ওল্ড ট্রাফোর্ডে চতুর্থ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের দৃঢ়তায় খেলা পেয়েছে নতুন মোড়। ৩১১ রানে পিছিয়ে থেকে দিন শুরু করলেও, দিন শেষে ভারতের স্কোর দাঁড়িয়েছে ২ উইকেটে ১৭৪। যেখানে অপরাজিত আছেন কেএল রাহুল (৮৭*) ও শুভমন গিল (৭৮*)।

দিনের শুরুটা ভারতীয় শিবিরের জন্য ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফিরে যান যশস্বী জয়সওয়াল ও সাই সুদর্শন। দু’জনেই শূন্যরানে আউট হন। ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস দু’টি উইকেট তুলে নিয়ে ভারতকে একরকম হোঁচট খাইয়ে দেন।

এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ যেন ভারতের হাতছাড়া হবার দ্বারপ্রান্তে। লাঞ্চে স্কোর ছিল মাত্র ১/২। সমর্থকদের মনে তখন একটাই প্রশ্ন, ইনিংস হার কি আজই লেখা হয়ে গেল?

আরো পড়ুন:

ডাকেট-ক্রাউলির তাণ্ডবে ছায়ার মতো পিছিয়ে ভারত

আহত পন্তের লড়াকু ফিফটির পর ৩৫৮ রানে অলআউট ভারত

কিন্তু সেই আঁধারেই আলো জ্বালান রাহুল ও গিল। দুই সেশনের পুরো সময়টিতে প্রতিরোধের নিখুঁত নজির গড়েন তারা। ধৈর্য, আত্মবিশ্বাস আর টেকনিক্যাল ব্যাটিংয়ে ইংলিশ বোলারদের আটকে দেন কার্যত দেয়াল গড়ে।

গিল শুরু করেন কিছুটা আগ্রাসী ভঙ্গিতে। দুর্দান্ত কভার ড্রাইভ ও স্ট্রেট ড্রাইভে জমিয়ে খেলেন। ৪৬ রানে একবার জীবন পেয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করেন ৭৭ বলে। অন্যদিকে রাহুল খেলেন যেন ব্যাট হাতে এক নিঃশব্দ বিপ্লব। ১৪১ বলে অর্ধশতক ছুঁয়ে যান এই অভিজ্ঞ ওপেনার। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভারতের স্কোরবোর্ডেও আসে স্বস্তি। দুই ব্যাটারের নিয়ন্ত্রিত আগ্রাসনেই ১০০ ও পরে ১৫০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে যায় ভারত।

শেষ পর্যন্ত আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ২ উইকেটেই ১৭৪ রান তুলে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করে ভারত।

তার আগে অবশ্য চতুর্থ দিনের শুরুটা ইংল্যান্ডেরই ছিল। বেন স্টোকস ও লিয়াম ডসনের ব্যাটে সকালে তারা ছাড়িয়ে যায় ৫৫০ রান। এরপর বুমরার হাতে ডসন ফিরে গেলেও, নবম উইকেটে স্টোকস ও ব্রাইডন কার্স মাত্র ৯৮ বলে যোগ করেন ৯৫ রান। স্টোকস তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। তিন বছর পর টেস্টে শতরানের স্বাদ পেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত স্টোকস ১৪১ রানে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন। কার্সও পঞ্চাশের কাছাকাছি এসে আউট হন। ইংল্যান্ডের ইনিংস থামে ৬৬৯ রানে।

ভারতের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা, চারটি উইকেট নেন তিনি।

দিন শেষে ভারতের ঘাড়ে এখনও ১৩৭ রানের বোঝা থাকলেও, রাহুল ও গিলের ব্যাটে যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে তা নিঃসন্দেহে ভারতীয় ড্রেসিং রুমে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। পিচে বাউন্সের অনিশ্চয়তা থাকা সত্ত্বেও তাদের নিঃশব্দ লড়াই আগামী দিনের জন্য আশার রেখা দেখাচ্ছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ