‘বাংলাদেশের বড় ব্যর্থতা জন্মনিয়ন্ত্রণে’
Published: 1st, August 2025 GMT
অভিনেতা, নির্মাতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও পরবর্তীতে পরিচালনা ও উপস্থাপনায় সরব হন। বিতর্কিত উপস্থাপনা ও নানা ধরনের মন্তব্য করে প্রায়ই আলোচনায় থাকেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ সরব শাহরিয়ার নাজিম জয়। সমকালীন নানা বিষয় নিয়ে নিজের ভাবনার কথা প্রকাশ করতে এ মাধ্যমকে বেছে নেন। তার মতে—বাংলাদেশে জনসংখ্যা বেশি হয়ে গেছে। আর এই জনসংখ্যা শক্তি না হয়ে বোঝায় পরিণত হয়েছে।
শাহরিয়ার নাজিম জয় তার ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে লেখেন, “স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা জন্মনিয়ন্ত্রণে। এত মানুষ। এজন্যই সব কিছুই বেশি বেশি। বেশিরভাগই জনশক্তিতে পরিণত না হইয়া যেন বোঝায় পরিণত হয়ে আছে।”
আরো পড়ুন:
কাঁদতে কাঁদতে টাকা চাইলেও সাড়া মেলেনি, আক্ষেপ ডলি জহুরের
বাংলায় দেখা যাবে তুর্কি ধারাবাহিক ‘মোস্তফা’
খানিকটা ব্যাখ্যা করে শাহরিয়ার নাজিম জয় লেখেন, “কথা বেশি। প্রয়োজন বেশি। লোভ বেশি। হিংসা বেশি। বিভক্তি বেশি। অভাব বেশি। দুর্নীতি বেশি। হিংস্রতা বেশি। প্রতিশোধ বেশি রাজনীতি বেশি। এত বেশির ভিতর সবচেয়ে কম হচ্ছে মনুষত্ব এবং নমনীয়তা।”
জয়ের এই ভাবনার সঙ্গে নেটিজেনদের কেউ কেউ একমত। আবার অনেকে দ্বিমত পোষণ করেছেন। আমান খান লেখেন, “সমস্যার কিন্তু শেষ নাই আত্রেয়ীর আব্বু। জন্ম নিয়ন্ত্রণই যদি সব সমস্যার সমাধান হতো, তাহলে ইউরোপীয় দেশগুলোতে জনসংখ্যা এখনকার চেয়ে অনেক কম থাকত। আমরা যদি যেকোনো সমস্যার সমাধান ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে সেভাবে চলি, আমার মনে হয়, যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি, তা অনেকাংশেই কমে যেত হরলাল দাদা।”
রাকিবুল ইসলাম লেখেন, “মানুষ বোঝা নয়, এ দেশের যত রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে কেউই জনবোঝাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করার সদিচ্ছা করে নাই। এর প্রধান কারণ হলো জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হলে সঠিক রূপরেখা প্রস্তুত করতে হবে আর সঠিক রূপরেখা মানে হলো দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। কেউই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ চায়নি, তাই সঠিক রূপরেখা তৈরি করেনি। এজন্যই জনবোঝা তৈরি হয়েছে।” এমন অসংখ্য মন্তব্য ভেসে বেড়াচ্ছে তার কমেন্ট বক্সে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক চলচ চ ত র সমস য র
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত সরকারের
জাপানে জনশক্তি প্রেরণের বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে গঠিত ‘জাপান সেল’ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেরিত এক চিঠিতে জানানো হয়, গত ৩ সেপ্টেম্বর প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সভায় এ সব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। খবর বাসসের।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশে জাপানের সহযোগিতা বাড়াতে প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান
প্রবাসীদের রেমিট্যান্সেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা
সভায় বলা হয়, জাপান সেলের কার্যক্রমকে জনগণের কাছে তুলে ধরতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো হবে। ফেসবুক পোস্টে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং জাপানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের উদ্ধৃতি প্রকাশ করা হবে, যা প্রধান উপদেষ্টার অফিসিয়াল পেজে প্রচারিত হবে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার। জাপান টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০৪০ সালের মধ্যে দেশটিতে ১ কোটি ১০ লাখ কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। বিদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য বিভিন্ন ভিসা ক্যাটাগরি খোলা রাখা হয়েছে।প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের অনুপ্রেরণায় জাপানে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে ন্যাশনাল বিজনেস সাপোর্ট কো-অপারেটিভ ফেডারেশন (এনবিসিসি), জাপান-বাংলা ব্রিজ রিক্রুটিং এজেন্সি লিমিটেড (জেবিবিআরএ) এবং কাইকোম ড্রিম স্ট্রিট বিডি কোম্পানি লিমিটেডের (কেডিএস) সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এসব চুক্তির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ ও কর্মসংস্থান নিশ্চিতে পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
শ্রমবাজার সম্প্রসারণে ‘জাপান ডেস্ক’ চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শ্রমবাজারের চাহিদা যাচাই, কর্মসংস্থানের সুযোগ চিহ্নিত ও প্রচারণা, কর্মীদের ভাষা প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল টেস্ট, তথ্যসংগ্রহ এবং জাপানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ করা হবে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, “জনশক্তি রপ্তানির মূল লক্ষ্য হলো কর্মসংস্থান বৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচন। জাপান ডেস্কের মাধ্যমে এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে।”
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জানান, জাপান সরকার এখন দক্ষতা ও মানসম্পন্ন কর্মী নিয়োগে জোর দিচ্ছে। এজন্য জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ ও টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কেডিএস নার্সিং সেক্টরে দক্ষ কর্মী পাঠাতে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পাস গড়ে তুলবে।
ইতিমধ্যে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— জাপান সেলের ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ চালু, যোগাযোগের জন্য বিশেষ ই-মেইল খোলা, জাপানি ভাষা শেখার মোবাইল অ্যাপস প্রচার, কর্মপ্রার্থীদের জন্য শিক্ষাঋণ চালু, অতিরিক্ত পরীক্ষাকেন্দ্র স্থাপন, অনলাইন ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু, ভাষা পরীক্ষার্থীদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে তদারকি কমিটি গঠন। এছাড়া ভাষা শিক্ষকদের সম্মানি বৃদ্ধি, ভিসা আবেদন প্রক্রিয়ার সমস্যা সমাধান এবং জাপানের সহায়তায় ১ লাখ কর্মী প্রশিক্ষণের প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে।
বর্তমানে স্পেসিফায়েড স্কিলড ওয়ার্কার (এসএসডব্লিউ) ক্যাটাগরির ছয়টি খাতে—কৃষি, নির্মাণ, কেয়ার ওয়ার্কার, বিল্ডিং ক্লিনিং, অটোমোবাইল পরিবহন ও শিল্প খাতে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম চলছে।ভবিষ্যতে ১৬টি খাতেই এ সুযোগ বাড়ানো হবে। ২০২৭ সাল থেকে টেকনিক্যাল ইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রামের (টিআইটিপি) পরিবর্তে এমপ্লয়মেন্ট ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট (ইএসডি) চালু হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ে জাপানি ভাষা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে এবং জাপান ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় নতুন প্রশিক্ষক পাঠানো হবে।
অন্যদিকে, আগামী নভেম্বর মাসে টোকিও ও নাগোইয়াতে বাংলাদেশি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠান ও জাপানি নিয়োগকর্তাদের মধ্যে ‘ম্যাচ মেকিং ইভেন্ট’ অনুষ্ঠিত হবে।এতে বাংলাদেশ থেকে জাপানে কর্মী নিয়োগের নতুন সুযোগ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/এসবি