ফেনী সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে আরো এক বাংলাদেশির মৃত্যু
Published: 25th, July 2025 GMT
ফেনীর পরশুরামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) গুলি করে মো. লিটন (৩২) নামে আরও এক বাংলাদেশি যুবককে হত্যা করেছে। তার মরদেহ ভারতের বিলোনিয়া সদর হাসপাতালে রয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিজিবির ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে একই ঘটনায় মো.
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাঁশপদুয়া সীমান্ত এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত লিটন পরশুরাম পৌরসভার বাঁশপদুয়া এলাকার গাছি মিয়ার ছেলে। নিহত মিল্লাত একই এলাকার ইউছুফ মিয়ার ছেলে। আহত আফছার মৃত এয়ার আহম্মদের ছেলে এবং তাদের প্রতিবেশী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতের দিকে গুথুমা বিওপির আওতাধীন ২১৬৪/৩-এস নম্বর পিলার অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে তারকাঁটা বেষ্টনীর কাছাকাছি যান লিটন, মিল্লাত ও আফছার। তখন বিএসএফ সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলে লিটন গুলিবিদ্ধ হন এবং তাকে বিএসএফ সদস্যরা ভারতে নিয়ে যায়।
এসময় স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় মিল্লাত ও আফছারকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিল্লাতের মৃত্যু হয়। আফছারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিজিবি ফেনী ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোশারফ হোসেন বলেন, “আমাদের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, তারা শূন্যরেখা অতিক্রম করে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করে স্থানীয় চোরাকারবারিদের সঙ্গে চোরাচালানে জড়িয়ে পড়ে। বিএসএফের দাবি, চোরাচালানকারীদের প্রতিরোধ করতে তারা গুলি চালায় এবং ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ চোরাচালানপণ্য জব্দ করা হয়।”
তিনি আরো বলেন, “এ ঘটনায় আমরা বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। নিহত লিটনের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।”
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ য় ব এসএফ আফছ র
এছাড়াও পড়ুন:
তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের বিজয়ী সামিয়া
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ঘোষিত চূড়ান্ত ফলে দেখা যায়, বুধবারের নির্বাচনে তিনি ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। খবর বিবিসির।
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনে স্বচ্ছতার অভাব এবং ব্যাপক অস্থিরতার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচন ঘিরে দেশটিতে গত কয়েক দিনে সহিংসতায় কয়েক শ’ মানুষ নিহত ও বহু আহত হয়েছে। দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে নিহতের সঠিক সংখ্যা যাচাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
সরকার সহিংসতার মাত্রা কমিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্থিরতা দমনে দেশজুড়ে কারফিউও বাড়ানো হয়েছে।
ক্ষমতাসীন চামা চা মাপিন্দুজি (সিসিএম) দলের প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসানের প্রশাসনের বিরুদ্ধে ভোটের আগে ভিন্নমত পোষণকারী ও বিরোধীদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন চালানোর অভিযোগ রয়েছে। প্রধান দুই বিরোধী দলকেই নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া হয়নি।
ফলে নির্বাচনের পরই বৃহত্তম নগরী দার-এস-সালাম ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। শুক্রবারও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। অস্থিরতা বন্ধ করার জন্য সেনাপ্রধানের সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিক্ষোভকারীরা সামিয়ার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দেয়।
বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বেশিরভাগ তরুণ বিক্ষোভকারীরা, যারা নির্বাচনকে অন্যায্য বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের অভিযোগ, সরকার প্রধান বিরোধী নেতাদের দমন করে গণতন্ত্রকে ক্ষুণ্ন করছে। প্রধান দুই বিরোধী নেতার মধ্যে একজন কারাগারে রয়েছেন এবং অন্যজনকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিরোধী চাদেমা দলের একজন মুখপাত্র শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে তানজানিয়ার একটি কূটনৈতিক সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫০০ জন মারা যাওয়ার বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ কম্বো থাবিত এই সহিংসতাকে ‘এখানে-সেখানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিরাপত্তা বাহিনী খুব দ্রুত ও দৃঢ়তার সাথে কাজ করেছে।”
প্রধান দুই বিরোধী দলীয় নেতার মধ্যে চাদেমা দলের টুন্ডু লিসুকে নির্বাচনের আগে রাষ্ট্রদোহের অভিযোগ আটক করা হয়, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং এসিটি-ওয়াজালেনডো দলের নেতা লুহাগা এমপিনাকে আইনি কৌশল খাটিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি।
১৬টি প্রান্তিক দল, যাদের কারোরই ঐতিহাসিকভাবে উল্লেখযোগ্য জনসমর্থন ছিল না, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
সামিয়ার ক্ষমতাসীন দল সিসিএম, দেশটির রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্বাধীনতার পর থেকে কখনও কোনো নির্বাচনে সিসিএম হারেনি।
নির্বাচনের আগে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী ব্যক্তিত্বদের জোরপূর্বক গুম, নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকারের নিন্দা জানিয়েছিল।
প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যুর পর ২০২১ সালে তানজানিয়ার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে সামিয়া ক্ষমতায় আসেন।
ঢাকা/ফিরোজ