Risingbd:
2025-11-03@03:35:21 GMT

শাহরুখ-দীপিকার বিরুদ্ধে মামলা

Published: 27th, August 2025 GMT

শাহরুখ-দীপিকার বিরুদ্ধে মামলা

বলিউড বাদশা শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। প্রতারণার অভিযোগে এই মামলায় হুন্দাই কোম্পানির আরো ৬ কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। রাজস্থানের ভরতপুর জেলার বাসিন্দা কীর্তি সিং এই মামলা দায়ের করেছেন।  

এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রথমে ভরতপুরের সিজেএম কোর্ট নং ২-এ একটি ব্যক্তিগত অভিযোগ দায়ের করেন কীর্তি সিং। পরে আদালত মথুরা গেট থানাকে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা (প্রতারণা) এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলাটি রুজু করেছে। 

আরো পড়ুন:

শাহরুখ পুত্রের সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন উসকে দিলেন বিদেশিনী

শাহরুখ খানকে যে বার্তা দিলেন ফিফা সভাপতি

২০২২ সালের জুন মাসে ২৩ লাখ ৯৭ হাজার ৩৫৩ রুপিতে হুন্দাই কোম্পানির একটি গাড়ি কিনেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই গাড়িটিতে টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা যায়। হরিয়ানার মালওয়া অটো সেলস প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে গাড়িটি কিনেছিলেন। ৬-৭ মাস গাড়িটি চালানোর পর তাতে যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন ধরনের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। এ বিষয়ে এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করার পরও তারা জানায়, গাড়িটি তৈরির সময়ে কোনো সমস্যা ছিল। ফলে এটি ঠিক করা সম্ভব নয়। 

হুন্দাই কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোন। ভারতীয় আইনের অধীনে তাদেরও এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। ২০১৯ সালের কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, যদি কোনো পণ্য ভুল বা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়, তাহলে সেই পণ্যের প্রচারককেও (ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর) আইনি দায়বদ্ধতার আওতায় আনা যায়। এই আইনের আওতায় কেন্দ্রীয় গ্রাহক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ (সিসিপিএ) এমন প্রচারকারীদের বিরুদ্ধে জরিমানাও করতে পারে। 

কীর্তি সিংহ দাবি করেছেন, শাহরুখ ও দীপিকাকে বিজ্ঞাপনে দেখে গাড়িটি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। 

১৯৯৮ সাল থেকে হুন্দাই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত শাহরুখ খান। ২০২৩ সালে এই কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে যুক্ত হন দীপিকা পাড়ুকোন। ২০২৪ সালে গাড়িটির একটি বিজ্ঞাপনে একসঙ্গে মডেল হন শাহরুখ-দীপিকা।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে

অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।

১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’

এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।

পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।

পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ