গোপালগঞ্জে এনসিপির অনেকের জীবননাশের হুমকি ছিল, আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগ করা হয়েছে
Published: 31st, July 2025 GMT
গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) অনেকের জীবননাশের হুমকি ছিল বলে জানিয়েছে সেনা সদর। তারা বলেছে, সেই ব্যক্তিদের জীবন বাঁচানোর জন্যই সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে। আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগে বাধ্য হয়েছে। এখানে জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য ছিল, অন্য কিছু নয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনা সদরের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলা হয়েছে। ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস-এ-তে অনুষ্ঠিত এই ব্রিফিংয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘প্রত্যেকটি জীবন মূল্যবান। যেকোনো কারণেই হোক, কোনো জীবনহানি ঘটবে এটা আমরা আশা করি না। গোপালগঞ্জে যে ঘটনাটি ঘটেছে, এটা অবশ্যই দুঃখজনক। কিন্তু কোন প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, কেন সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলপ্রয়োগ করতে হয়েছে, সে ব্যাপারেও সরকারের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর তৎপরতাসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, ‘কোনো দলকে নয়, কোনো ব্যক্তিকে নয়, বরং যাদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে, সেটি বিবেচনা করেই তাদেরকে উদ্ধার করেছি। ইতিপূর্বেও একই কাজ করেছি। কোনো দল নয়, জীবন রক্ষার্থেই এই কাজটি করতে হয়েছিল।’
নাজিম-উদ-দৌলা আরও বলেন, সেনাবাহিনীর আয়ত্তের ভেতরে আছে, কাছাকাছি বা দায়িত্বের ভেতরে আছে এমন সময় কারও জীবন বিপন্ন হবে, এ সময় সেনাবাহিনী চুপ থাকতে পারে না। এ ক্ষেত্রে যে কারও বিষয়ে আমাদের অবস্থান একই। ‘সিনিয়র লিডারশিপের’ (ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের) নির্দেশনা একইভাবে দেওয়া। কোনো একটা জীবন মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে, এ সময় তাকে মৃত্যুর মুখে রেখে বা তার প্রতি নজর না দিয়ে সেনাবাহিনী দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। অবশ্যই সেনাবাহিনীর জন্য জীবন রক্ষা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সেই কাজটিই করেছি এবং করব।
সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক বলেন, ‘একটা বিপৎসংকুল সময় আমরা পার করছি। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সবার সহযোগিতা দরকার। আমরা যেন সম্মিলিতভাবে কাজ করে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে পারি।’
গোপালগঞ্জের ঘটনার বিষয়ে আগাম কোনো তথ্য ছিল কি না, থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া গেল না কেন—এসব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। জবাবে সেনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল কোথায় তাদের সভা, সমাবেশ বা বৈঠক করবে এটা মূলত স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়। এ বিষয়ে তারা জানত, আমাদের কাছে আগাম কোনো তথ্য ছিল না।’
গোপালগঞ্জে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কর্নেল স্টাফ কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ছিল। যেখানে শুধু ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়নি, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। সেখানে জীবননাশের হুমকি ছিল। তখন আত্মরক্ষার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলপ্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে। এখানে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি।’
এনসিপির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এক সাংবাদিক জানতে চান একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর বিশেষ কোনো দুর্বলতা আছে কি না—জবাবে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশেষ কোনো দলের ক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর আলাদা কোনো নজর নেই। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবাই সমান। তবে যেখানে জনদুর্ভোগ ও জীবননাশের হুমকি থাকে সেখানে সেনাবাহিনী কঠোর হয়। জনসাধারণকে সহায়তা করে থাকে। সেখানে (গোপালগঞ্জ) সেনাবাহিনী যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করত, তাহলে আরও হতাহত বা জীবননাশের শঙ্কা থাকত। সেই হিসেবে সেনাবাহিনী সেটা করেছে।’
সেনা সদরের ব্রিফিংয়ে কথা বলেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেস-এ-তে এই ব্রিফিং হয়উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ রক ষ র থ র জ বন কর ন ল এক প র সদর র
এছাড়াও পড়ুন:
পূজাকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।
সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য।
সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।
এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।