প্রেমিকাকে ছেড়ে দাও, নয়তো সিনেমা, সাইফকে বলেছিলেন পরিচালক
Published: 2nd, September 2025 GMT
বলিউড অভিনেতা সাইফ আলী খান। যশ চোপড়া পরিচালিত ‘পরম্পরা’ সিনেমার মাধ্যমে তার বলিউডে পথচলা শুরু। আর মুখ্য ভূমিকায় অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘ইয়ে দিল লাগি’ ও ‘ম্যায় খিলাড়ি তু আনাড়ি’। কিন্তু রাহুল রাওয়াল পরিচালিত ‘বেখুদি’ সিনেমার মাধ্যমে তার ক্যারিয়ার শুরুর কথা ছিল। আর তার সঙ্গী হওয়ার কথা ছিলেন—কাজল। তা আর হয়নি। কারণ শুটিং শুরুর প্রথম দিনে বাদ পড়েছিলেন সাইফ।
অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেকবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন সাইফ আলী খান। এ নিয়ে বেশ আগে এক সাক্ষাৎকারে কথা বলেছিলেন এই অভিনেতা। পুরোনো সেই সাক্ষাৎকার নতুন করে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে সাইফকে বলতে শোনা যায়, প্রেমিকার সঙ্গে ব্রেকআপ করতে বলেছিলেন পরিচালক।
আরো পড়ুন:
প্রাক্তন স্বামীর শেষকৃত্যে কারিশমা
কথা বলতে সমস্যা, কানেও কম শুনেন সাইফপুত্র ইব্রাহিম
সাইফ আলী খান বলেন, “স্ট্রাগল মানে কী? অটো রিকশায় উঠে পড়েন, একই জায়গায় দশবার যান। কোনো অফিসে গিয়ে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করেন; এটাকেই তারা স্ট্রাগল বলেন। আমারও স্ট্রাগল ছিল। কিন্তু একটু আলাদা। প্রথম সিনেমা থেকে আমাকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ আমার পরিচালক বলছিলেন, ‘তোমার প্রেমিকাকে ছেড়ে দাও, নয়তো সিনেমা ছাড়ো।’ এটা ছিল এক ধরনের নৈতিক সিদ্ধান্ত।”
অন্যদের চেয়ে আপনি কীভাবে ভিন্ন? এ প্রশ্নের জবাবে সাইফ আলী খান বলেন, “স্কুলের পর আমি খুব একটা পড়াশোনা করিনি, হয়তো পরে করব। আমি মনে করি, এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি কিছু বিষয় খুব একটা গুরুত্ব দিই না, যেগুলো অন্যরা দেখে। যেমন: ‘তোমার বাবা কী করেন?’ লোকে বলে আমি খুব খোলামেলা, এমনকি অপরিচিতদের সাথেও।”
‘বেখুদি’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন মাতাল অবস্থায় সেটে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছিল সাইফ আলী খানের বিরুদ্ধে। তখন লেহরেন-কে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে সাইফ বলেছিলেন, “এই অভিযোগের কারণে পরবর্তীতে কেউই আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইছিল না। আমার মনে হয়, রাহুল ভাবছিলেন—আমি সিনেমার প্রতি আগ্রহী নই, আমি কাজ করতে চাই না। তারপর আরো অনেক গুজব ছড়িয়ে পড়ে। যেমন: ‘আমি সেটে মাতাল হয়ে যেতাম, আমি ঘুমিয়ে থাকতাম।’ যদিও এগুলো পুরোনো কথা। কিন্তু এসব আমার উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।”
পরবর্তীতে ‘বেখুদি’ সিনেমায় সাইফের পরিবর্তে পরিচালক রাহুল রাওয়াল কামাল সাদানাহকে কাস্ট করেন। সিনেমাটিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন কাজল। ১৯৯২ সালের ৩১ জুলাই মুক্তি পায় সিনেমাটি।
১৯৯৯ সালে মুক্তি পায় সাইফ অভিনীত ‘হাম সাথ সাথ হায়’ সিনেমা। মুক্তির পর এটি তুমুল হিট হয়। যদিও সাইফ মনে করেন, তার ভেতরে যে অভিনয়প্রতিভা আছে, তা সবাই প্রথম লক্ষ্য করেন ২০০১ সালে, ‘দিল চাহতা হ্যায়’ সিনেমা মুক্তির পর।
সাইফ অভিনীত ‘কাল হো না হো’ সিনেমা ২০০৩ সালে মুক্তি পায়। এটি মুক্তির পর সাইফ আলী খানের অভিনয় প্রশংসিত হয়। এরপর ‘হাম তুম’ সিনেমার জন্য তো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারই পেয়ে যান সাইফ। তাছাড়া ‘পরিণীতা’ সিনেমায় সাইফের ভূয়সী প্রশংসা করেন সমালোচকেরা। এরপর ‘সালাম নামাস্তে’, ‘ওমকারা’, ‘রেস’, ‘লাভ আজকাল’, ‘ককটেল’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন সাইফ।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ল ন পর চ ল প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন এম এন লারমা
মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমাই দেশে প্রথম আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে বৈজ্ঞানিকভাবে চিহ্নিত করেছিলেন। তিনি প্রথম দেশে কাঠামোগতভাবে আত্মপরিচয়ের রাজনীতিকে স্পষ্ট করেন। একটি বহুত্ববাদী রাষ্ট্রের ধারণা দিয়েছিলেন তিনি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম এন লারমার ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার রাজধানীর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।
‘বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৮৬ম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি’ এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
আলোচনা সভায় লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ বলেন, ১৯৫৫-৬৫ সালের মধ্যে তৈরি হওয়া ‘বাইনারি বিভাজন’ পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশে সরকার। ‘বাইনারি’ মনস্তত্ত্বকে এখনো এই দেশে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। এম এন লারমা ‘বাঙালি হেজিমনি’র বিরুদ্ধে আত্মপরিচয়ের বয়ান বাঁচিয়ে রাখতে তৎকালে জোরালো প্রতিবাদ করেছিলেন।
জেএসএসের কেন্দ্রীয় সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, কাপ্তাই বাঁধ না করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়েই ছাত্র এম এন লারমার প্রতিবাদী জীবন শুরু হয়। চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের পর যে বৈষম্যহীন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে, এম এন লারমা ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নকালেই এসব বিষয় নিয়ে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলেন।
দীপায়ন খীসা বলেন, ‘সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে সংবিধান সংস্কার কমিশন বা জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কখনো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে সংলাপ করেনি। আমরাও এই দেশের অংশ। তাহলে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের কেন কোনো সংলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানানো হলো না?’ তিনি বলেন, চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও অংশীদারত্ব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তাদেরই ভুলে গেল এই সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঙালি হয়ে যাও’ কথাটার পেছনে বাঙালি মুসলিমদের জাত্যভিমানের ব্যাপারটি রয়েছে। এম এন লারমা বাংলাদেশের মধ্যে থেকে নিজেদের অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পরবর্তীকালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি’ নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তিময় চাকমার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের অর্থ সম্পাদক মেইনথিন প্রমীলা, সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা।
অনুষ্ঠানটি শুরু হয় এম এন লারমাকে সম্মান জানিয়ে কবিতা পাঠের মাধ্যমে। কবিতা পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেই চাকমা ও লাল নিকিম বম। কবিতা আবৃত্তির পর এম এন লারমার জীবনবৃত্তান্ত পাঠ করেন হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রিয়া চাকমা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা, জেএসএসের কেন্দ্রীয় স্টাফ সদস্য অনন্ত বিকাশ ধামাই, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি শান্তিদেবী তঞ্চঙ্গ্যা, পিসিপি ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অনন্ত তঞ্চঙ্গ্যা।