তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
Published: 17th, September 2025 GMT
সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর করা, কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপসহ তিন দফা দাবিতে অনশন করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (দুপুর সাড়ে ১২টা) পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে পাঁচ শিক্ষার্থী অনশনে বসেন। তারা হলেন—১৩তম ব্যাচের একেএম রাকিব, ১৫তম ব্যাচের ফয়সাল মুরাদ, ১৬তম ব্যাচের ফেরদৌস শেখ ও শাহিন মিয়া এবং ১৮তম ব্যাচের অপু মুন্সি।
অনশনে থাকা বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। প্রশাসন নানা টালবাহানা করছে। কোনো উদ্যোগ না দেখে বাধ্য হয়েই অনশনে বসেছি। আমাদের দাবি না মানলে এমন প্রশাসনের প্রয়োজন নেই।”
বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ অভিযোগ করে বলেন, “মন্ত্রণালয়ের সব শিকল ভেঙে জবিয়ানদের অধিকার আটকে রেখেছে জবি প্রশাসন। বৃত্তি নিয়ে কাটছাঁটের চেষ্টা আমরা মেনে নেব না।”
একই সংগঠনের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ বলেন, “আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত। এখন সিদ্ধান্ত প্রশাসনের হাতে।”
জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছি, কিন্তু প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়েই অনশনে বসেছি। প্রথমে কয়েকজন শুরু করেছি, আজ থেকে আরো শিক্ষার্থী যোগ দেবে।”
শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি
১.
২. বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ।
৩. ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান, স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতকরণ এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
ঢাকা/লিমন ইসলাম/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশিদের বন্দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)। আজ শনিবার সকাল ৯টা থেকে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে শুরু হওয়া অনশন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
সকালে শতাধিক শ্রমিক প্রেসক্লাব চত্বরে জড়ো হন। একে একে বক্তব্য দেন শ্রমিক সংগঠনের বিভিন্ন নেতা-কর্মী। তাঁরা দাবি করেন, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব সক্ষমতায় সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে বিদেশি অপারেটরের প্রয়োজন নেই।
স্কপের যুগ্ম সমন্বয়ক রিজওয়ানুর রহমান খান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নিজস্ব ব্যবস্থাপনাতেই ভালোভাবে চলছে। বছরে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করে এই প্রতিষ্ঠান। এমন একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই। ফলে সরকারকে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তারা অভিযোগ করেন, লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়েও নিউমুরিং টার্মিনাল ও লালদিয়া চর বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তাঁরা বলেন, চট্টগ্রামের মানুষ কোনোভাবেই এটি সফল হতে দেবে না। বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া মানে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে খেলা।
অনশন কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাম গণতান্ত্রিক জোট চট্টগ্রাম জেলা পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক শফি উদ্দিন কবির বলেন, ‘বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার কাউকে না জানিয়ে বিদেশিদের হাতে বন্দর তুলে দেওয়ার চুক্তি করেছিল। বর্তমান সরকারও সেটি পর্যালোচনা না করে বাস্তবায়ন করছে। এটি দেশের মানুষের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
চট্টগ্রাম বন্দরের চারটি কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শুরু হওয়া সেই প্রক্রিয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও এগিয়ে নিচ্ছে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর ইজারা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে স্কপ। সমাবেশ শেষে বন্দর এলাকার দিকে মিছিল নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। ওই কর্মসূচি থেকেই আজকের গণ–অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ফ্যাসিবাদবিরোধী বাম মোর্চা।