জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘১৯৭১ সালে প্রথম স্বাধীনতা অর্জনের পরে আমরা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছি। মানুষের ওপর মানুষের গোলামি খতম করে আল্লাহর গোলামি কায়েম করার জন্য আমাদের আবার তৃতীয়বার স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। জাতীয় সংসদে আল্লাহর আইন পাস করতে হবে।’

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘জুলাই ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা, প্রাপ্তি ও করণীয়’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী। সেখানে দলের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান সভাপতিত্ব করেন।

মানুষের রচিত কোনো মতবাদ দিয়ে মানুষের মুক্তি আসবে না উল্লেখ করে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘এ জন্য এ দেশে আল্লাহর আইন চালু করতে হবে। আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মেনে চলতে হবে।’

সেমিনারে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু আজকে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের রাজনীতি বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, হাসিনার আমলে সংঘটিত সব হত্যার বিচার করতে হবে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার শহীদ ও আহত যাঁরা’ বইয়ের ইংরেজি ও আরবি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন এবং শহীদদের স্মৃতি-তথ্যসংবলিত ওয়েবসাইটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত জুলাই যোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াতের এই সেমিনারে আরও কয়েকটি দলের নেতারাও বক্তব্য দেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন বলেন, ‘ইসলাম কায়েম করা ছাড়া লুটপাট, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বন্ধ হবে না। দেশে দুর্নীতিমুক্ত সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতিতে নির্বাচন চালু করতে হবে। তা না হলে ভোট ডাকাতি, কারচুপি, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ হবে না।’

শহীদদের তালিকা করার জন্য জামায়াতকে ধন্যবাদ জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। এ সময় তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শাসনামলে মুসলমানদের জঙ্গি হিসেবে অভিহিত করে তাঁদের ওপর জুলুম করা হয়েছে। বর্তমানে একটি দলের মহাসচিব বলেছেন, দেশে দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হয়েছে। দক্ষিণপন্থার উদ্ভব হলে তাতে তাঁদের সমস্যা কী? দক্ষিণপন্থার ভয় দেখিয়ে আবার জুলুম-নির্যাতন চালানোর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, দলের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল ও মহানগরী উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আযম মীর শাহীদুল আহসান, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা হাসিনুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ প্রমুখ এতে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জামায়াত নেতা এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, শফিকুল ইসলাম মাসুদ ও রেজাউল করিম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ধ নত র রহম ন ল ইসল ম র র জন

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণের অভিযোগে হাকিমির বিচার দাবি ফরাসি কৌঁসুলিদের

২০২৩ সালে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমির বিচার করার দাবি তুলেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। মরক্কোর এই রাইটব্যাক অভিযোগটি অস্বীকার করেছেন।

নঁতের কৌঁসুলি অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, তদন্তে নিয়োজিত বিচারককে ধর্ষণের এই অভিযোগ ফৌজদারি আদালতে তোলার অনুরোধ করেছেন ফরাসি কৌঁসুলিরা। কৌঁসুলি অফিস থেকে এএফপিকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নিজের আদেশ কাঠামোর ভেতরে থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার এখন তদন্তে নিয়োজিত ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর।’

আরও পড়ুননিষেধাজ্ঞা মেসির পিছু ছাড়ছে না, এবার নিষিদ্ধ হলেন তাঁর দেহরক্ষী৫৭ মিনিট আগে

গত মে মাসে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ইন্টার মিলানের বিপক্ষে পিএসজির ৫–০ গোলের জয়ে বড় অবদান ছিল হাকিমির। পিএসজির প্রথম গোলটি ২৬ বছর বয়সী এই খেলোয়াড়ের। সর্বশেষ ২০২২ বিশ্বকাপেও প্রথম আরব দেশ হিসেবে মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠায় দারুণ অবদান ছিল হাকিমির। ২০২৩ সালের মার্চে ২৪ বছর বয়সী এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০২৩ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অভিযোগকারীকে প্যারিসের উপকণ্ঠে বুলান–বিয়ানকুতে অবস্থিত নিজের বাসায় আসার খরচ দেন। তখন হাকিমির স্ত্রী ও সন্তান ছুটি কাটাতে বাইরে ছিলেন। অভিযোগকারী সেই নারী এরপর পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাকিমির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন এবং তখন পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। সেই নারী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করতে না চাইলেও কৌঁসুলিরা হাকিমির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের সিদ্ধান্ত নেন।

পুলিশকে অভিযোগকারী নারী তখন জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইনস্টাগ্রামে হাকিমির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। সেই রাতে ট্যাক্সি করে হাকিমির বাসায় তিনি গিয়েছিলেন এবং ভাড়াটা পিএসজি তারকাই দেন। পুলিশকে সেই নারী বলেছিলেন, হাকিমি সম্মতি ছাড়াই তাঁর শরীর স্পর্শ করেন এবং তারপর ধর্ষণ করেন। পুলিশের এক সূত্রও তখন এএফপিকে এ কথা জানায়। এক বন্ধুকে ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে আসতে বলেছিলেন সেই নারী। পরে সেই বন্ধু এসে তাঁকে নিয়ে যান।

আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদ ছাড়তে চান না কোনো খেলোয়াড়, ‘বেকায়দায়’ ক্লাব কর্তৃপক্ষ২ ঘণ্টা আগে

কৌঁসুলিরা গতকাল হাকিমির বিচারের দাবি তোলার পর তাঁর আইনজীবী ফ্যানি কোলিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এএফপি। তাঁর মতে, কৌঁসুলিদের এ সিদ্ধান্ত, ‘মামলার উপকরণ বিচারে বোধগম্য নয় এবং অর্থহীন। আশরাফ হাকিমিসহ আমরা শান্তই আছি এবং আমরা প্রক্রিয়ার শুরুতে ছিলাম। আমরা অবশ্যই আপিলের সব রকম পথই বের করব।’ কোলিন দাবি করেন, তাঁর মক্কেল, ‘পরিকল্পিতভাবে অন্যায় দাবির শিকার’।

অভিযোগকারী নারীর আইনজীবী র‌্যাচেল–ফ্লোর প্রাদো এএফপিকে বলেছেন, ‘এই মামলার কোনো কিছুতেই অন্যায় দাবির আলামত নেই। আমার মক্কেল এ খবরে (হাকিমিকে বিচারের সন্মুখীন করা) অনেক স্বস্তি পেয়েছে।’

গত মৌসুমে পিএসজির চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল জয়ে দারুণ ভূমিকা ছিল হাকিমির

সম্পর্কিত নিবন্ধ