বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে,  পিএইচ ব্যালান্স করে এবং ত্বকের স্বাভাবিক জেল্লা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।’’ অনেকের আন্ডারআর্মে হাইপারপিগমেন্টেশনের সমস্যা থাকে, এই সমস্যা দূর করতে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহার করতে পারেন। 

ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতে ডিওডোরেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড। ঘামের দুর্গন্ধ রোধে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড ব্যবহারে ডার্মাটোলজিস্টরাও পরামর্শ দিচ্ছেন।  যেহেতু গ্লাইকোলিক অ্যাসিড মৃত কোষ দূর করতে পারে, সেহেতু আন্ডারআর্মে ব্যাকটেরিয়া জমতে পারে না। 

আরো পড়ুন:

কলার খোসা কী চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে পারে?

বৃষ্টিদিনে চুলের যত্নে করণীয়

আন্ডারআর্মের নিয়মিত যত্নে করণীয়
এক.

প্রতিদিন পরিস্কার পানি এবং পছন্দের বডি ওয়াশ দিয়ে গোসল করে নিন। এতে এতে স্কিনে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া এবং ময়লা সহজে ধুয়ে যায়। ফলে আন্ডারআর্মের ত্বকও ভালো থাকে।

দুই. নিয়মিত আন্ডারআর্মের এক্সফলিয়েশন করুন। বিশেষ করে কালো জায়গায় পিগমেন্ট কম করতে এবং মৃত কোষগুলোকে দূর করতে এটি বেশ ভাল কাজ করে

তিন. আন্ডারআর্মে শেভিংয়ের পর ইনগ্রোন হেয়ার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেক্ষেত্রে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড দিয়ে এক্সফোলিয়েট করলে এটি হওয়ার ঝুঁকি থাকে না।  

চার. নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় আন্ডার আর্মের শেভিং করতে করতে কালো দাগ বাজে রূপ নেয়, আন্ডারআর্ম আদ্র রাখা খুব দরকারি। সেজন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো।
  
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

ঢাকা/লিপি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যত ন দ র করত ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

পরাবাস্তবতার আবেদন কি ফুরিয়েছে

অবচেতনের মানচিত্র ধরে এক অন্তহীন অভিযাত্রা কবি–সাহিত্যিকেরা যুগ যুগ ধরে করে আসছেন। সাহিত্যের দীর্ঘ যাত্রাপথে এমন কিছু বাঁক আসে, যা তার গতিপথকে চিরতরে বদলে দেয়। পরাবাস্তবতা বা সুররিয়ালিজম ছিল এমনই এক যুগান্তকারী আন্দোলন, যা কেবল শিল্পের আঙ্গিক নয়; বরং শিল্পীর বিশ্ববীক্ষা এবং আত্মবীক্ষণকে সম্পূর্ণ নতুন এক দর্শন দান করেছিল। এটি ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ। এর মূল লক্ষ্য ছিল মানব মনের সেই গভীরে প্রবেশ করা, যেখানে যুক্তির আলো পৌঁছায় না; সেই অবচেতনের অন্ধকার মহাসাগর থেকে তুলে আনা বিস্মৃত স্বপ্ন, অবদমিত ইচ্ছা আর আদিম প্রবৃত্তির মণি–মুক্তা। পরাবাস্তবতা তাই কেবল একটি শিল্পরীতি নয়, এটি চেতনার শৃঙ্খলমুক্তির এক দুঃসাহসী ইশতেহার।

১৯২৪ সালে ফরাসি কবি ও লেখক আঁদ্রে ব্রেটন তাঁর ‘পরাবাস্তবতার প্রথম ইশতেহার’ (ম্যানিফেস্টো অব সুররিয়ালিজম) প্রকাশের মাধ্যমে এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। ব্রেটনের সংজ্ঞায়, পরাবাস্তবতা হলো, ‘বিশুদ্ধ মানসিক স্বয়ংক্রিয়তা, যার মাধ্যমে মুখ বা লেখনী দিয়ে অথবা অন্য যেকোনো উপায়ে চিন্তার আসল কার্যকারিতাকে প্রকাশ করার ইচ্ছা পোষণ করা হয়। এটি যুক্তির সমস্ত নিয়ন্ত্রণ থেকে এবং সকল প্রকার নান্দনিক ও নৈতিক উদ্দেশ্য থেকে বিযুক্ত চিন্তার এক শ্রুতলিখন।’

এই দর্শনের প্রধান পাথেয় ছিল ভিয়েনার মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের যুগান্তকারী মনঃসমীক্ষণ তত্ত্ব। ফ্রয়েড দেখিয়েছিলেন যে মানুষের সচেতন মনের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক বিশাল অবচেতন জগৎ, যা তার আচরণ, স্বপ্ন ও ব্যক্তিত্বকে নিয়ন্ত্রণ করে। পরাবাস্তববাদীরা ফ্রয়েডের এই তত্ত্বকে লুফে নিয়েছিলেন। তাঁদের কাছে শিল্পসৃষ্টির উদ্দেশ্যই ছিল যুক্তির সেন্সরশিপকে ফাঁকি দিয়ে অবচেতন মনের এই লুকানো জগৎকে উন্মোচিত করা। তাঁরা চেয়েছিলেন, স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে একীভূত করে এক ‘পরম বাস্তবতা’ বা ‘সুররিয়ালিটি’ তৈরি করতে।

পরাবাস্তবতা ছিল বিংশ শতাব্দীর ইউরোপের এক ক্ষতবিক্ষত সময়ের সন্তান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞ, ভিক্টোরীয় যুগের শুষ্ক নৈতিকতা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের অতিনিয়ন্ত্রিত যুক্তিবাদ—এই সবকিছুর বিরুদ্ধে পরাবাস্তবতা ছিল এক শৈল্পিক ও দার্শনিক বিদ্রোহ।

পরাবাস্তবতার পদযাত্রা প্যারিসের শৈল্পিক পরিমণ্ডল থেকে শুরু হলেও এর ঢেউ খুব দ্রুতই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। আঁদ্রে ব্রেটন ছিলেন এই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা, কিন্তু তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় সমবেত হয়েছিলেন বহু প্রতিভাবান স্রষ্টা, যাঁরা নিজ নিজ ভাষায় ও সংস্কৃতিতে পরাবাস্তবতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।

আঁদ্রে ব্রেটন (জন্ম: ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৯৬—মৃত্যু: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬)

সম্পর্কিত নিবন্ধ