আর্থিক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর পথ তৈরি হয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 4th, August 2025 GMT
“দেশের আর্থিক খাত একসময় গভীর সংকটে নিমজ্জিত ছিল, যা পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের অদক্ষতা ও দুর্নীতির ফল। গত ১ বছরে সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আর্থিক খাত ঘুরে দাঁড়ানোর পথ তৈরি হয়েছে। এখন আইসিইউ থেকে কেবিন পেরিয়ে আমরা বাড়ি ফিরেছি বললে ভুল হবে না।”
সোমবার (৪ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের হলরুমে আয়োজিত জুলাই অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড.
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. জাকির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
‘টাকা পে’ এর নামে ভুয়া ওয়েবসাইট, সতর্ক করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক
ব্যাংকের পর্ষদ-পরিচালকদের দায়িত্ব নিয়ে নতুন নীতিমালা
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আর্থিক খাতের সংস্কার রাতারাতি সম্ভব নয়। আর্থিক পরিবর্তনের জন্য সময় লাগে। আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠান, প্রক্রিয়া এবং ব্যক্তি সব স্তরেই দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা গেড়ে বসেছে। তবে কিছু সৎ ও দক্ষ মানুষের নেতৃত্বে পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হয়েছে। তাদের মাধ্যমেই আমরা সংস্কারের চেষ্টা করছি। এরইমধ্যে আমরা আইসিইউ থেকে কেবিনে, আর কেবিন থেকে বাড়িতে ফিরেছি বললেও ভুল হবে না।”
তিনি বলেন, “আমরা অল্প সময়ের জন্য এসেছি। আমরা একটি পথচিহ্ন রেখে যাচ্ছি। আশা করি, পরবর্তী সরকার সেই পথ অনুসরণ করে অর্থনীতিকে পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করবে। আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “জুলাই শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মূল্যস্ফীতি এরই মধ্যে ৮ শতাংশে নেমেছে, শিগগির তা ৫ শতাংশে নামবে। ব্যাংক খাতে গুণগত পরিবর্তনে আমাদের অগ্রাধিকার হলো আমানতকারীদের নিরাপত্তা।”
তিনি বলেন, “নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ। খসড়া এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইনটি পাস হলে আর্থিক খাত একটি নির্দিষ্ট শৃঙ্খলায় ফিরবে। ভবিষ্যতে যেন ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে নিশ্চয়তা মিলবে।”
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক বলেন, “জুলাই আন্দোলকে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলি। শহীদের রক্তের ঋণ শোক প্রকাশে শোধ হবে না। তবে আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারলে সেই ঋণের কিছুটা হলেও মর্যাদা রক্ষা করা যাবে।”
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৫ আগস্ট ‘জুলাই শহীদ দিবস’ উপলক্ষে ৮৫২ জন গেজেটভুক্ত শহীদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও তফসিলি ব্যাংকগুলো মিলে জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের প্রায় ১৬ হাজার পরিবারের হাতে সম্মাননা ও উপহার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নাজমুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর থ ক খ ত
এছাড়াও পড়ুন:
সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল দেশ গড়া সম্ভব
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সমবায় খাতকে আধুনিক ও গতিশীল করতে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি, কৃষি, মৎস্য, পশুপালন, সঞ্চয় ও ঋণদান এবং কুটিরশিল্প প্রভৃতি ক্ষেত্রে সমবায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে একটি আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
আরো পড়ুন:
মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
শনিবার (১ নভেম্বর) ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “সাম্য ও সমতায়, দেশ গড়বে সমবায়’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারো ১ নভেম্বর, ২০২৫ যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপী ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস’ উদ্যাপিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষে আমি সকল সমবায়ী ও দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “দেশ ও জনগণের উন্নয়নে গৃহীত যেকোনো কার্যক্রম সফলভাবে বাস্তবায়নে সামাজিক সম্পৃক্ততা নিশ্চিত অপরিহার্য। সমবায়ের অমিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে এ কাজ আমরা অনায়াসে করতে পারি। সমবায় সমিতিগুলো শুধু আর্থিক প্রতিষ্ঠানই নয় বরং সমাজের নানাবিধ সমস্যা দূর করতে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সমবায় আন্দোলনের বিকল্প নেই। অন্তর্বর্তী সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার পথে এগিয়ে যেতে চায়। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সমবায়ের ভূমিকা অপরিসীম।”
তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আসুন, সমবায়ের চেতনাকে ধারণ করে সাম্য ও সমতায় আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলি নতুন বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা ‘৫৪তম জাতীয় সমবায় দিবস, ২০২৫’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। খবর বাসসের।
ঢাকা/সাইফ