বাংলাদেশ সীমান্তের জন্য ৫ হাজার বডিক্যাম পাচ্ছে বিএসএফ
Published: 27th, July 2025 GMT
ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে কর্তব্যরত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যদের পাঁচ হাজার বডিক্যামেরা দেওয়া হচ্ছে। ছোট এসব ভিডিও ক্যামেরা শরীরে সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। কাজগপত্রবিহীন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানোর দৃশ্য ও তথ্যপ্রমাণ রেকর্ড রাখা এবং কর্তব্যরত বিএসএফ সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার একাধিক সূত্র বার্তা সংস্থা পিটিআইকে এ তথ্য জানিয়েছে। সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নির্দিষ্ট কিছু সীমান্তচৌকিতে বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষ যন্ত্রপাতিও দেওয়া হচ্ছে। এসব যন্ত্রের মাধ্যমে কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশিদের আঙুলের ছাপ নেওয়া ও চোখ স্ক্যান করে তা বিদেশি নিবন্ধন দপ্তরে পাঠানো হবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে বিএসএফের সক্ষমতা বাড়াতে এ দুটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকার নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে একটি ‘সমন্বনিত পর্যালোচনার’ পর বিএসএফ সদর দপ্তরের প্রস্তাবিত এ দুটি উদ্যোগ অনুমোদন দিয়েছে।
বিএসএফ সদস্যদের জন্য দুটি ধাপে প্রায় পাঁচ হাজার বডিক্যামেরা পাঠানো হচ্ছে। সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, ক্যামেরাগুলো দিনে–রাতে সমান কার্যকর এবং একটানা প্রায় ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা ভিডিও ধারণ করতে সক্ষম।
আরও পড়ুনশেরপুর সীমান্তে নারী ও শিশুসহ ২১ রোহিঙ্গা ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ২৫ জুলাই ২০২৫সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই বডিক্যামগুলো বিএসএফ যখন কাগজপত্রবিহীন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো বা মাদক, গরু ও জাল ভারতীয় মুদ্রা পাচার, মানব পাচার এবং অনুপ্রবেশ রোধের মতো অপরাধ প্রতিরোধে সীমান্তে অপরাধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াবেন, তখন সেসব ঘটনার তথ্যপ্রমাণ রেকর্ডে সাহায্য করবে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন ফোরামে অভিযোগ করে আসছে, তাদের নাগরিকদের ওপর ভারতীয় পক্ষ অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও অন্যায় আচরণ করছে। তবে বিএসএফ বারবার বলেছে, তারা সৈন্যদের প্রাণ রক্ষার প্রয়োজনে শেষ প্রচেষ্টা হিসেবে প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র বা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে থাকে।
আরও পড়ুনআরও দুই সীমান্ত দিয়ে ১৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ০৫ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ