৩৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন'র সভাপতি বাসার ও সম্পাদক মেহেদী
Published: 3rd, August 2025 GMT
দেশের ৩৭তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের সদস্যদের সমন্বয়ে ৩৭তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েন" এর দুই বছর মেয়াদি কার্য নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সর্ব সম্মতিক্রমে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত সহকারী পুলিশ সুপার আবুল বাসার মোল্লাকে কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গা-সার্কেল) মো.
রাজধানির ইস্কাটন রোডস্থ বাংলাদেশ পুলিশ অফিসার্স মেসে ৩৭ তম বিসিএস পুলিশ ব্যাচের সদস্যরা শনিবার এক সভায় মিলিত হয়ে আগামী দুই বছরের জন্য এ কমিটি গঠন করেন।
এছাড়াও কমিটিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সহকারী পুলিশ সুপার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান সিনিয়র সহ-সভাপতি, ডিএমপির সহকারী পুলিশ সুপার তৌফিক আহমেদ ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ডিএমপির সহকারী পুলিশ সুপার হুসাইন মোহাম্মদ ফারাবী সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
সভায় যেসব সদস্যরা স্বশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি তারা ভার্চুয়ালি জুম মিটিং এর মাধ্যমে আলোচনায় যুক্ত হন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় এহসান ইমন প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
কমিটি গঠনের পর নব নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ অন্যান্য সদস্যরা দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর জুলাই আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে ব্যাচের স্বার্থে ও দেশের প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
এছাড়া সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন বলেও সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স গঠন ন র য়ণগঞ জ ব স এস প ল শ সহক র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
নভেম্বরে বৃষ্টি ফসলের জন্য কতটা ক্ষতির
বাড়ির সামনে ১৫ শতক জমিতে সবজি আবাদ করেছেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলার বয়রা গ্রামের কৃষক শাম্মত আলী (৬০)। পালংশাক, মুলা, ডাঁটা ও মরিচের বীজ বুনেছেন তিনি। মরিচের বীজ বোনার দুই দিন পর বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টিতে বীজ পচে গেছে। নভেম্বরে অসময়ের বৃষ্টিতে তিনি ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
ইতিমধ্যে ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান কাটতে শুরু করেন কৃষকেরা। এ ছাড়া শীত মৌসুমকে সামনে রেখে কৃষকেরা সবজি চাষ শুরু করেছেন। ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলগুলোতে বিপুল পরিমাণ সবজির আবাদ হয়। তবে নভেম্বরের শুরুতে টানা বৃষ্টি এসব ফসলের ওপর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর প্রভাব বাজারেও পড়তে পারে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জেলার ১৩টি উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ২ লাখ ৬৮ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে। এবার শর্ষে চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে শর্ষে আবাদ করা যাচ্ছে না। ২১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ হয়েছে। বৃষ্টির কারণে বাঁধাকপি, ফুলকপি, করলা, চিচিঙ্গা, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়ার কিছুটা সমস্যা হতে পারে। বৃষ্টি দীর্ঘায়িত হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে।
নভেম্বরের বৃষ্টি ফসলের জন্য কতটা ক্ষতির জানতে চাইলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. পারভেজ আনোয়ার বলেন, নিম্নচাপের কারণে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। নভেম্বরে এমন বৃষ্টি অপ্রত্যাশিত। ইতিমধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকেরা ধান শুকাতে সমস্যায় পড়বেন। যাঁরা কাটতে পারেননি, তাঁদের জমিতে পানি ওঠায় ধানের অপচয় বেশি হবে। রবি ফসলের ক্ষেত্রে ভুট্টা, ডাল-জাতীয় শস্য ও শর্ষে লাগানো দেরি হয়ে যাবে। ফসল লাগাতে দেরি হলে পরে বোরো ফসল লাগাতেও দেরি হয়ে যাবে।
অধ্যাপক পারভেজ আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, শীতকালীন সবজি যাঁরা দেরিতে লাগাচ্ছেন, তাঁদের চারা নষ্ট হয়ে যাবে। আগাম যাঁরা আবাদ করেছেন, অতিবৃষ্টির কারণে পচে যাবে এবং রোগবালাই ও পোকার আক্রমণও বাড়বে। সব মিলিয়ে ধান, রবি শস্য ও শীতকালীন সবজি—সবকিছুই ক্ষতিগ্রস্ত হবে অসময়ের বৃষ্টির কারণে।
কৃষক শাম্মত আলী বলেন, ‘কয়েক দিন আগে মরিচ বুনছিলাম। বৃষ্টিতে সব পইচ্চা গেছে। আমার সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। সব গাইব হয়ে গেছে। আষাঢ় মাসেও এমন বৃষ্টি হয় না, যে বৃষ্টি হইছে। এমন বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছিন না। এমন সময়ে ছিডাছাডা বৃষ্টি হইলেও এমন বৃষ্টি আর কখনো হয় নাই।’
গতকাল শনিবার রাত আড়াইটা থেকে রোববার সকাল ৬টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ময়মনসিংহ জেলায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। ময়মনসিংহ আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হচ্ছে। গত শুক্রবার দিবাগত রাত ৪টা ২৫ মিনিট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়। আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ময়মনসিংহ শহরের দীঘারকান্দা এলাকার লাল মিয়া বলেন, ‘২ কাডা জমিতে শাকসবজি করছিলাম। বৃষ্টিতে সব ক্ষতি হইয়া গেছে। এমন টাইমে তো বৃষ্টি হয় না।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নভেম্বর মাসের শুরুতে বৃষ্টি হওয়ায় সবজি লাগানো কিছুটা পিছিয়ে যেতে পারে। শর্ষে আবাদের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, বৃষ্টির কারণে লাগাতে দেরি হলে অর্জন কিছুটা কম হবে। এখন শর্ষে আবাদের ভালো সময়। এ সময় শর্ষের বীজ বুনতে না পারলে আবাদ কমে যাবে। বৃষ্টি কয়েক দিনের মধ্যে থেমে গেলে তেমন ক্ষতি হবে না।