চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) দুইদিন ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি ও চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আখতারের বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা।

সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা।

আরো পড়ুন:

বাকৃবিতে ছাত্রদল-যুবদলের হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে রেললাইন অবরোধ

‘আমি তো কোনো অন্যায় করিনি, কেন ক্ষমা চাইব?’

এ সময় তারা ‘আহত ১৫০০, হয়ে গেল ২০০’, ‘আমার ভাই আইসিইউতে, ভিসি গেছে নিয়োগ বোর্ডে’, ‘আমার ভাই কোপ খাই, প্রশাসন ঘুমায়’, ‘প্রশাসন হায় হায়, নিরাপত্তার খবর নাই’, ‘ম্যাঙ্গবার ভিসি, কল পেলে খুশি’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সানু আক্তার নদী বলেন, “দেশের চারটা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটার উপাচার্য হলেন তিনি। অথচ তার বক্তব্য দেখা গেল, পুরোটা জোবরাবাসির পক্ষে। চবি মেডিকেলের তথ্য মতে, ১ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। কিন্তু তিনি বলছেন মাত্র ২০০ জন আহত। উনি কি গণনা ভুলে গেছেন? আমার ভাইয়েরা জোবরাবাসির হাতে রক্তাক্ত হচ্ছে, আর তিনি এসি রুমে বসে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা যদি মারা যায়, তবে কার জন্য শিক্ষক নিয়োগ দেবেন? তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন, অথচ আমাদের ভাইয়েরা টানা ৬ ঘণ্টা জোবরাবাসির হাতে মার খেলেও কোনো সহায়তা আসেনি।”

তিনি আরো বলেন, “গতকাল (রবিবার) সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য স্যার বলেছেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা তাকে চার-পাঁচবার কল দিয়েছেন, আর এতেই তিনি খুশি। কিন্তু আমাদের জন্য প্রশাসনের তরফ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আমরা তার দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।”

সানজিদা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা উপাচার্যের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের ভাইদের খোঁজ না নিয়ে তিনি রুমে বসে শিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছেন। আর যাদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন, সেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি পর্যন্ত দিয়েছে? বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে এসেছিল ৬ ঘণ্টা পর।”

রবিবার (৩১ আগস্ট) রাত ১০টার সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য বলেন, “শিক্ষক নিয়োগ আজ (রবিবার) হয়েছে, আগামীকালও হবে ইনশাআল্লাহ। এটা হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে এক্সপার্টরা আসছেন। তারা এখানে এসে আটকা পড়ে আছেন। তারা যেতেও পারছেন না এবং আমাদের প্রার্থীরাও চলে এসেছেন। আমি এখানে একা বসে আছি। আমার পুরো টিম ঘটনাস্থলে কাজ করেছে।”

তিনি বলেন, “নিয়োগের ব্যাপারটা কালকেও (সোমবার) হবে। আমি আজ (রবিবার) বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দূরদূরান্ত থেকে এক্সপার্টরা চলে আসায় আমরা বাতিল করতে পারিনি। এছাড়া এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচসহ আরো বিভিন্ন বিষয় জড়িত আছে।”

তিনি আরো বলেন, “দুই উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন ও প্রক্টরসহ আমাদের নিজস্ব বিগ সিকিউরিটি ফোর্স নিয়ে সকালে এলাকায় গিয়েছি। গিয়ে দেখি থমথমে অবস্থা। আমাদের বলা হলো, ওই বাড়িতে পাঁচজন আটকা পড়ে আছে। গিয়ে দেখলাম কেউ নাই, সব গুজব। অন্য আরেকটা বিল্ডিংয়ে গেলাম সেখানেও একই অবস্থা।”

“আমি সকালে এলাকা থেকে ঘুরে আসার পর টেলিফোন করার চেষ্টা করেছি। হাটহাজারী থানা থেকে কোনো সহযোগিতা পাইনি এবং কোনো সময়ও পাই না। কিন্তু আমি অবাক হয়েছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মতো ব্যক্তিত্ব আমার সঙ্গে চার-পাঁচবার কথা বলেছেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টার মূখ্য সচিব দুই-তিনবার আমাদের খোঁজ নিয়েছেন। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমার মতো একটা তুচ্ছ ব্যক্তির অনুরোধে সিভিল প্রশাসন, সামরিক বাহিনী, ডিআইজি ও গোয়েন্দা সংস্থা যেভাবে সাড়া দিয়েছে, আমি তাদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতা জানাই,” -যোগ করেন উপাচার্য। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেছেন, “আমরা ভালো পরিবেশ গড়ে তুলেছি ক্যাম্পাসে। সবগুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে ভালো চলছে। হার্ভাড, এমআইটির স্কলাররা এখানে সেমিনার দিচ্ছে।”

উপাচার্যের এই বক্তব্যে বিস্ময় ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের অনেকে তার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপ চ র য আম র ভ ই রব ব র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের