গাজীপুরের শ্রীপুরে গোদারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করে গভীর রাতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা ব্যাহতসহ নানা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের গোদারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ- ওই রাতে রড, সিমেন্ট ও বাঁশের খুঁটি পুঁতে কাঁটাতারের বেড়া দেন গোদারচালা গ্রামের আবু বক্করের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.

আব্দুল করিম জানান, মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে মোবাইল ফোনে মাঠ দখলের খবর পান। পরে রাতেই তিনি বিষয়টি থানায় জানান এবং সকালে সরেজমিনে গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেন।

তিনি বলেন, “মাঠে বেড়া দেওয়ার কারণে বুধবার সকালে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ এসে জবরদখলকারীরা জমির দাবি তুলে মাঠে বেড়া দিয়েছে। অথচ স্কুলটি ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত। এর আগে কখনো এমন দাবি শোনা যায়নি।”

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সজীব আহমেদ বলেন, “বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কোনোভাবেই স্কুল মাঠে বেড়া দেওয়া আইনসম্মত নয়। এটি গুরুতর অপরাধ। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, এ বিষয়ে জানতে আবু বক্করের ছেলে তৌহিদুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলামের মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ দ ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি