ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন
Published: 25th, August 2025 GMT
ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার কাটাখালী নদীর ভাঙনে মাতুভূঞা ইউনিয়নের করিম উল্যাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাঁচ কক্ষবিশিষ্ট ভবনটি বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোনো সময় পুরো ভবনটি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিদ্যালয়টির শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা রহিম উল্যাহ চৌধুরী। তার দুই ছেলে তারেক মাহতাব রহিম ও জাবেদ সালাম রহিমের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ২০১৬ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এখানে সপ্তম শ্রেণির পাঠদান, নবম ও দশম শ্রেণির গ্রুপভিত্তিক পাঠদান, বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি এবং ছাত্রীদের নামাজের স্থান রয়েছে।
আরো পড়ুন:
চট্টগ্রামে সরকারি স্কুলের মাঠ বেচাকেনা, তদন্তে দুদক
সাভারে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে স্কুলের মাঠ দখল
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভবনের নিচের মাটি সরে গেছে। ভবনের উত্তর পাশের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি শহীদ মিনারের বিভিন্ন অংশেও ফাটল ধরেছে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আদনান বিন আলম বলেন, “এই ভবনটিতে আমাদের পাঠদান চলে। পুরো ভবন যে কোনো মুহূর্তে নদীতে তলিয়ে যেতে পারে। আমরা আতঙ্কিত। বিদ্যালয়ের ভবনটি রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
মিনাল দাস গুপ্ত নামে নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, নদী ভাঙনের খবর শুনে সবার মধ্যে ভয় কাজ করছে। পুরো ভবন ধসে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্টদের এখনই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম বলেন, “কয়েক বছর আগে জেলা পরিষদ থেকে গার্ডওয়াল নির্মাণ করা হয়েছিল। এবারের বৃষ্টিতে পানির তীব্র স্রোতে সেটির আর অস্তিত্ব নেই।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম বাছির ভূঞা বলেন, “নদী ভাঙনের কারণে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় নদীগর্ভে ভবনটি বিলীন হতে পারে। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।”
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাঈন উদ্দিন আজাদ বলেন, “বর্তমানে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নদীর তীরে ভাঙনরোধে টেকসই কাজ করা জরুরি। পানির স্রোতে যেকোনো সময় ভবন ধসে পড়বে। ইতোমধ্যে ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনটিতে পাঠদান করা সম্ভব নয়, তাই পুনঃনির্মাণের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি।”
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “ভবনটি পরিদর্শন করেছি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখানে পাঠদান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.
দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, “বিদ্যালয় ভবন রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
ঢাকা/সাহাব/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভবন র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
শরীয়তপুরের সেই বিদ্যালয়টি অবশেষে ভেঙেই পড়ল পদ্মা নদীতে
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। বিলীন হয়ে গেছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। বিদ্যালয়ের একমাত্র ভবন নদীতে বিলীন হওয়ায় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার বিকেলে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও আরেক দিকে চাঁদপুর জেলা। ওই এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর মাথাভাঙা চরবানিয়াল গ্রামে ৪০০ পরিবারের বসবাস। ওই গ্রামের বাসিন্দারা নদীতে মাছ শিকার ও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাঁদের মধ্যে পড়ালেখার আগ্রহ কম। এ ছাড়া গ্রামটিতে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল না। ২০১৭ সালে ওই গ্রামে একটি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়। একতলা একটি পাকা ভবনের চারটি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলছিল। সোমবার বিকেলে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।
আরও পড়ুনযেকোনো সময় পদ্মায় বিলীন হতে পারে শরীয়তপুরের বিদ্যালয়টি১৯ ঘণ্টা আগেবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকেরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। এ বছরের জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন ভাঙনের কবল থেকে বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের মুখে পড়লে ৪ সেপ্টেম্বরের থেকে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। রোববার বিদ্যালয়ের আসবাব ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে উত্তর মাথঅভাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে