কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিন বেগমকে হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। পরে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচিও পালন করে তারা। 

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর পূবালী চত্বর এলাকায় কুবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীরা অবস্থান শুরু করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। 

আরো পড়ুন:

ফিলিং স্টেশনের ক্যাশিয়ারকে হত্যা, মূল অভিযুক্ত আটক

জমিয়ত নেতা মুশতাকের খুনিদের গ্রেপ্তার দাবিতে সড়কে ব্লকেড

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে, আমি কে? সুমাইয়া সুমাইয়া’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘জবাব চাই, জবাব চাই— প্রশাসন জবাব চাই’, ‘বিচার চাই, বিচার চাই— সুমাইয়া হত্যার বিচার চাই’ ইত্যাদি স্লোগন দেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, সুমাইয়া আফরিন ও তার মা’কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যারা এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত, অতিদ্রুত দোষীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী এবং নিহত সুমাইয়া আফরিনের সহপাঠী মুনিয়া আফরোজ বলেন, “আমরা আমাদের সহপাঠীকে হারিয়েছি। এই কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এই মুহূর্তে আমাদের দুটি দাবি হলো- যারা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে এবং খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি তথা মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে।”

নিহতের আরেক সহপাঠী মেহেদী হাসান বলেন, “আমাদের সহপাঠী সুমাইয়া আফরিন এবং তার মাকে কুমিল্লা শহরের ভাড়া বাসায় নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার প্রতিবাদে এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি। আমরা চাই, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।”

এ ব্যাপারে কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করলে আমরা গিয়ে কথা বলেছি। আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি এই ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পুলিশ দেখছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনব।”

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১ টায় কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরীতে অবস্থিত নিজ বাসা থেকে কুবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিন বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে এটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’।

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আফর ন সহপ ঠ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন