মুসলিম সমাজকে বিজ্ঞানমুখী করার উপায়
Published: 2nd, August 2025 GMT
ইসলামি সভ্যতা এক সময় জ্ঞান–বিজ্ঞানে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিয়েছে, কিন্তু উনিশ শতক থেকে মুসলিম উম্মাহ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপীয় শক্তির উত্থান, উসমানীয় খিলাফতের পতন ও বিজ্ঞানে পশ্চিমা আধিপত্য মুসলিমদের জ্ঞানচর্চাকে পিছিয়ে দিয়েছে।
ইসলামি স্বর্ণযুগে (অষ্টম-ত্রয়োদশ শতাব্দী) মুসলিম পণ্ডিতরা গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও প্রকৌশলের ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছিলেন। ইবনে সিনা, আল-খাওয়ারিজমী এবং আল-বিরুনির মতো পণ্ডিতেরা বিজ্ঞানকে কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে এগিয়ে নিয়েছিলেন।
কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমরা তোমার প্রতি নাযিল করেছি, যাতে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে চিন্তা করে এবং বুদ্ধিমানেরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা সদ, আয়াত: ২৯)
পশ্চিমা বিজ্ঞান প্রকৃতিকে জয় করার বা শোষণের বিষয় হিসেবে দেখে, যা ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে পরিবেশদূষণ, সম্পদের অপব্যবহার ও বৈশ্বিক অসাম্য বেড়েছে।এ আয়াত মুসলিমদের জ্ঞানের সন্ধানে উৎসাহিত করত।
পশ্চিমা রেনেসাঁ ও আলোকিত যুগের প্রভাবে বিজ্ঞানে পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি প্রাধান্য পায়। পশ্চিমা বিজ্ঞান প্রকৃতিকে জয় করার বা শোষণের বিষয় হিসেবে দেখে, যা অনেক ক্ষেত্রে ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে পরিবেশদূষণ, সম্পদের অপব্যবহার ও বৈশ্বিক অসাম্য বেড়েছে। বাংলাদেশে, নদীদূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এই সমস্যার স্পষ্ট উদাহরণ।
আরও পড়ুনআপনি কি জানেন, এই ১০টি উদ্ভাবন মুসলিমদের১৯ জুন ২০২৫পশ্চিমা বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা এবং ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিপশ্চিমা বিজ্ঞান প্রায়ই দার্শনিক ও অবিশ্বাসী দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেয়, যা প্রকৃতিকে আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে না দেখে একটি বস্তুগত সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করে। অথচ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘মানুষের হাতের কাজের কারণে স্থল ও সমুদ্রে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।’ (সুরা রুম, আয়াত: ৪১) এ বিপর্যয়ের উদাহরণ হলো বৈশ্বিক উষ্ণতা, দূষণ ও সম্পদের অসম বণ্টন। শিল্পের বর্জ্যে নদীদূষণ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এই সমস্যার ফল।
ইসলামি বিজ্ঞান প্রকৃতিকে আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে দেখে, যা সম্মান ও দায়িত্বের সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে। নবীজি (সা.
এই শিক্ষা বিজ্ঞানকে নৈতিক ও টেকসই পথে পরিচালিত করতে পারে।
বিজ্ঞানমুখী প্রজন্ম গড়ার প্রয়োজনীয়তামুসলিম সমাজের একটি বিরাট অংশ উপর্যুক্ত নানা কারণে ও আর্থিক দৈন্যদশার মুখে পড়ে বিজ্ঞান থেকে পিছিয়ে পড়েছে। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গি, পদ্ধতি ও প্রয়োগ পুনর্বিন্যাস করে তাদের জাগিয়ে তোলা সময়ের দাবি। এর উদ্দেশ্য শুধু পশ্চিমা বিজ্ঞানকে প্রত্যাখ্যান নয়, বরং এর সঙ্গে ইসলামি মূল্যবোধের সমন্বয় ঘটানো। বিজ্ঞান শিক্ষা যেহেতু ব্যাপকভাবে পশ্চিমা মডেলের ওপর নির্ভরশীল, তাই সেখানে ইসলামি দার্শনিক তত্ত্বের মাধ্যমে একটি ভারসাম্য আনাও জরুরি। এটি আমাদের পরিবেশ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নৈতিকতার প্রতি দায়িত্বশীল করে তুলবে।
পৃথিবী থেকে ক্ষতিকর কিছু সরিয়ে ফেলা ইমানের একটি শাখা।সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫,২৩৯কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমরা আমাদের রাসুলদেরকে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ পাঠিয়েছি এবং তাঁদের সঙ্গে কিতাব ও ন্যায়বিচারের মানদণ্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে।’ (সুরা হাদিদ, আয়াত: ২৫)
অর্থাৎ, আমাদের বিজ্ঞানচর্চা যেন ন্যায় ও কল্যাণের পথে ব্যবহার হয়, সেদিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
আরও পড়ুনবাগদাদের জ্ঞানের বাতিঘর২৭ জুন ২০২৫ব্যবহারিক পদক্ষেপবিজ্ঞানের সঙ্গে ইসলামের এই সমন্বয় ঘটানোর জন্য আমরা বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। যেমন:
১. শিক্ষাব্যবস্থায় ইসলামি মূল্যবোধের সমন্বয়
বিজ্ঞান শিক্ষায় কোরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। পরিবেশবিজ্ঞান পড়ানোর সময় সুরা রুম (আয়াত: ৪১) বা আকাশবিজ্ঞানের সময় কোরআন কসমোলজিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করেছে, সেসবও আলোচনা করা যেতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের নৈতিক দিক সম্পর্কে সচেতন করবে।
২. টেকসই গবেষণার প্রচার
জলবায়ু পরিবর্তন, নদীদূষণ এবং কৃষি–সংকটের মতো সমস্যা সমাধানে গবেষণাকে ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্ত করা যেতে পারে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির গবেষণায় কোরআনের টেকসই উন্নয়নের শিক্ষা প্রয়োগ করা যেতে পারে।
ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, যেখানে শাস্ত্রীয় পাঠদান করা যায়, সেগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞানের কত গভীরতম সংযোগ রয়েছে, তা শিক্ষকগণ আলোচনা করতে পারেন।৩. মুসলিম বিজ্ঞানীদের নেটওয়ার্ক গঠন
মুসলিম বিজ্ঞানীদের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যেতে পারে, যেখানে তারা কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে বিজ্ঞানের নতুন ব্যাখ্যা ও সমাধান প্রস্তাব করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ উদ্যোগ নিতে পারে।
৪. পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে পরিবেশ সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। মসজিদে খুতবার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরা, বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম বা নদী পরিষ্কার অভিযানে সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। বিভিন্ন দাতব্য সংগঠনের সঙ্গে সহযোগিতায় এই কার্যক্রম জোরদার করা যায়।
৫. নৈতিক বিজ্ঞান শিক্ষা
বিজ্ঞান শিক্ষায় নৈতিকতার ওপর জোর দেওয়া উচিত। কোরআনের শিক্ষা, যেমন ‘তোমরা ন্যায় প্রতিষ্ঠা করো’ (সুরা হাদিদ, আয়াত: ২৫), বিজ্ঞানীদের প্রকৃতির শোষণের পরিবর্তে এর সংরক্ষণে উৎসাহিত করবে। শিক্ষার্থীদের জন্য পরিবেশ নৈতিকতার কোর্স চালু করা যেতে পারে।
৬. প্রদর্শনীর আয়োজন করা
প্রাচীন মুসলিম বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন উদ্ভাবন ও আবিষ্কার নিয়ে জনপরিসরে প্রদর্শনীর আয়োজন করা যায়। এবং বর্তমান বিজ্ঞানকে তাদের আবিষ্কার কীভাবে প্রভাবিত করেছে, তা–ও চাইলে সেখানে ব্যাখ্যা করার ব্যবস্থা রাখা যায়।
৭. শাস্ত্রীয় পাঠে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, যেখানে শাস্ত্রীয় পাঠদান করা যায়, সেগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞানের কত গভীরতম সংযোগ রয়েছে, তা শিক্ষকগণ আলোচনা করতে পারেন। প্রয়োজনে মৌলিক ব্যবহারিক বিজ্ঞান ও জনজীবনে তার প্রভাববিষয়ক সিলেবাস গঠন করা যায়।
বিজ্ঞান যে মুসলিম সমাজের ভেতরে ‘ধর্মবিরোধিতা’র কোনো অংশ নয়, বরং নৈতিক ও শাস্ত্রীয় শিক্ষার সঙ্গে বিজ্ঞানের পাঠ আমাদের আরো বেশি জীবন–সংকট দূর করবে, সেটা বোঝানো এই সময়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হওয়া উচিত। এটাই আমাদের ঐতিহাসিক গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারে এবং আমাদের দেশ ও জাতিকেও সমৃদ্ধ করতে পারে। বিজ্ঞানভীতি দূর করতে পারলে আমাদের শিশুরাও সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।
আরও পড়ুনগণিতে ইবনে হাইমের অবদান২৩ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রক ত ক ব যবহ র পর ব শ আম দ র র একট ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে ইউক্রেনের পাশে থাকার আহ্বান রাজা চার্লসের
বিশ্বের সবচেয়ে জটিল কিছু সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেছেন ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস। একই সঙ্গে তিনি ‘স্বৈরাচারের (রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন) বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থন’ দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফরের প্রথম দিনে উইন্ডসর ক্যাসলে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন রাজা।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় ৩ পুলিশ নিহত
সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
জবাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, এ সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ শব্দ দিয়ে যথাযথভাবে বোঝানো যায় না।
উইন্ডসর ক্যাসলে ১৬০ জন অতিথির জন্য আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ এই নৈশভোজে রাজার বক্তৃতায় দুই দেশের গভীর বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক, বাণিজ্যিক ও সামরিক সম্পর্ক ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় এ সফর চলবে আজ বৃহস্পতিবারও। এদিন নানা অনুষ্ঠানে মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের সঙ্গে অংশ নেবেন ব্রিটিশ রানি ক্যামিলা ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস।
রাজকীয় অ্যাপায়ন শেষে ট্রাম্পের আজকের কর্মসূচি রাজনৈতিক আলোচনায় রূপ নেবে। আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তার সরকারি বাড়ি চেকার্সে বৈঠক করবেন। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনও হবে।
বুধবারের (১৭ সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রীয় ভোজ ছিল আড়ম্বর ও রাজনীতির সমন্বয়ে সাজানো এক বিশেষ আয়োজন। ভোজে রাজা, রানি ও রাজপরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের উপস্থিতিতে ট্রাম্পকে স্বাগত জানানো হয় উইন্ডসরে।
উইন্ডসর ক্যাসলের মনোরম প্রাঙ্গণে পৌঁছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মেলানিয়া রাজকীয় ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামেন। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে সাজানো সেনাদলের অভিবাদন গ্রহণ করেন তারা।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
যুক্তরাষ্ট্রের অতিথিকে স্বাগত জানাতে প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসও উপস্থিত ছিলেন। তারা প্রেসিডেন্ট ও মেলানিয়ার সঙ্গে উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ এক বৈঠকও করেন।
ভোজসভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রিন্স উইলিয়ামের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে তিনি হবেন ‘অসাধারণ সফল নেতা’। প্রিন্সেস অব ওয়েলস ক্যাথরিনকে তিনি আখ্যা দেন ‘উজ্জ্বল, সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ও সুন্দরী’ হিসেবে।
ট্রাম্পের ঐতিহাসিক এ দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফর প্রমাণ করেছে রাজা ও তাঁর মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। সফরে আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজে তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মুহূর্তও দেখা গেছে।
এরপর রাজপ্রাসাদে ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা। ট্রাম্প যখন রাজার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন, তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ছয়টি কামান থেকে একযোগে ৪১ বার তোপধ্বনি করা হয়। একই সময়ে টাওয়ার অব লন্ডন থেকে একই রকম তোপধ্বনি হয়।
ট্রাম্প দম্পতিকে স্বাগত জানানোর এ আয়োজনে অংশ নেন ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর ১ হাজার ৩০০ সদস্য। ছিল শতাধিক ঘোড়া।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের মতে, বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে স্বাগত জানানোর জন্য দেশটিতে আয়োজিত স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সামরিক সংবর্ধনা ছিল এটি।
বিবিসি বলছে, রাজকীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা থাকবে।
যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফর হলো একধরনের নরম শক্তির কূটনীতি, যা গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য রাজকীয় আকর্ষণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কেউ নেই।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আর্থিক সেবা, প্রযুক্তি এবং জ্বালানি খাতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় গড়ে তুলে যুক্তরাজ্যকে আমেরিকান বিনিয়োগের প্রধান গন্তব্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে তিনি নিজ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চাইছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের সফর শুরু হওয়ার সাথে সাথে, মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যে ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের একটি বড় প্রযুক্তি চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে মাইক্রোসফট থেকে ২২ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এবং পারমাণবিক শক্তিতে সহযোগিতা দেখা যাবে।
ট্রাম্পের সফরের আগে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট যুক্তরাজ্যের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ট্রাম্প-স্টারমারের বৈঠক থেকে কয়েক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়িক চুক্তির ঘোষণাও আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকা/ফিরোজ