেছেন) সংশ্লিষ্ট সংগঠনদের অনুরোধ করছি, জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য। যদি কোনো ত্রুটি বা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে, তাহলে আলোচনা মাধ্যমে সমাধান করা যাবে। তাই বলে সরাসরি নিষেধাজ্ঞাকে ভালো চোখে দেখছি না।”
কিছু উদাহরণ টেনে তপু খান লিখেন, “এলাকায় নানা রকম কার্যক্রম ঘটে, সেখানে নানা রকম ইস্যু হয়। সেগুলো নিয়ে কেউ কিছু বলে না। দুর্নীতি-অনিয়ম-মব নিয়ে কিছু বলে না। দেশের মূল জায়গায় সংস্কার বাদ দিয়ে, সংস্কারের শুরুই হয় শুধু শিল্প-সংস্কৃতির মানুষদের উপর দিয়ে। কেন? সংস্কৃতির বিকাশেই শুধু অনিয়ম আর সারা দেশ চলছে দুর্দান্ত নিয়ম এবং শৃঙ্খখলার সাথে। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
“ভুল বলে থাকলে ক্ষমা করে দিয়েন। ডিসক্লেইমার দিয়ে লিখতে হচ্ছে সবকিছু। ব্যাপারটা আরো কষ্টকর।” লিখেন তপু খান।
শুটিং হাউজ বন্ধের এমন একতরফা নোটিশ নিয়ে চলচ্চিত্র ও নাট্যাঙ্গনের মানুষদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আলোচনার মাধ্যমে একটি যৌক্তিক ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান চান, যাতে সংস্কৃতির বিকাশ ও আবাসিক পরিবেশ—উভয়েরই সমন্বয় সম্ভব হয়।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র বন ধ র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান সিপিজের
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিক মিলন ত্রিপুরার ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করতে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার বৈশ্বিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)। দোষীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার সিপিজের এক টুইটে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ডিবিসি নিউজের প্রতিনিধি মিলন ত্রিপুরা ১৭ জুলাই একটি বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন ও ধারণ করা ভিডিও ফুটেজ মুছে ফেলতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।