কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলায় নিখোঁজের এক মাসের বেশি সময় পর করিম ভূঁইয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তির গলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার রসুলপুর গ্রামে গোমতী নদীর সংযোগ খালের ওপর নির্মিত সেপটিক ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

করিম ভূঁইয়া উপজেলার বড়শালঘর এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় কৃষক ছিলেন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে করিমের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার (৪০), দুই ছেলে তানজিদ ভূঁইয়া (২২) ও তৌহিদ ভূঁইয়া (২০), স্ত্রীর ভাই মোজাম্মেল হক (৪২), ইশরাফিলসহ (৩৮) ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিলেন করিম ভূঁইয়া। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানেরা প্রচার করতে থাকেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় খড়মপুরে অবস্থিত হজরত সৈয়দ আহম্মদ (রহ.

)-এর দরগায় যাওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ। এ ঘটনায় করিমের বড় ভাই আমির হোসেন ভূঁইয়া ১৬ আগস্ট দেবীদ্বার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আমিরের মুঠোফোন নম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির কল আসে। ওই ব্যক্তি আমিরকে জানান, করিমের শ্বশুরবাড়ি ও আশপাশের এলাকায় খোঁজ করলে তাঁকে (করিম ভূঁইয়া) পাওয়া যাবে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানালে রসুলপুর গ্রামে করিমের শ্বশুরবাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করা হয়। একপর্যায়ে করিমের শ্বশুরের পরিবারের নির্মাণাধীন একটি সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খোলা হয়। সেখানে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় করিম ভূঁইয়ার গলিত লাশ দেখতে পান তাঁরা।

করিমের স্ত্রী তাছলিমা, দুই ছেলে ও স্ত্রীর দুই ভাই মিলে পরিকল্পিতভাবে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ করেন আমির হোসেন ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের পরিবারের লোকজন থানায় কোনো জিডি করেনি, আমি নিজে থানায় গিয়ে জিডি করি। সর্বশেষ আজ ভাইয়ের গলিত লাশ পেলাম।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তদন্তের পর হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে। আটক ছয় ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম ভ র গল ত কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১

খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ