যেকোনো নিয়তিবাদী সমাজের ভিত্তিতেই থাকে অতীত আর ভবিষ্যৎ। বর্তমান সেই সমাজে প্রবলভাবে অনুপস্থিত থাকায় বাস্তব সমস্যাগুলো কিংবা সে সমস্যার সমাধান নিয়ে বলা চলে আলোচনার দরকার পড়ে না। সম্ভবত রাজনীতিতেই এ প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

বাংলাদেশের রাজনীতির ল্যান্ডস্কেপের দিকে তাকালে এটা পরিষ্কার যে এখানকার রাজনীতিতে অতীত বর্তমানের ওপর আধিপত্য করে এসেছে। নাগরিকদের চূড়ান্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় বসা একেকটা সরকারের নাগরিকদের সমস্যার সমাধানের চেয়ে প্রধান কর্তব্য হয়ে ওঠে, কীভাবে ভবিষ্যতে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করা যায় তার ফন্দিফিকির আঁটতে। ফলে অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়ের বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের নজির নেই।

আরও পড়ুনকোথায় দাঁড়িয়ে আছে অন্তর্বর্তী সরকার২৬ জুলাই ২০২৫

যে দলের হোক, ক্ষমতায় থাকা দলের হাতে নাগরিকের রক্তের দাগ লেগে আছে। সরকার যত কর্তৃত্ববাদী, যত অগণতান্ত্রিক, যত স্বৈরাচারী হয়েছে, রক্তের দাগ তত গভীর হয়েছে। সরকার ও রাষ্ট্র থেকে জনগণকে সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র, রাজনীতিক ও সুবিধাভোগী ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর নেক্সাস যতটা শক্তিশালী হয়েছে, ক্ষমতা থেকে নামানো তত কঠিন হয়েছে। এখানে ক্ষমতার রাজনীতি তাই অবধারিতভাবে রাজপথের লড়াই হয়ে ওঠে, সেই ফয়সালায় নাগরিকের লাশ গুরুত্বপূর্ণ ‘হাতিয়ার’।

প্রচণ্ড রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া বাংলাদেশের সমাজ সাড়ে পাঁচ দশক পরে এসে কেন প্রবলভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে, তার কারণ খোঁজাটা সে কারণেই জরুরি রাজনৈতিক কর্তব্য হয়ে উঠেছে। কেননা, এ জরুরি প্রশ্নের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক বিকাশের প্রশ্নটিও অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত।

ক্ষমতার রাজনীতির সঙ্গে যখন সমাজে কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে অপর করে তোলার চেষ্টা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতাতেই চলতে থাকে, তখন সেই জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে অনিরাপত্তা ও অনিশ্চয়তা বোধের জন্ম হয়, তারা সমাজ ও অর্থনীতির মূলস্রোত হয়ে উঠতে ভয় পায়। তাদের কেউ কেউ অর্থনীতিকে ক্ষতি করার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের উপায় বেছে নেয়। সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশের দাঁড়াতে না পারার পেছনে রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীকে অপর করে তোলার রাজনীতিও একটা বড় কারণ।

শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, যেটিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার দরকার, সেটাকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে বলপ্রয়োগের বহু ব্যবহৃত ও ঔপনিবেশিক চর্চা কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে। আমলাতন্ত্র, পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করলে সরকার কতটা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে পারে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রটাই নাগরিকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেতে পারে, তার ক্ষত এখনো তো দগদগে।

আমাদের মূল ধারার রাজনৈতিক দলগুলো সব সময়ই অপর তৈরি করে। ক্ষমতায় থাকা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের গায়েই নাগরিক নিপীড়ন ও হত্যার দায় লেগে আছে। সেটা কারও বেশি, কারও কম। কিন্তু কেউই কখনো এ বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসা যে জরুরি, সেটা মনে করেনি। বিরোধী পক্ষে থাকাকালে হত্যা ও দমন–পীড়নের যে ক্ষত, যে ট্রমা, সরকারে গেলে সেটাই বিরোধীদের দমনের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। রাজনীতি এ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আনতে কেউই উদ্যোগ নেয়নি। ফলে যেকোনো আমলেই নাগরিকদের একটা অংশ রাষ্ট্রের সব সুবিধা পেয়েছে, তারা হয়ে উঠেছে অধিপতি শ্রেণি আর একটা অংশ হয়ে থেকেছে অধীন শ্রেণি।

আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দলীয় পরিচয়ের মানুষ থাকলেও নাগরিক হিসেবে মানুষের অস্তিত্ব নেই। এই সূত্রেই শাসকেরা একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে ‘অপশক্তি’ হিসেবে চিত্রিত করে, সেই ‘অপশক্তি’ যে ফিরে আসছে, সেই ভয় তাদের সমর্থক গোষ্ঠীর মধ্যে ফেরি করে। এ ভয়ের সংস্কৃতিই শেষ পর্যন্ত দমন–পীড়নের ক্ষেত্র তৈরি করে।

প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি অনন্তকাল ধরে এ চক্রের মধ্যেই ঘুরপাক খেতে থাকব? চব্বিশের অভ্যুত্থান নিশ্চিতভাবেই অতীতের সে সম্ভাবনা নিয়ে এসেছিল। কেননা, এ অভ্যুত্থান প্রবলভাবে রাজনৈতিক হলেও কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠী এর মূল কেন্দ্রে ছিল না। পাথরের মতো ভারী হয়ে চেপে বসা কর্তৃত্ববাদী শাসন ও মাফিয়া অর্থনীতি থেকে মুক্তির জন্য ছটফট করতে থাকা নাগরিকেরা রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। সব মত, সব পথের মানুষ হাসিনার পতনের প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন। এমনকি আওয়ামী লীগের অনুসারীদের একটা বড় অংশ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন।

এক বছরের মাথায় এসে চারদিকে জোরালোভাবেই বলা হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়ানোর আরেকটি সম্ভাবনা আমরা হারিয়ে ফেলতে বসেছি। সংস্কার, উচ্চকক্ষ, নিম্নকক্ষ—এসব বাহাসে চাপা পড়ে গেছে মানুষের বাস্তব জীবনের সংকটগুলো। সেই সঙ্গে কয়েকটি গোষ্ঠী ছাড়া অভ্যুত্থানে থাকা প্রায় সবাই দূরে সরে গেছে কিংবা বাদ পড়ে গেছে। সরকার থেকে জনগণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আমলাতন্ত্র আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসেছে। দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক নির্ভরতার সঙ্গে আমলাতন্ত্র চালকের আসনে বসায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী লীগের ‘ফিরে আসার’ বয়ান শোনা যাচ্ছে।

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঘটা সহিংসতায় এর সূত্রপাত। এরপর মাইলস্টন কলেজ ট্র্যাজেডির পর শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ এবং সচিবালয়ে একাদশের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগের ঢুকে পড়ার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হয়েছে। কিন্তু দুটি বিক্ষোভ ঘটতে পেরেছে বলপ্রয়োগ ও সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে।

প্রশ্ন হচ্ছে, বিপুল সম্ভাবনা আর শক্তি নিয়ে ঘটা চব্বিশের অভ্যুত্থানের মাত্র এক বছরের মাথায় কেন আওয়ামী লীগ ও নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ফিরে আসার প্রশ্নটি কেন আসছে। গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত কোনো রাজনৈতিক দলের খুব কম সময়ের ব্যবধানে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হওয়ার নজির নেই। সেটা রাজনৈতিক বিজ্ঞানের সূত্রবহির্ভূত ঘটনা। বাংলাদেশের যাঁরা ৩৫–এর নিচে, যাঁদের বয়স সেই প্রজন্মের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের পক্ষেই, এত হত্যা, এত নৃশংসতার পর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের রাজনীতিকে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। অবশ্য বাংলাদেশে ব্যতিক্রমও আছে। এখানে গণ–অভ্যুত্থানে পতন হওয়া এরশাদের জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতির ট্র্যাজেডি বলি আর ফার্স বলি, সেটা হলো ক্ষমতায় গেলে শাসকেরা এতটাই ব্যর্থ ও জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যান যে রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাওয়া শক্তিও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায়।

অন্তর্বর্তী সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে যখন মানুষ রাস্তায় নামছে, সেটাকে সুযোগ হিসেবে যে কেউই ব্যবহার করতে পারে। ফলে বিক্ষোভে ছাত্রলীগ কেন আসছে, আওয়ামী লীগ কেন ইন্ধন দিচ্ছে, তার চেয়েও অনেক বড় প্রশ্ন হলো বিক্ষোভ, আন্দোলনের মতো বাস্তবতা কেন তৈরি হচ্ছে? গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে বাধা দেওয়া, আক্রমণ করা নিশ্চিতভাবেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য বড় হুমকি। কিন্তু সরকারের কাছে গোয়েন্দা তথ্য যখন ছিল, তখন নাগরিকের প্রাণহানি হয়, এমন সহিংসতাটি কি এড়ানো যেত না?

শঙ্কার বিষয় হচ্ছে, যেটিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার দরকার, সেটাকে রাষ্ট্রীয় বাহিনী দিয়ে বলপ্রয়োগের বহু ব্যবহৃত ও ঔপনিবেশিক চর্চা কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে। আমলাতন্ত্র, পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করলে সরকার কতটা কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে পারে এবং রাষ্ট্রযন্ত্রটাই নাগরিকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যেতে পারে, তার ক্ষত, তার ট্রমা এখনো তো দগদগে।

মনোজ দে প্রথম আলোর সম্পাদকীয় সহকারী

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র জন ত ক র জন ত ত সরক র র ক ষমত য় ত র জন আওয় ম ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে

অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।

১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’

এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।

পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।

পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ