বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন তারকারা
Published: 29th, July 2025 GMT
প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন মেহজাবীন; অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী নন। টাঙ্গাইলের মেহজাবীন বিন রিফাত। মঙ্গলবার বিকেলে প্রথম আলো কার্যালয়ের দশম তলার বোর্ডরুমে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন মেহজাবীন চৌধুরী। মেগা পর্বে প্রথম পুরস্কার হিসেবে দুই রাত, তিন দিন (দুজন) থাইল্যান্ড ভ্রমণের টিকিট পেয়েছেন তিনি।
ঢাকার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার–২০২৪’ দেওয়া হয়েছে গত ২৩ মে। পাঠক ভোট দিয়ে নির্ধারণ করেন তারকা জরিপ পুরস্কার। কুপন ও এসএমএসে পাওয়া ভোট থেকে নির্ধারণ করা হয় বিজয়ী। যাঁরা কুপন পাঠান, লটারির মাধ্যমে তাঁদের জন্যও থাকে পুরস্কার।
২৮ জুন তাঁদের মধ্য থেকে লটারির মাধ্যমে বিজয়ী নির্ধারণ করেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, তরুণ অভিনেতা ফররুখ আহমেদ রেহান ও কণ্ঠশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা।
আরও পড়ুনলটারিতে বিজয়ী নির্ধারণ করলেন তারকারা, কারা পেলেন পুরস্কার০২ জুলাই ২০২৫বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দিতে প্রথম আলো কার্যালয়ে এসেছিলেন মেহজাবীন চৌধুরী, দিলশাদ নাহার কনা, তৌসিফ মাহবুব, তটিনীসহ আরও অনেকে। প্রথম আলো কার্যালয়ের দশম তলার বোর্ডরুমে হাজির হয়েছেন বিজয়ীরা। কেউ এসেছেন চট্টগ্রাম থেকে, কেউ নওগাঁ থেকে। পৌনে পাঁচটায় পুরস্কার বিতরণী আয়োজন শুরু হয়েছে। প্রিয় তারকাকে পেয়ে অনেকে সেলফি তোলেন, কুশল বিনিময় করেন। একে একে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
কার কাছ থেকে পুরস্কার নিতে চান? চার তারকাকে দেখিয়ে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদকে জিজ্ঞাসা করেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। তানভীর মাহমুদ উত্তর দেন, তৌসিফ (মাহবুব) ভাইয়ের কাছ থেকে। এরপর তৌসিফ তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পুরস্কার বিতরণী শেষে বিজয়ীরা কনার কাছে গান শোনার আবদার করেন। সবার অনুরোধে ‘কন্যা’ গানটি ধরেন কনা।
অতিথিদের স্বাগত জানান প্রথম আলোর হেড অব কালচারাল প্রোগ্রাম কবির বকুল।আয়োজনের শুরুতে বক্তব্য রাখেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, সংগীতশিল্পী দিলশাদ নাহার কনা, অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব, অভিনেত্রী তটিনী, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের মার্কেটিং ম্যানেজার তেহসিনা খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ (মার্কেটিং) মীর মনিরুল ইসলাম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম হজ ব ন চ ধ র প রস ক র ত ল প রথম আল
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে বছর শেষে বাড়ছে ডেঙ্গু, কমেছে চিকুনগুনিয়া
চট্টগ্রামে বছরের শেষে এসে আবারও বাড়ছে ডেঙ্গুর সংক্রমণ। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দুই দিনেই ৮৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা একটা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪১ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। গত বছরও এই সময়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়েছিল। এদিকে বছরের শেষ দিকে এসে চিকুনগুনিয়ার সংক্রমণ কমেছে। গতকাল ২৪ ঘণ্টায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া—দুটিই মশাবাহিত ভাইরাসজনিত রোগ। দুটিই এডিস মশার কামড়ে হয়। এডিসের বংশ বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, নভেম্বরের শুরুতে লঘুচাপের কারণে বৃষ্টি হতে পারে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
চট্টগ্রামে বছরের শুরু থেকে গতকাল বেলা একটা পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৯২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে গত অক্টোবর মাসে। পুরো জেলায় ওই মাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৯৯০ জন। এর আগের মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩৫। চলতি নভেম্বর মাসে এ সংখ্যা নির্ভর করছে বৃষ্টির ওপর। কারণ, শীত শুরু হলে এডিসের বংশবৃদ্ধির আশঙ্কা কম। তবে বৃষ্টি হলে সেটি বাড়তে পারে।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে সর্বশেষ মৃত্যু গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয় তারা (১৬) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা ২০।এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়লেও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত কমেছে। গতকাল পর্যন্ত জেলায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৬৯। তবে চিকুনগুনিয়ায় মাসভিত্তিক তথ্য দেয়নি সিভিল সার্জন কার্যালয়। যদিও প্রতিদিনের আক্রান্তের হিসাব দেয় তারা। প্রাথমিক হিসাবে, গত সেপ্টেম্বর মাসে চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭০৪। গত অক্টোবর মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১২১ জন। এ মাসে কেবল একজন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে সর্বশেষ মৃত্যু গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এদিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জয় তারা (১৬) নামের এক কিশোরীর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে চলতি বছর চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নিহতের সংখ্যা ২০।
এদিকে গত বছরের তুলনায় এ বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের অবস্থা গুরুতর। তাঁদের উপসর্গগুলোও কিছুটা ভিন্ন বলে জানা গেছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত ৪১ জন রোগী জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৩ জন ভর্তি হয়েছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) এবং ১২ জন ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
আমাদের হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। ডায়রিয়া ও বমি হলো ডেঙ্গু ওয়ার্নিং সাইন (সতর্ক সংকেত)। এগুলো দেখলে বোঝা যায় রোগীর অবস্থা গুরুতর হচ্ছে।এ এস এম লুৎফুল কবির, মেডিসিন বিভাগের প্রধান, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালচিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা গেছে। তবে এ বছর যাঁরা আসছেন, তাঁদের মধ্যে শক সিনড্রোম বেশি। পাশাপাশি ডায়রিয়ার উপসর্গও আছে। শক সিনড্রোম হলে রোগীর রক্তচাপ বোঝা যায় না। এই দুটি উপসর্গ গুরুতর। কারণ, সময়মতো ফ্লুইড (তরল খাবার) না পেলে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হতে পারে।
চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান এ এস এম লুৎফুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে ১৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। ডায়রিয়া ও বমি হলো ডেঙ্গু ওয়ার্নিং সাইন (সতর্ক সংকেত)। এগুলো দেখলে বোঝা যায় রোগীর অবস্থা গুরুতর হচ্ছে।’
চলতি বছর এপ্রিল থেকে মোটামুটি বৃষ্টি হচ্ছে। জুনে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টি হলেও পরের মাসগুলোয় স্বাভাবিক বৃষ্টি হয়। আর থেমে থেমে বৃষ্টির সঙ্গে গরম কিন্তু কমেনি। এই বৃষ্টি ও উচ্চ তাপমাত্রা চলতি বছর ডেঙ্গুর বিস্তারে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন কীটতত্ত্ববিদেরা। তবে সংক্রমণ কমাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় ও সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
নগরের ২৫টি এলাকাকে ডেঙ্গু ও ২৫টি এলাকাকে চিকুনগুনিয়ার জন্য হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়। এর মধ্যে বন্দর, ইপিজেড, হালিশহর, কোতোয়ালি, বায়েজিদ, পাহাড়তলী, কাট্টলী, খুলশী, ডবলমুরিং, লালখান বাজার, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, দেওয়ানহাট, আন্দরকিল্লা, মুরাদপুর, সদরঘাট—এসব এলাকায় ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার ঝুঁকি রয়েছে। এসব এলাকায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।
সিটি করপোরেশনের ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সরফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিশেষ দল করা হয়েছে ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার জন্য। নিয়ম করে এলাকা ভাগ করে রুটিন অনুযায়ী ওষুধ ছিটানো হচ্ছে।’
চট্টগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত বৃষ্টি হওয়ার ২৮ দিন পর্যন্ত মশার প্রকোপ থাকে বলে ধারণা করা হয়। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে শঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এ মাসে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। এতে ডেঙ্গু বাড়তে পারে।