দেশেই তৈরি হচ্ছে স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ
Published: 29th, July 2025 GMT
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের হিসাবে বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) বাজারের মূল্য ছিল ৭১৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২০৩২ সালে এই বাজারের আকার ৪ দশমিক শূন্য ৬ ট্রিলিয়ন (১০০ বিলিয়ন = ১ ট্রিলিয়ন) ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই বাজারকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবকেরা নানা ধরনের পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশি উদ্ভাবক এ কে এম গনিউল জাদীদ স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ তৈরি করেছেন।
দেশের প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সরবারহপ্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে এই স্মার্ট ফ্রিজ তৈরি করেছেন তিনি। শহরের মানুষের জন্য খাদ্য সরবারহ বিশেষ করে অফিসগামী মানুষের দুপুরের খাবার ও সকালের নাশতার সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ ভেন্ডিং মেশিন তৈরি শুরুর পর স্মার্ট ফ্রিজের ধারণা আসে এ কে এম গনিউল জাদীদের মাথায়। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘শহরের মানুষের কাছে প্রাকৃতিক খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি এই স্মার্ট ফ্রিজের জন্য ধারণা ও সফটওয়্যারটি তৈরি করেছি। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানার কর্মীদের কাছে প্রাকৃতিক খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।’
স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের এই উদ্যোগ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক-অর্থায়িত এজ প্রকল্পের অধীন পরিচালিত হচ্ছে। উদ্ভাবক গনিউল জাদীদ স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ নিয়ে বলেন, এই অত্যাধুনিক ফ্রিজ শুধু একটি রেফ্রিজারেটর নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তি-সমন্বিত খাদ্য সরবরাহের অবকাঠামো। এতে রয়েছে রিয়েল টাইম ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুবিধা। এ ছাড়া সমন্বিত লেনদেনের জন্য ডেটা অ্যানালিটিকসের মতো সুবিধা। এর মাধ্যমে অফিসগামী, যেকোনো পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থী এবং কর্মজীবী পেশাদারেরা সহজেই নিরাপদ, সাশ্রয়ে ও ডিজিটালভাবে পরিচালিত স্বাস্থ্যকর খাবার পেতে পারেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ন্যাকস, পানীয়, রেডি মিল ও হিমায়িত পণ্য পাবেন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে। দেশীয় ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সহায়তায় ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত বেয়ার সামিট ও ন্যাশনাল সেমিকন্ডাক্টর সিম্পোজিয়ামে এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রথম এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে দর্শনার্থীদের আগ্রহ দেখা যায়। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাহদী মুকুট বলেন, ‘দেশীয় উদ্ভাবকেরা অনেক কাজ করছেন। আমাদের স্থানীয় সমস্যা আমাদের উদ্ভাবকেরা সমাধানের চেষ্টা করছেন। এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি নতুন উদ্ভাবন মনে হচ্ছে। আমি নিজে সামিটে ফ্রিজটি ব্যবহার করেছি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একটা যন্ত্র দিয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার সংগ্রহ করা যাচ্ছে। আইওটি পণ্য হিসেবে নতুন চমক মনে হয়েছে আমার কাছে।’
মুঠোফোন দিয়ে স্ক্যান করে স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ থেকে নানা ধরনের খাবার সংগ্রহ করা যাচ্ছে। গনিউল জাদীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ প্রকল্পের অন্য সদস্য হিসেবে আছেন ইলা শারমিন, মুক্তাদির শরীফ ও মোশাররফ হোসেন টিপু। সামিটে প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কাজটি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রযুক্তির প্রতি এরই মধ্যে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা দ্রুত এই আইওটি পণ্য বাজারে আনার আশা রাখছি।’
গনিউল জাদীদ রংপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তী সময়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে প্রথম ব্যাচে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রযুক্তিবিষয়ক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র র জন য করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দেশেই তৈরি হচ্ছে স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের হিসাবে বিশ্বজুড়ে ২০২৪ সালে ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি) বাজারের মূল্য ছিল ৭১৪ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ২০৩২ সালে এই বাজারের আকার ৪ দশমিক শূন্য ৬ ট্রিলিয়ন (১০০ বিলিয়ন = ১ ট্রিলিয়ন) ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই বাজারকে গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের উদ্ভাবকেরা নানা ধরনের পণ্য উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন। বাংলাদেশি উদ্ভাবক এ কে এম গনিউল জাদীদ স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ তৈরি করেছেন।
দেশের প্রাকৃতিক স্বাস্থ্যকর খাদ্যের সরবারহপ্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে এই স্মার্ট ফ্রিজ তৈরি করেছেন তিনি। শহরের মানুষের জন্য খাদ্য সরবারহ বিশেষ করে অফিসগামী মানুষের দুপুরের খাবার ও সকালের নাশতার সমস্যা সমাধানের জন্য বিশেষ ভেন্ডিং মেশিন তৈরি শুরুর পর স্মার্ট ফ্রিজের ধারণা আসে এ কে এম গনিউল জাদীদের মাথায়। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেন তিনি। দীর্ঘ সময় ধরে সফটওয়্যার উন্নয়নে কাজ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘শহরের মানুষের কাছে প্রাকৃতিক খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি এই স্মার্ট ফ্রিজের জন্য ধারণা ও সফটওয়্যারটি তৈরি করেছি। বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানার কর্মীদের কাছে প্রাকৃতিক খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে।’
স্মার্ট এন্টারপ্রাইজের এই উদ্যোগ শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল অংশীদারত্বের অংশ হিসেবে বিশ্বব্যাংক-অর্থায়িত এজ প্রকল্পের অধীন পরিচালিত হচ্ছে। উদ্ভাবক গনিউল জাদীদ স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ নিয়ে বলেন, এই অত্যাধুনিক ফ্রিজ শুধু একটি রেফ্রিজারেটর নয়, এটি একটি সম্পূর্ণ প্রযুক্তি-সমন্বিত খাদ্য সরবরাহের অবকাঠামো। এতে রয়েছে রিয়েল টাইম ইনভেন্টরি ট্র্যাকিং, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুবিধা। এ ছাড়া সমন্বিত লেনদেনের জন্য ডেটা অ্যানালিটিকসের মতো সুবিধা। এর মাধ্যমে অফিসগামী, যেকোনো পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থী এবং কর্মজীবী পেশাদারেরা সহজেই নিরাপদ, সাশ্রয়ে ও ডিজিটালভাবে পরিচালিত স্বাস্থ্যকর খাবার পেতে পারেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ন্যাকস, পানীয়, রেডি মিল ও হিমায়িত পণ্য পাবেন এই প্রযুক্তির মাধ্যমে। দেশীয় ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের সহায়তায় ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এর বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজিত বেয়ার সামিট ও ন্যাশনাল সেমিকন্ডাক্টর সিম্পোজিয়ামে এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের প্রথম এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে দর্শনার্থীদের আগ্রহ দেখা যায়। প্রযুক্তি উদ্যোক্তা মাহদী মুকুট বলেন, ‘দেশীয় উদ্ভাবকেরা অনেক কাজ করছেন। আমাদের স্থানীয় সমস্যা আমাদের উদ্ভাবকেরা সমাধানের চেষ্টা করছেন। এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজটি নতুন উদ্ভাবন মনে হচ্ছে। আমি নিজে সামিটে ফ্রিজটি ব্যবহার করেছি। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে একটা যন্ত্র দিয়ে ফ্রিজ থেকে খাবার সংগ্রহ করা যাচ্ছে। আইওটি পণ্য হিসেবে নতুন চমক মনে হয়েছে আমার কাছে।’
মুঠোফোন দিয়ে স্ক্যান করে স্মার্ট এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ থেকে নানা ধরনের খাবার সংগ্রহ করা যাচ্ছে। গনিউল জাদীদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এন্টারপ্রাইজ ফ্রিজ প্রকল্পের অন্য সদস্য হিসেবে আছেন ইলা শারমিন, মুক্তাদির শরীফ ও মোশাররফ হোসেন টিপু। সামিটে প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কাজটি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি। আমাদের প্রযুক্তির প্রতি এরই মধ্যে দেশীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখাচ্ছে। আমরা দ্রুত এই আইওটি পণ্য বাজারে আনার আশা রাখছি।’
গনিউল জাদীদ রংপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরবর্তী সময়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে প্রথম ব্যাচে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রযুক্তিবিষয়ক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।