ফ্লোরিডার মাঠে যেন জমে উঠেছিল, ‘কে আগে হারবে’ সেই প্রতিযোগিতা। পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ; দুই দলই এমন ভুলের পর ভুল করেছে, যেন জয় নয়, বরং হারটাই লক্ষ্য। তবে শেষ হাসি হেসেছে ক্যারিবীয়রা। নাটকীয় এই ম্যাচে শেষ বলে জয় তুলে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে তারা।

পাকিস্তানের দেওয়া ১৩৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পেন্ডুলামে দুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। একসময় তো ৮ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ প্রায় হাতছাড়া করে বসেছিল তারা। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৮ রান, শাহিন আফ্রিদির নিখুঁত বোলিংয়ে প্রথম পাঁচ বলে মাত্র ৪ রান তুলতে পারে ক্যারিবীয়রা। শেষ বলে দরকার পড়ে ৩। তখন ব্যাট হাতে ছিলেন জেসন হোল্ডার। শাহিনের মিডল স্টাম্পে করা বলকে দারুণ টাইমিংয়ে স্কয়ার লেগ দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে ম্যাচ শেষ করেন হোল্ডার।

এতেই ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান করে জয় নিশ্চিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর সিরিজে ফিরে ১-১ সমতা।

আরো পড়ুন:

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আবারও হতাশায় ডুবিয়ে এগিয়ে গেল পাকিস্তান

পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্নের ঘোষণা ট্রাম্পের

জয়ের আগে অবশ্য দারুণ বেগ পেতে হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বিশেষ করে পাকিস্তানের স্পিন আক্রমণে রীতিমতো কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ক্যারিবীয়রা। মোহাম্মদ নওয়াজ, সুফিয়ান মুকিম ও সাইম আইয়ুব— এই তিন স্পিনার মিলে ১২ ওভারে তুলে নেন ৬ উইকেট, দেন মাত্র ৫৩ রান। নওয়াজ একাই ১৪ রানে নেন ৩টি উইকেট।

৬.

২ থেকে ১৪.৫ ওভার পর্যন্ত একটিও বাউন্ডারি না পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ধুঁকছে হারের মুখে। কিন্তু হোল্ডার ও শেফার্ড শেষ দিকে এসে দৃঢ়তায় জয়ের কাহিনি রচনা করেন।

এই ম্যাচে পাকিস্তানও ব্যাট হাতে ছিল বিপর্যস্ত। শুরুটা ভালো হলেও শেষ ৫ ওভারে তারা তুলতে পারে মাত্র ২৩ রান, তাও কোনা বাউন্ডারি ছাড়া! ইনিংস শেষে স্কোরবোর্ডে ১৩৩/৯। দলের হয়ে হাসান নওয়াজ করেন ২৩ বলে ৪০ রান। আর সালমান আগা করেন ৩৮ রান। কিন্তু বাকি ব্যাটাররা ছিলেন এক অঙ্কেই বন্দি।

ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানোর পাশাপাশি বল হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত জেসন হোল্ডার। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। এই ম্যাচেই তিনি টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিবীয়দের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী হন। তার ঝুলিতে রয়েছে ৮১ উইকেট।

এই জয় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা ৬ ম্যাচের হারের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসে। তিন ম্যাচের সিরিজে এখন দুই দলই সমতায় (১-১)। নির্ধারণী ম্যাচটি হবে আগামীকাল, যেখানে জয়ী দলই ঘরে তুলবে সিরিজ শিরোপা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ১৩৩/৯ (২০ ওভারে) হাসান নওয়াজ ৪০, সালমান আগা ৩৮; হোল্ডার ৪/১৯।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৩৫/৮ (২০ ওভারে) মোতি ৩০, হোল্ডার ১৬*; নওয়াজ ৩/১৪।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: জেসন হোল্ডার।
সিরিজ: ১-১ সমতা।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইন ড জ ক র ক ট নওয় জ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ক্রিকেটের সমস্যা কী, সমাধান কোথায়: শুনুন তামিমের মুখে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় সমস্যা কী? কোন বিষয়টি সবার আগে সমাধান করা উচিত?

দুটি প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই অনেক কথাই বলবেন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত কারও বিষয়টি ভালো জানার কথা। যেমন তামিম ইকবাল। প্রথম আলোর প্রধান ক্রীড়া সম্পাদক উৎপল শুভ্র তামিমের সামনে দুটি প্রশ্ন রেখেছিলেন। তামিমের উত্তর, ‘আমার কাছে মনে হয় যে আমাদের ফ্যাসিলিটিজ (অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা) নাই।’

প্রথম আলোর কার্যালয়ে উৎপল শুভ্রকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে আড্ডার মেজাজে তামিম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন। নিজের ক্যারিয়ার, ভবিষ্যৎ লক্ষ্য—এসব নিয়েও বেশ খোলামেলা কথা বলেন সাবেক এই ওপেনার।

আলাপচারিতার একপর্যায়েই বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ মুহূর্তের সমস্যার প্রসঙ্গ উঠেছিল। অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধার অভাবকে সামনে টেনে এনে তামিম বলেছেন, ‘একটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দলের যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার হয় কিংবা বাংলাদেশের মতো দেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলার একটি (ক্রিকেট), যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, তার আশপাশেও নেই। পৃথিবীর তৃতীয়, চতুর্থ ধনী বোর্ডের যে ফ্যাসিলিটিজ থাকা উচিত, আমরা এর আশপাশেও নেই।’

তামিম বিষয়টি ভালোভাবে ব্যাখ্যা করলেন, ‘ক্রিকেট দলের প্রতি ভক্তদের যে প্রত্যাশা, সেটা পূরণের জন্য যে ফ্যাসিলিটিজ দরকার, আমরা তার আশপাশেও নেই। আপনি মাঝারি মানের ক্রিকেটার হতে পারেন কিংবা মাঝারি মানের ব্যাটসম্যান হতে পারেন, সঠিক অনুশীলনের মাধ্যমে কিন্তু আপনি মাঝারি মান থেকে দুই ধাপ ওপরে উঠতে পারবেন।’

মুশফিকুর রহিম

সম্পর্কিত নিবন্ধ