অন্তর্বর্তী সরকার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও অন্যান্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। সে কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়।

আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে করা মামলায় ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়ে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

নাহিদ সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর যাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানসহ গুমের ঘটনায় যুক্ত, তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো বাহিনীর কেউ যাতে পার পেয়ে না যায়। কারণ, তাঁরা দেখেছেন, গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। তিনি নিজে অভিযোগ দিয়েছেন ডিজিএফআইয়ের যে অফিসাররা তাঁকে তুলে নিয়ে গেছেন, হেনস্থা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কর্মকর্তা, র‍্যাবে যাঁরা ছিলেন, ডিজিএফআইয়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা গুমের ঘটনায় এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ঘটনায় নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছেন। রামপুরা, বাড্ডার ঘটনায় বিজিবিতে একজন সেনা কর্মকর্তাকে দেখা গেছে। তাঁদের কিন্তু এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

ফলে সরকার, ট্রাইব্যুনাল ও আদালতের কাছে আবেদন জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে অপরাধী, তাঁকে যেন আইনের আওতায় আনা হয়। তিনি কোন বাহিনীর, সেটা যাতে দেখা না হয়। যাঁরা জনগণের ওপরে এই (জুলাই) হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন, গুম করেছেন, নির্যাতন করেছেন এবং সরকারকে ফ্যাসিবাদী হতে সহায়তা করেছেন, ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করেছেন, তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

ট্রাইব্যুনালের কাছে কী প্রত্যাশা, তা উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এত মানুষ, এত ভাইবোনেরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। সবাই ন্যায়বিচার পাবেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশসহ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিচারের আওতায় আসবেন, তাঁদের শাস্তি হবে। এই ন্যায়বিচার একটা নির্দশন হয়ে থাকবে—শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, পৃথিবীর জন্য। যে কেউ যদি স্বৈরশাসন কায়েম করতে চায়, জনগণের ওপর আক্রমণ চালায়, জনগণকে হত্যা করে, তার পরিণতি আসলে কী হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমে সন্তোষ্টি প্রকাশ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এটা (শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনের বিরুদ্ধে মামলা) কিন্তু একটি মামলা। এ মামলার একটা রাজনৈতিক দিক যে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাইব্যুনালেই অনেক মামলা রয়েছে এবং সাধারণ আদালতে আরও অনেক মামলা রয়েছে। গুমের মামলা রয়েছে। ফলে বিচারটাকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে। কারণ, সাধারণ আদালতে যেসব মামলা, সেগুলো সম্পর্কে ইতিবাচক কথা শুনতে পাচ্ছেন না। অনেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী, সেটা তাঁরা জানতে পারছেন না। ফলে সেই মামলাগুলো যাতে যথাযথ গুরুত্বসহকারে দেখা হয়, এই আবেদন তাঁদের থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ঘটন য় কর ছ ন সরক র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ